Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শ্রীমঙ্গলে টিলা কেটে সাবাড় বৃষ্টি হলে ভূমিধসের আশঙ্কা

| প্রকাশের সময় : ২৫ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আনোয়ার হোসেন জসিম, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) থেকে : মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের মহাজিরাবাদ এলাকায় পাহাড় কেটেছে ‘গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট’ প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ। ওই এলাকার যাতায়াতকারী মানুষের একমাত্র রাস্তাটিও কেটে দিয়েছে।
সুলতান টি রিসোর্টের ‘জান্নাতুল ফেরদৌস’ নামক এলাকায় গত তিন-চার দিন ধরে চলছে তাদের আবাসিক স্থাপনা নির্মাণ কার্যক্রম। এতে প্রাকৃতিক পাহাড় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। বৃষ্টি হলে আশঙ্কা রয়েছে ভূমিধসেরও।
খবর পেয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন মহাজিরাবাদ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্টের ‘জান্নাতুল ফেরদৌস’ নামক এলাকায় মানুষের যাতায়াত বন্ধ করে পাহাড় কেটে রাখা হয়েছে। ফলে উপরে অবস্থিত আনারস বাগানের টিলাটি মারাত্মক ঝুঁকির মুখে।
গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্টের জিএম আরমান খান বলেন, ‘আরে পাহাড় তো আমরা কাটি নাই। আমাদের পাহাড়ের যে জমিটা আছে এটির পাশে এক লোক রাস্তা করেছে। আর আমাদের ছিল ভ্রাম্যমাণ বাথরুম। এটি তিন থেকে চার ফুট ছিল। আমাদের জমির মধ্যে বর্ষায় মাটি ধসে চলে আসবে। সে জন্য আমাদের স্থাপনায় এখানে গাইড ওয়াল হবে। তাই চারপাশের মাটিগুলো কিছুটা সরানো হয়েছে।
পাহাড় কাটার প্রশ্ন তুললে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, আমরা পাহাড় কাটছি কোথায়? এখানে আগে একটি সেপটিক ট্যাংক ছিল। এখন সেই সেপটিক ট্যাংকটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে এখানে স্থায়ী ওয়াল নির্মাণ করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক ব্যক্তি অভিযোগ করে এ প্রতিবেদককে বলেন, তারা পাহাড় কাটার পাশাপাশি আমাদের যাতাযাতের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। দৈনিক দু’তিন হাজার মানুষ এই পথ দিয়ে যাতায়াত করে। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও এ পথটি ব্যবহার করে থাকে।
পাহাড় রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, এভাবে প্রাকৃতিক পাহাড় ধ্বংস করে যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ আমাদের পরিবেশবিরোধী। গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্টের মতো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আমরা এ রকম কর্মকান্ড আশা করি না। প্রাকৃতিক পরিবেশের সুরক্ষা এবং বনসংলগ্ন পাহাড়ি এলাকার কথা বিবেচনা করে এ ব্যাপারে প্রশাসনের দ্রæত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোবাশশেরুল ইসলাম, ‘আপনি পাহাড় কাটার ছবিগুলো আমার ফেসবুক ইনবক্সে দেন। এ ব্যাপারে আমি সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) বলছি।’সহকারী কমিশনার ভূমি বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, আমি ঘটনাস্থলে যাইনি। তহশীলদারকে পাঠিয়েছিলাম। সে ছবি তুলে এনে আমাকে দেখিয়েছে। বলেছে স্যার তারা ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কের জন্য করছে। আর যেটুকু পাহাড় কাটছে সেখান দিয়া না কি গার্ডওয়াল বানাবে। এটা হল রাস্তা। পাহাড়ের যাতে ধস না হয় তাদের জায়গায় যাতে পাহাড় এসে না পড়ে। যে টিলাটায় সামনে গার্ডওয়াল করবে এ টিলাটা তাদের না। কিন্তু বৃষ্টিতে যাতে তাদের জায়গায় ধস নেমে না আসে সেজন্য গার্ডওয়াল দিচ্ছে। তাতে মানুষের কোনো ক্ষতি হবে না। পাহাড়কাটার আইনেও বলা আছে, ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কের জন্য জনস্বার্থে পাহাড় কাটতে পারে। তারপরও গ্র্যান্ড সুলতান কর্তৃপক্ষকে আমরা বলছি। তারা চাপের মধ্যে আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শ্রীমঙ্গল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ