গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
স্টাফ রিপোর্টার : দেশে প্রথমবারের মতো বাঁশ দিয়ে টেলিযোগাযোগ টাওয়ার নির্মাণ করেছে ইডটকো গ্রæপ। রাজধানীর উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের একটি বাড়ির ছাদে সম্প্রতি উদ্ভাবনীমূলক এই টাওয়ার স্থাপন করা হয়। পরিবেশ বান্ধব বাঁশের তৈরি এই টাওয়ার পরবর্তীতে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানেও নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল (মঙ্গলবার) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে একথা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, স্টিলের পরিবর্তে ব্যবহৃত বাঁশের তৈরি এই টাওয়ার প্রাথমিকভাবে সফল হলে টাওয়ার শেয়ারিং গাইডলাইনেও তা অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আমরা চিন্তা করবো। বাঁশের তৈরি টাওয়ার যদি সফলতা লাভ করে তবে দেশীয় প্রযুক্তি হিসেবে এ খাতে প্রণোদনা দেয়া হবে। পরিবেশের ক্ষতি কমিয়ে টেলিযোগাযোগ খাতকে এগিয়ে নিতে বিটিআরসি সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। ফোর জি চালুর বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা খুব শিঘ্রই ফোরজি চালু করতে যাচ্ছি। নতুন এই সেবা চালুর পরপরই আরও অনেক টাওয়ারের প্রয়োজন হবে। তাই সন্বিতভাবে কিভাবে অপারেটরদের নেটওয়ার্ক সেবার আওতায় আনা যায় সে বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে।
বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ’এর নেতৃত্বে একটি গবেষক দল টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোর নকশা এবং নির্মাণে গতানুগতিক স্টিলের অবকাঠামোর বিকল্প উপাদান হিসাবে বাঁশের সক্ষমতার উপর গবেষণা কাজটি পরিচালনা করেন। টাওয়ারটি নির্মাণে নেতৃত্ব প্রদানকারী বুয়েটের প্রফেসর ড. সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, “দেশে প্রথম বাঁশের তৈরি টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো স্থাপিত হওয়ায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ বাংলাদেশে বাঁশ একটি সহজলভ্য উপাদান। প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে অবদান রাখতে এ ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার এ দেশের পরিবেশের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। বাঁশের ব্যবহারের সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখা গেছে, বাঁশের বৈচিত্র্যময় গঠন বৈশিষ্ট্যের কারণে টেলিকম টাওয়ার তৈরির জন্য এটি একটি ভালো উপাদান হতে পারে। পরিবেশ সংরক্ষণের মাধ্যমে ও পরিবেশ সচেতন জাতি গঠনে এটি অবদান রাখতে সক্ষম। তিনি বলেন, এ টাওয়ারটির আরেকটি সুবিধা হল, বাঁশের ওজন প্রাকৃতিকভাবে হালকা হওয়ার কারণে এটি সহজেই বহন করা যায় এবং ভবনের উপর অতিরিক্ত কোন চাপ সৃষ্টি না করেই স্থাপন করা যায়। উঁই বা ঘুণপোকা এবং ছত্রাকের আক্রমণ থেকে বাঁশকে রক্ষা করতে এবং প্রতিকূল আবহাওয়ায় টিকিয়ে রাখতে এটিকে রাসায়নিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয়।
ইডটকো গ্রæপের সিইও সুরেশ সিধু বলেন, “ইডটকো বরাবরই টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো খাতের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপাদান এবং উদ্ভাবনীমূলক সল্যুশন্স নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা গবেষণা পরিচালনা করে থাকে। বাঁশের তৈরি এ টেলিযোগাযোগ টাওয়ার আমাদের সর্বশেষ উদ্ভাবন। টেকসই প্রাকৃতিক সম্পদ বাঁশকে টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহার করে পরিবেশের উপর এর প্রভাব কমানোর উদ্দেশ্যেই মূলত আমরা এ উদ্যোগটি নেই। ঢাকার অধিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নে আমাদের অগ্রগণ্য ভূমিকার আরেকটি নিদর্শন হবে এই টাওয়ার।”
প্রথাগত টাওয়ারের বাইরে নিত্য নতুন উদ্ভাবনীমূলক পরিবেশ-বান্ধব টাওয়ার তৈরিতে ইডটকোর ধারাবাহিক গবেষণার আরেকটি নতুন সংযোজন বনজসম্পদ বাঁশ দিয়ে তৈরি নবায়নযোগ্য এই অবকাঠামো। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর সাথে ইডটকো’এর যৌথ উদ্যোগ এই কাজ করেছে।
রেডিয়েশনের মাত্রা ও ঝুঁকির সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই : বিটিআরসি
এদিকে মোবাইল ফোনের টাওয়ার থেকে নিঃসৃত বিকিরণের (রেডিয়েশন) মাত্রা ও স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (বিটিআরসি) কাছে নেই। এ সংক্রান্ত কোন অভিযোগও সংস্থাটি পায়নি বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ। তিনি বলেন, অপারেটরগুলোর টাওয়ার থেকে কোনও ধরনের বিকিরণ এবং তা থেকে শরীরে ক্যানসারসহ দুরারোগ্য রোগ-ব্যাধি হয় কিনা তা নিয়ে এখনও কোনও অভিযোগ পায়নি বিটিআরসি।
গতকাল (মঙ্গলবার) রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, মোবাইল ফোনের টাওয়ার থেকে কোনও ধরনের বিকিরণ হয় কিনা বা হলে তা কি পরিমাণ এবং স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু ঝুঁকিপূর্ণ তা আমরা এখনও পর্যন্ত পরিমাপ করিনি। আমাদের কাছে এখনও কেউ তথ্যপ্রমাণসহ অভিযোগ করেননি। তিনি বলেন, মোবাইল ফোনের ব্যবহার বিষয়ে একটা ভুল ধারণা আছে। তবে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এবং আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলো এ নিয়ে অনেক গবেষণা চালিয়েছে। কিন্তু মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে ক্যানসার হওয়ার বিষয়টি এখনও সঠিক প্রমাণিত হয়নি। টাওয়ার ব্যবহারের জন্য কোনও গাইডলাইন তৈরি করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের গাইডলাইন তৈরি করার কিছু নেই। ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) নিজস্ব একটি গাইডলাইন আগে থেকেই আছে। আইটিইউ নিশ্চয়ই সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে এবং ডাক্তারি দিকগুলো ভেবেই গাইডলাইন তৈরি করেছে।
এদিকে আগামী ১০ এপ্রিলের মধ্যে মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণ প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনা প্রসঙ্গে ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী কোন মোবাইল ফোন অপারেটরের টাওয়ারের বিকিরণ মাত্রা কত তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন জমা দেব আমরা। এক্ষেত্রে আইটিইউ থেকে নির্ধারণ করে দেয়া মাত্রার তুলনায় বিকিরণ বেশি হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।