Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

গাজীপুরে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ আহত ১০

ক্যাম্পাস ভাঙচুর, আটক ১২

| প্রকাশের সময় : ২ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা : গাজীপুরে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজে আধিপত্য বিস্তার ও ছাত্রসংদের দাবিতে মন্ত্রির উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দু’পক্ষের মারামারিতে সদর সার্কেলের এডিশনাল এসপি শাখাওয়াত হোসেন, কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন সৌরভ ও ছাত্রলীগ নেতা রবিনসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা অনিক সরকারসহ ১২ নেতাকর্মীকে আটক করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন রয়েছে।
আহত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, শনিবার দুপুরে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রী নিবাস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আসেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সভাপতি সজীব হোসেন সবুজ ও তার সমর্থিত ছাত্রলীগের একাংশ কলেজে ছাত্রসংসদের নির্বাচন দাবি করে। দাবির প্রেক্ষিতে মন্ত্রী মহোদয় শিক্ষামন্ত্রীর সাথে কথা বলে অনুষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেয়ার আশ্বাসও দেন। অনুষ্ঠান শেষে তিনি চলে যাবার সময় ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সভাপতির সমর্থকরা মন্ত্রীর গাড়ি অবরোধ করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়ে মিছিল শুরু করে। এ সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভের পক্ষের নেতা-কর্মীরা এতে বাঁধা দেয়। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে এবং পুলিশ প্রহরায় মন্ত্রীর গাড়ি এলাকা ত্যাগ করে। সংঘর্ষকালে বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা ও ইটপাটকেলে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন সৌরভ, ছাত্রলীগ নেতা রবিন, পুলিশ পরিদর্শক শাখাওয়াত হোসেনসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ অভিযান চালিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং ১২নেতা কর্মীকে আটক করে। সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্রলীগের কয়েক’শ নেতাকর্মী অনুষ্ঠানের চেয়ার, ব্যানার, ফেস্টুন, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের কার্যালয়, শিক্ষক মিলনায়তনসহ কলেজ ক্যাম্পাসে রক্ষিত বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হয়।
ছাত্রলীগের কালেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন সৌরভ জানান, মন্ত্রী চলে যাওয়ার সময় ছাত্রসংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বহিরাগতরা মন্ত্রির গাড়ি আটকে রাখে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় তার গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে গেলে তারা লাঠি-সোটা নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় তাদের হামলায় তিনিসহ ১০-১২ জন নেতা-কর্মী আহত হন। আহতরা শহীদ তাজউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিসা নিয়েছেন। ছাত্রলীগের কালেজ শাখার সভাপতি সজিব হাসান সবুজ জানান, সাধারণ শিক্ষার্থীরা সংসদ নির্বাচন চেয়ে মন্ত্রির গাড়ির সামনে অবস্থান নিলে কলেজের সাবেক ভিপি আফজাল হোসেন রিপন সরকার ও তার সমর্থিত নেতা-কর্মীরা গিয়ে তাদের সাথে বাক-বিতন্ডায় জড়ালে এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘষের সৃষ্টি হয়।
এডিশনাল এসপি শাখাওয়াত হোসেন আরো জানান, সরকারি কাজে বাধা ও মন্ত্রির গাড়ি অবরোধের অভিযোগে ঘটনাস্থল ও আশেপাশ থেকে ছাত্রলীগ কর্মী আনিসুজ্জামান অনিক সরকার, শেখ আশরাফুল, মামুন, ইলিয়াস রুমন, লিয়াকত হোসেন, হাসান শাহরিয়ার সুমন, আব্দুল আলী, মো. ইয়াসিন হোসেন, আল ফাহাদ, রাফিজুল ইসলাম আবির, সোহেল রানা ও মামুনকে পুলিশ আটক করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মারামারির বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর জেরিনা সুলতানা জানান, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মুক্তযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রির কাছে শিক্ষার্থীদের একাংশ ছাত্রসংসদ নির্বাচন ও বাসের দাবি জানায়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেয়া সত্যেও শিক্ষার্থীদের একাংশ কেন কলেজ ক্যম্পাসে ভাঙচুর করেছে তা বুঝতে পারলাম না।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্যাম্পাস


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ