পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মালেক মল্লিক : আদালতে বাড়ছে প্রযুক্তির সেবা। সনাতন পদ্ধতিতে হাতে-কলমে আর কোন সাক্ষীর জবানবন্দি লেখা হবে না। এখন সাক্ষ্য নেয়া হবে ভয়েস রেকর্ডের মাধ্যমে। প্রথম পর্যায়ে সিলেটের ২০টি কোর্টে চালু হচ্ছে এই কার্যক্রম। কাল বুধবার সিলেটে দায়রা জজ আদালতে এ সেবার উদ্বোধন করবেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
বিচার কার্যক্রমে আরো সচ্ছতা ও গতিশীল করতে সুপ্রিমকোর্টের সহযোগিতায় জাতিসংঘ উন্নয়ন প্রকল্পের (ইউএনডিপি) অর্থায়নে এসব সেবা চালু করা হ্েচ্ছ বলে জানা যায়। এদিকে উচ্চ আদালতেও অনলাইনে কজলিস্ট ও বেইল কনফার্ম প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ফলে দেশের যে কোন প্রান্তে বসে মামলায় সর্বশেষ তথ্য এখন দেখা যাচ্ছে অনলাইনে। এবার ডিজিটাল বিচারকার্যক্রমে চালু হতে যাচ্ছে নিম্নআদালতগুলোতে। পরবর্তীতে সারা দেশের আদালতগুলোতে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আমিনুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, আধুনিকায়নের যুগে বিচার বিভাগকে ঢেলে আধুনিক ও যুগোপযোগী এবং বিচার প্রক্রিয়ায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে জন্য প্রধান বিচারপতির উদ্যোগে এসব উদ্যেগ নেয়া হয়েছে।
বুধবার সিলেটের এ সেবার উদ্বোধন করা হচ্ছে। পরবর্তীতে সারা দেশের বিচার অঙ্গনে এ সেবা চালু করা চিন্তা-ভাবনা আছে। আদালত সূত্রে জানা যায়, এ সেবা চালু করতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা খরচ করে কম্পিউটার ও মনিটরসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি স্থাপন করা হয়েছে। বিচারক, রাষ্ট্র, আসামি এবং বাদি-বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের সামনেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক কম্পিউটার থাকবে। আদালতের কম্পিউটার কম্পোজকারী সাক্ষীর জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গেই সকল পক্ষ তাদের সামনে থাকা কম্পিউটারের মনিটরে তা দেখতে পাবেন। নির্ভুলভাবে লিপিবদ্ধ হচ্ছে কিনা তাও তারা পরীক্ষা করতে পারবেন। এছাড়া সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষরিত কপি সকল পক্ষকে সরবরাহ করা হবে। প্রথমত সিলেটের মহানগর দায়রা জজ, জেলা দায়রা জজ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, চিফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ২০টি কোর্টে এ পদ্ধতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ করবেন বিচারকরা। এর জন্য কোর্ট রেকর্ডিং সিস্টেমে আদালতের ভেতরে একটি কম্পিউটারে পাঁচটি মনিটর থাকবে। একটি বিচারকের সামনে, একটি আসামি, একটি সাক্ষী, একটি আইনজীবীদের ও অপরটি সাক্ষ্য লিপিবদ্ধকারী কর্মকর্তার সামনে। সাক্ষী তার সাক্ষ্য দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মকর্তা কম্পিউটারে সেটা লিখবেন এবং মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই দেখতে পারবেন। ফলে কোন তথ্য বাদ যাওয়া কিংবা ভুল লেখার সম্ভাবনা থাকবে না। সনাতন পদ্ধতিতে দেখা যায় একজন বিচারকের হাতের লেখা আরেকজন বিচারক বা অন্য আদালত বুঝতে পারেন না অথবা অনেকে দাবি করেন যে, বিচারক কিছু কথা লেখেননি বা তিনি কিছু কথা মিস করে গেছেন। এ পদ্ধতিতে সেই সমস্যার সমাধান হবে। ইতিমধ্যে আদালতগুলোতে কারিগরি সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। গত বছরে সিলেট জেলা আদালতে ২০টি এজলাসে ভয়েস রেকর্ডিং সিস্টেম পরীক্ষা মূলকভাবে চালু করা হয়। পরীক্ষামূলক চালু শেষে বুধবার প্রধান বিচারপতি এটা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করবেন। পূর্বে আদালত থেকে অল্প দূরত্বে বসবাসকারী কারও বিরুদ্ধে সমন জারি করলে পাঠাতে হয় পেয়াদা। এ ছাড়া পুরনো আনুষ্ঠানিকতা ও প্রক্রিয়ার মারপ্যাঁচে অনেক সময় বছর পার হয়ে যায়। তাই ডিজিটাল এ ব্যবস্থায় সাক্ষ্যগ্রহণে স্বচ্ছতার পাশাপাশি দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলা জট কমবে বলে মনে করেন বিচার সংশ্লিষ্টরা। এর আগে ২০০৯ সালের জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালার অধীনে দেশের সর্বোচ্চ এ আদালতকে ‘ডিজিটালাইজড’ করার উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০১০ সালে আইসিটি সেল গঠন ও লোকবল নিয়োগসহ নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। সুপ্রিমকোর্টের সেবা ও মামলা সংশ্লিষ্ট খবর বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী ও সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই এ উদ্যোগ। তৈরি করা হয় নিজস্ব ওয়েবসাইট। এদিকে প্রতিটি জেলা আদালতে বিচার কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে ৩১ মে ২০১৫ সালে ৩টি পদ সৃষ্টির জন্য আবেদন জানিয়ে সুপ্রিমকোর্ট চিঠি দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ে। যদিও এখানো চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি। চিঠিতে ৬৪টি জেলাসহ সর্ব মোট ৭০ জন কো-অর্ডিনেটর, ৭০ জন প্রোগ্রামার ও ৭০ জন অফিস সহায়কের কথা বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন পেলে কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানা যায়। এতে করে বিচারকার্যক্রমে ডিজিটাল ক্ষেত্রে আরো সহায়ক হবে। অন্যথায় এ সেবার কার্যক্রম ধরে রাখা কঠিন হবে বলে জানা যায়। অতিদ্রত ওই সব নতুন পদ সৃষ্টি হলে অনেক বেশি সুবিধা হবে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (বিচার ও প্রশাসন) মো. সাব্বির ফয়েজ বলেন, ভয়েস রেকর্ডিং সিস্টেম চালু হলে বিচার কার্যক্রমে আরো গতিশীল হবে। এতে করে যে কেউ সার্ভারে গিয়ে দেখতে পারবে মামলার কার্যক্রম। তিনি আরো অল্প সময়ে বিচারকরা বিচারকার্য সম্পন্ন করতে পারেব। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে আদালতগুলোতে এটা চালু করার প্রচেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।