পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফারুক হোসাইন : স্বাধীনতার মাস মার্চ। অগ্নিঝরা মার্চের আজ দ্বিতীয় দিন। ১৯৭১ সালের এ মাসেই সবুজ-শ্যামলা সোনার বাংলা হয়ে ওঠে অগ্নিগর্ভ। দীর্ঘ দিন ধরে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর নির্যাতন আর নিপীড়নের চাপা ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয় এই মাসেই। শোষণ আর বঞ্চনা থেকে মুক্তি পেতেই জেগে ওঠে বাংলা মায়ের সাহসী সন্তানেরা। এক মার্চ বেতার ভাষণে ৩ মার্চের গণপরিষদের অধিবেশন অপ্রত্যাশিতভাবেই স্থগিত ঘোষণা করেন পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। এতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ছাত্র-জনতা। ইয়াহিয়া খানের বক্তব্যের প্রতিবাদে ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১১টায় জমায়েত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায়। ডাকসু এবং ছাত্রলীগের আহ্বানে অনুষ্ঠিত এ সভায় পাকিস্তানি প্রেসিডেন্টের এমন অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের নিন্দা জানানো হয়। ওই দিনই ডাকসুর তৎকালীন ভিপি আ স ম আবদুর রব সর্বপ্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে এ পতাকা উত্তোলন করা হয়। পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ, ডাকসু সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস মাখন। পরে এ পতাকা নিয়ে আন্দোলিত রাজপথ মুখর হয়ে ওঠে স্লোগানে স্লোগানে, জাগো জাগো, বাঙালি জাগো; পদ্মা-মেঘনা-যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা; তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি; তোমার দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ; বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, সোনার বাংলা মুক্ত করো; পিন্ডি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা; পাঞ্জাব না বাংলা, বাংলা-বাংলা; ভুট্টোর মুখে লাথি মারো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো; স্বাধীন করো স্বাধীন করো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো ইত্যাদি স্লোগান দেয়া হয়। এই লাল-সবুজ পতাকাটি এ মাসের ৯ তারিখ বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ইয়াহিয়ার বক্তব্যের প্রতিবাদে ২ মার্চ হরতালের আহ্বান করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। হরতাল সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ এক হয়ে পালন করেন। দলমত, পেশা, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই নেমে আসেন রাজপথে। সকল ধরনের যান চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ রাখেন সবাই। দিনে হরতাল, সভা-সমাবেশ দেখে ভয় পেয়ে যায় পাকিস্তানি সামরিক শাসক। দিশা হরিয়ে হঠাৎ রাত ৯টা থেকে ৩ মার্চ সকাল ৭টা পর্যন্ত জারি করে কার্ফু। কার্ফু প্রত্যাখ্যান করে রাতেই মিছিল বের করে বাঙালিরা। রাতের স্তব্ধ নগরী ওইদিন হয়ে ওঠে আন্দোলনের নগরীতে। হানাদার বাহিনীর সেনা সদস্যরা গুলি চালায় সহজ সরল নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর। সেনাবাহিনীর গুলিতে ২ জন নাগরিক প্রাণ হারায়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বঙ্গবন্ধু। এক বিবৃতি প্রদান করে তিনি ৩ মার্চ থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত সারা দেশে অর্ধদিবস হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সামরিক কর্তৃপক্ষ সান্ধ্য আইন জারি করলে জনতা তা অমান্য করে ইয়াহিয়া ও ভুট্টোর কুশপুত্তলিকা দাহ করে রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং সেনাবাহিনী বিনা উস্কানিতে গুলিবর্ষণ করলে নগরীর বিভিন্ন স্থানে মিছিল সহিংস হয়ে ওঠে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।