২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
হাঁচি হলো এক প্রকার শারীরিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে শরীর থেকে উদ্দীপক বা উত্তেজক বস্তু অপসৃত হয়। অ্যালার্জি আক্রান্ত ব্যক্তিরা উত্তেজক রাসায়নিক পদার্থ যেমন : হিস্টামিন নাক দিয়ে নির্গত হওয়ার সময় হাঁচি দেয়। কিছু স্পর্শকাতর দ্রব্য যেমন ধুলাবালি, পশুপাখি বা ফুলের পরাগের সংস্পর্শে এলে নাকের অ্যালার্জি আক্রান্তদের এ সমস্যাটি হয় এমনকি তীব্র গন্ধ, তাপমাত্রার পরিবর্তনেও। সাধারণত বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে ফুলের পরাগের জন্য অ্যালার্জির কারণে হাঁচি হয়। প্রায় যে কোনো জিনিসই যা নাকে উত্তেজনা সৃষ্টি করে তার কারণে হাঁচি হতে পারে।
হাঁচির ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয়সমূহ : সংস্কৃতিভেদে হাঁচিকে যেমন সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়, আবার মৃত্যুর পূর্বাভাস বলেও বিবেচনা করা হয়। বাস্তবিক পক্ষে মনে করা হয় ঈশ্বর তোমার সহায় হোন উক্তিটির উথান হয় ষষ্ঠ শতকের বিউবৌনিক প্লেগ থেকে (যে রোগে গ্রন্থাস্ফীতি দেখা দেয় এবং যা দ্রুত ছড়ায়)। এ রোগের একটি প্রধান উৎসর্গ হল হাঁচি।
সাধারণ হাঁচির উৎপাদকসমূহ :
মাইট (যা পুরাতন ধুলাবালিতে থাকে)
মোল্ড
ফুলের রেণু বা পরাগ
ঠা-া এবং শুষ্ক আবহাওয়া
ঘরের ধুলো ময়লা
প্রাণীর পশম এবং চুল
ওষুধসহ কিছু রাসায়নিক দ্রব্যাদি
প্রসাধনসামগ্রী
উগ্র সুগন্ধী বা তীব্র দুর্গন্ধ
হাঁচি একটি এলার্জিজনিত রোগ, কারও কারও ক্ষেত্রে সামান্যতম সমস্যা হলেও কারও কারও ক্ষেত্রে দুর্বিষহ জীবন। হাঁচির সঙ্গে সম্পৃক্ত রোগ হলো অ্যালার্জিক রাইনাইটিস ও অ্যাজমা।
হাঁচি হলো এবং নাক দিয়ে পানি পড়ল, এটা কোনো রোগ হলো? প্রথম প্রথম কেউই এ লক্ষণগুলোকে রোগ বলে মনে করেন না। প্রায় সময় যখন অনবরত হাঁচি বা নাক বন্ধ হয়ে যায় তখন এ লক্ষণগুলোকে রোগ হিসেবে ভাবতে শুরু করেন এবং নিজে নিজেই অথবা ওষুধের দোকানদারের সঙ্গে আলাপ করে দু-একটি এন্টিহিস্টামিন খেতে শুরু করেন। এন্টিহিস্টামিন খেলে অবশ্য রোগের লক্ষণ কিছুটা উপশম হয়। কিন্তু যখন বারবার হয় তখন স্থানীয় যে কোনো ডাক্তার এবং পরবর্তীতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তখন এন্টিহিস্টামিনের পাশাপাশি স্প্রে আকারে স্টেরয়েড নাকের নাসারন্ধ্রে ব্যবহার করতে বলেন। এতে অবশ্য রোগী পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি ভালো অনুভব করেন। কিন্তু দুঃখ হলেও বাস্তব সত্য যে যতদিন নেসাল স্টেরয়েড ব্যবহার করেন তত দিনই ভালো থাকেন, যেই নাকের স্প্রে বন্ধ করেন তার সঙ্গে সঙ্গে না হলেও কিছু দিন পরই শুরু হয় তার সেই পূর্বাবস্থা, এগুলো হলে আপনি অ্যালার্জিজনিত রোগে বিশেষত অ্যালার্জিক রাইনাইটিস রোগে ভুগছেন ধরে নিতে হবে। এই রোগের সঠিক চিকিৎসা না নিলে পরবর্তীতে অ্যাজমাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে গড়ে ৭০-৮০ ভাগ।
এই রোগ থেকে মুক্তির উপায় কি?
প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সমন্বিতভাবে এ রোগের চিকিৎসা হলো :
এলারজেন পরিহার : যখন অ্যালার্জির সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় তখন তা পরিহার করে চললেই সহজ উপায়ে অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ওষুধ প্রয়োগ : ওষুধ প্রয়োগ করে সাময়িকভাবে অ্যালার্জির উপশম অনেকটা পাওয়া যায়।
অ্যালার্জি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি : অ্যালার্জি দ্রব্যাদি থেকে এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি অ্যালার্জিক রাইনাইটিস/অ্যাজমা রোগীদের সুস্থ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি।
বিশ্বের অধিকাংশ দেশ বিশেষত উন্নত দেশগুলোতে ও পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই ভ্যাকসিন পদ্ধতির চিকিৎসাকে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস/অ্যাজমা রোগের অন্যতম চিকিৎসা বলে অবিহিত করেন । এটাই অ্যালার্জিক রাইনাইটিস/অ্যাজমা রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থ থাকার একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি।
আগে ধারণা ছিল অ্যালার্জি একবার হলে আর সারে না। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। প্রথম দিকে ধরা পড়লে অ্যালার্জি জনিত রোগ একেবারে সারিয়ে তোলা সম্ভব। অবহেলা করলে এবং রোগ অনেক দিন ধরে চলতে থাকলে নিরাময় করা কঠিন হয়ে পড়ে ।
উন্নত দেশের সব প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা বর্তমানে বাংলাদেশেই রয়েছে। তাই সময়মতো অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
নেওয়া উচিত।
ষ অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস
অ্যালার্জি ও অ্যাজমা বিষেশজ্ঞ
দি এলার্জি অ্যান্ড অ্যাজমা সেন্টার
৫৭/১৫ পান্থপথ, ঢাকা
ফোন : ০১৭২১৮৬৮৬০৬, চট্টগ্রাম-০১৮৪২৭০৮৯৪৫, ফরিদপুর-০১৭১১৪৪৫৮০৫, যশোর-০১৭১১৮৪১৫৭২, ঝিনাইদহ- ০১৭১১৯৬৫৪৫৪।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।