Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খুলনার সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ৫৫ শতাংশ চিকিৎসকের পদ শূন্য

| প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

খুলনা থেকে বিশেষ সংবাদদাতা : খুলনার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণকেন্দ্রগুলোতে ৫৫ শতাংশ চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। গাইনি, মেডিসিন ও শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ অধিকাংশ স্থানে শূন্য। বটিয়াঘাটা রূপসা, দিঘলিয়া, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, কয়রা ও তেরখাদায় চক্ষু চিকিৎসকের পদ নেই। আর দাকোপ ও ফুলতলা উপজেলায় চক্ষু চিকিৎসকের পদ থাকলেও শূন্যস্থান পূরণ হচ্ছে না। দিঘলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মেরামতযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসাসেবায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন। খুলনার ৯ উপজেলার ৬৮টি ইউনিয়নে ২৩ লাখ ১৮ হাজার ৫২৭ জন নারী-পুরুষের বসবাস।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলার ৯টি উপজেলায় সর্বমোট ১৮২টি চিকিৎসকের পদের মধ্যে ১০১টি শূন্য। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার ৯টি পদের শূন্যতা নেই। জুনিয়র কন্সালটেন্ট (সার্জারি) ৯টি পদের ছয়টি শূন্য, জুনিয়র কন্সালটেন্ট (গাইনি) ৯টি পদের তিনটি শূন্য, জুনিয়র কন্সালটেন্ট (মেডিসিন) ৯টি পদের চারটি শূন্য, জুনিয়র কন্সালটেন্ট (অ্যানেসথেশিয়া) ৯টি পদের পাঁচটি শূন্য, জুনিয়র কন্সালটেন্ট (শিশু) ৯টি পদের শূন্যতা নেই, জুনিয়র কন্সালটেন্ট (ইএনটি) দু’টি পদের একটি শূন্য, জুনিয়র কন্সালটেন্ট (অর্থোপেডিক্স) দু’টি পদের একটি শূন্য, জুনিয়র কন্সালটেন্ট (চর্ম ও যৌন) দু’টি পদের শূন্যতা নেই, জুনিয়র কন্সালটেন্ট (চক্ষু) দু’টি পদের দু’টিই শূন্য, জুনিয়র কন্সালটেন্ট (গাইনি) দু’টি পদের দু’টিই শূন্য, আবাসিক মডিক্যাল অফিসার ৯টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ছয়টি, সহকারী সার্জন/এমও/ইএমও ১২টি পদের মধ্যে চারটি শূন্য, মেডিক্যাল অফিসার ৩৪টি পদের মধ্যে ১৪টি, মেডিক্যাল অফিসার (এএমসি) সাতটি পদের দু’টি শূন্য, সহকারী সার্জন (ইউনিয়ন পর্যায়) ৫৪টি পদের ৪৩টি শূন্য ও ডেন্টাল সার্জন ৯টি পদের চারটি শূন্য।
জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় উল্লেখ করেন উপজেলার হাসপাতালগুলোর চিকিৎসাব্যবস্থা সন্তোষজনক নয়। হাসপাতালে চিকিৎসকেরা থাকেন না। ফলে গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠী চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে সমন্বয়ের মাধ্যমে চিকিৎসক নিয়োগের জন্য তিনি স্বাস্থ্য বিভাগকে অনুরোধ করেন।
সিভিল সার্জন মো. আব্দুর রাজ্জাক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় উল্লেখ করেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে মেডিক্যাল অফিসারের শূন্যপদ পূরণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে ডাক্তার পদায়নের চেষ্টা চলছে। সঙ্কট সমস্যার কথা খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালককে জানানো হয়েছে। কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আ খ ম তমিজ উদ্দিন বলেন, উপজেলা সদরে সরকারি পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নেই। উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে জায়গিরমহল নামক স্থানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপিত। তিনি উপজেলা সদরে সরকারি পর্যায়ে চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনের দাবি তোলেন। দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খান নজরুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলা পর্যায়ে ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল চালু না হওয়ায় মেরামতের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
পাইকগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স ম বাবর আলী জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র চারজন ডাক্তার থাকায় উপক‚লবাসী চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ডেপুটি সিভিল সার্জন মঈন উদ্দিন মোল্লা শূন্যপদ পূরণ সম্পর্কে বলেন, সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসক পদে সমন্বয় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। নতুন নিয়োগ ছাড়া সব পদ পূরণ সম্ভব নয়। পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: প্রভাত কুমার দাস জানান, ২১ জন চিকিৎসকের স্থলে ১৭টি পদ শূন্য। ৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়ায় চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়েছে। অ্যাম্বুলেন্স প্রায়ই মেরামত করতে হচ্ছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুলনা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ