পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অফিসে তালা মেরে নাছির বন্দরে বসে থাকেন -মহিউদ্দিন চৌধুরী
অন্তর্জ্বালার কারণেই এসব মিথ্যাচার -আ জ ম নাছির উদ্দীন
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বর্তমান সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে উদ্দেশ করে বলেছেন, নাছির সাহেব সিটি কর্পোরেশনের দরজায় তালা মেরে সার্বক্ষণিক বন্দরের চেয়ারম্যানের কক্ষে বসে থাকেন। তিনি মেয়রকে ষড়যন্ত্র বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তা না হলে নগরবাসীকে নিয়ে তার অপসারণের দাবি তুলবেন তিনি।
অন্যদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, যারা ভোগবিলাসের জন্য বহুমুখী প্রকল্প গ্রহণ করে ব্যর্থ হয়েছেন তারাই অন্তর্জ্বালার কারণে এসব মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। গতকাল (সোমবার) পৃথক দু’টি সমাবেশে একে অন্যের উদ্দেশে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নগর কমিটির শীর্ষ দুই নেতা।
মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, নাছির চট্টগ্রাম বন্দরে বসে থাকেন। বন্দর থেকে চারটি স্টিভিডোরস লাইসেন্স নিয়েছেন। কি কারণে, বাহুবলে চারটি নিয়েছেন। সেটা তো তার দায়িত্ব নয়। তবুও তিনি সেসব কাজগুলো করছেন। বিকেলে নগরীর লালদীঘি মাঠে সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহিউদ্দিন চৌধুরী একথা বলেন। মহিউদ্দিন চৌধুরী আরও বলেন, মানুষের সেবা করার জন্য মেয়র, জুলুমের জন্য নয়। আপনার হুমকিতে কেউ ভয় পায়না। আগে নগরীর উন্নয়ন করুন, আমরা টেক্স দেব। হোল্ডিং টেক্স বাড়িয়ে নগরী থেকে আদিবাসীদের চলে যেতে বাধ্য করছেন। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনে একজন অ্যাস্টেট অফিসার আছে, একজন সিআরও (প্রধান রাজস্ব অফিসার) আছে। কিন্তু আরও ৭-৮ পদ আছে, সেখানে স্থায়ী কেউ নেই। অস্থায়ী লোকদের দিয়ে চালানো হচ্ছে। কিন্তু আবার দু’জন চিফ ইঞ্জিনিয়ার আছে সেখানে। পাগলের আড্ডাখানা বানিয়ে ফেলেছে সিটি করপোরেশনে। উনি (নাছির) থাকেন না। তার কিছু তল্পিবাহক, যারা তার নামে সেøাগান দেন তাদের সেখানে চাকরি দিয়েছেন।
মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, শুধু মেয়র নাছির নয়, ‘বিচ্ছু, লতিফ, মনজুর (সাবেক মেয়র মনজুর আলম) ভাতিজা দিদার’ সংসদে কথা না বলে বন্দর চেয়ারম্যানের অফিসে বসে থাকে। লজ্জা লাগে না। আপনি সংসদ সদস্য, বসে রইলেন বন্দরের চেয়ারম্যানের চেম্বারে। এটা কি আপনার দায়িত্ব? কি দায়িত্ব পালন করছেন। জাহাজের ব্যবসা, লোহার ব্যবসা, ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার ব্যবসা। সেটা তো আপনার কাজ নয়। তিনি বলেন, নির্বাচনে কেউ এমপি হয়, পরবর্তীতে মন্ত্রী হয়। আবার কেউ মেয়র হয়, কেউ কাউন্সিলর হয়েছেন। তার ভাগ ভাগ আছে। কিন্তু সংসদে কথা বলবেন যারা, তারা সংসদে কথা না বলে বন্দরে বসে থাকেন।
মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আপনার (নাছির) দুই বছর সময় আছে। বিজ্ঞ লোকদের ডেকে পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে আমাকে ডাকলে আমিও যাব। তিনি বলেন, আপনি সালিশ বিচারের নামে জমি দখল করছেন। গরীব মৎস্যজীবীদের উৎখাত করে ভবন করছেন। পাথরঘাটা মনোহর খালিতে ১০ হাজার শ্রমিক এবং ২০-৩০ জন আড়তদার আছেন। ওয়াকফ সম্পত্তি দখল করে মার্কেট করেছেন। বন্দর খাবেন, ইয়াবা বিক্রি করে মানুষের চরিত্র হনন করবেন এটা হতে পারেনা। পূর্বের জায়গায় আড়ত থাকবে। এখানে ইয়াবা স্টেশন করা যাবেনা। আপনি হেসে হেসে মানুষকে গুলি করতে পারেন। সময় থাকতে সাবধান হয়ে যান। ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন। তা না হলে মহিউদ্দিন চৌধুরী কি করতে হয় জানে। আপনি মেয়রের চেয়ারে বসে দোকান দিয়ে স্টেডিয়াম ঘিরে ফেলেছেন। বিজয় মেলার জায়গা ছেড়ে দিন। অন্যায়-অবিচার বন্ধ করুন। না হলে নগরবাসীকে নিয়ে আপনার অপসারণের দাবি জানাবো।
মৎস্য সমবায় সমিতির নেতা মোঃ শামসুল আলমের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য রাখেন জাসদ নেতা জসিম উদ্দিন বাবুল, শ্রমিক নেতা মাহবুবুল হক চৌধুরী এটলি, কামাল উদ্দিন বাদল, সৌরভ বিকাশ বড়–য়া, মহিলা নেত্রী মমতাজ খান, হোসনে আরা বেগম, যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিন বাচ্চু, হেলাল আকবর চৌধুরী, মোঃ মহসিন, নুরুল আলম, জহুর আহমেদ, জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
আ জ ম নাছির
মহিউদ্দিন চৌধুরীকে ইঙ্গিত করে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, কেউ কেউ অন্তরের জ্বালা প্রশমিত করার জন্য নগরবাসীর সামনে মিথ্যাচার করছে। তিনি বলেন, যারা নালা-নর্দমা ও ফুটপাত দখল, প্লট বরাদ্দের নামে ধোঁকাবাজি, আয়বর্ধক প্রকল্পের নামে সরকারি সম্পদ অপচয়, নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য অবৈধ দখলসহ ভোগ বিলাসের জন্য বহুমুখী অবৈধ পন্থা অবলম্বন করেছিল তাদের কেউ এখন বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। গতকাল নগরীর ২৫ নম্বর রামপুর ওয়ার্ডের গোলপুকুর পাড়ে সপ্তাহব্যাপী বৈশাখী মেলার উদ্বোধনকালে মেয়র এ মন্তব্য করেন।
আ জ ম নাছির বলেন, পৌরকর নাগরিকসেবার একমাত্র উৎস। সরকারের বিধি-বিধান, আইন-কানুন, নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে নাগরিকদের কাছ থেকে পৌরকর আদায় করার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। মেয়র ও তার পরিষদের পক্ষে পৌরকর ধার্য করা বা বৃদ্ধি করার কোনো এখতিয়ার নেই। উত্তরাধিকার সূত্রে ১৯৮৫ সাল থেকে পৌরকর ধার্যকৃত হারে চসিক বর্তমানে কর পুনর্মূল্যায়ন করছে মাত্র। এ বিষয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের মতো অন্তর জ্বালা প্রশমিত করার কোনো সুযোগ নেই।
মেয়র বলেন, ষড়যন্ত্র, চক্রান্তসহ কোনো বাঁধাই আমার চলার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবে না। নগরবাসীকে দেওয়া প্রতিটি ওয়াদা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করাই আমার অঙ্গীকার। মানুষের দোয়া ও ভালোবাসা থাকলে আমার বিরুদ্ধে কোনো চক্রান্তেই সফল হবে না। তিনি বলেন, অতীতে অনেক দুঃসময় ও প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে জনগণের রায় নিয়ে ইমানি দায়িত্ব হিসেবে সততার সাথে সেবা করার মানসিকতায় দায়িত্ব পালন করছি। এক্ষেত্রে কোনো অপশক্তি সফল হবে না। আগামী তিন অর্থবছরের মধ্যে নাগরিকসেবা শতভাগ নিশ্চিত করা হবে। উন্নয়ন, আলোকায়ন ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করে চট্টগ্রামকে বিশ্বমানের নগরীতে উন্নীত করা হবে।
বৈশাখী মেলা উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান কাজলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসএম এরশাদুল্লাহ, হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান। বক্তব্য রাখেন নিয়াজ মোহাম্মদ আজাদ, আবদুল লতিফ, সুমন দেবনাথ, শাহাবু উদ্দিন চৌধুরী, মেলা কমিটির আহŸায়ক মো. নজরুল ইসলাম, সদস্যসচিব আবদুল আহাদ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।