বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দেবিদ্বার থেকে উপজেলা সংবাদদাতা : কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌর এলাকার দক্ষিণ ভিংলাবাড়ি গ্রাম থেকে হাজেরা বেগম (৪৮) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধারের ১৬ ঘণ্টার মধ্যে ঘাতক চিহ্নিত করে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই ঘাতক আর কেউ নয়, সে নিহত হাজেরা বেগমের স্বামী শাহ্ আলম (৫৪)। গতকাল সোমবার দুপুরে ঘাতক শাহ্ আলমকে কুমিল্লার ৪নং আমলী আদালতে হাজির করলে আদালতে অকপটে স্ত্রী হাজেরাকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিপ্লব দেবনাথ তার জবানবন্দি রেকর্ড করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
পরবর্তীতে পুলিশ তার (নিহতের) স্বামীকে টার্গেট করে তদন্ত টিম যৌথ জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক আর কেউ নয়, নিহতের স্বামীই একমাত্র ঘাতক ছিল বলে প্রমাণ পান। জিজ্ঞাসাবাদে সে তার স্ত্রীকে হত্যার কারণ হিসেবে বলতে গিয়ে পুলিশকে জানায়, আমি সংসার জীবনে খুবই তিক্ত-বিরক্ত হয়ে উঠি। স্ত্রীর কারণে পিতা-মাতা, ভাই বোন আত্মীয়-স্বজনের নিকট থেকে আলাদা হতে হয়েছে। পিতা তার সম্পত্তি থেকে আমাকে বঞ্চিত করে সমস্ত সম্পত্তি ৩ ভাইয়ের নামে লিখে দিয়েছে। আমি স্ত্রীর জন্য সবকিছু মেনে নিলেও প্রতিনিয়ত স্ত্রীর নির্যাতন, গালমন্দ, অশোভন আচরণ মুখ বুঝে সহ্য করে আসছি। প্রায়ই স্ত্রী আমাকে মারধর করত, কামড়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গা ক্ষত-বিক্ষত করে দিয়েছে। বাপের বাড়ির লোকদের এনে আমাকে মারধর ও হুমকি দিত। আমার পরিবারের লোকদের নিকট কখনোই লজ্জা, ভয়ে অভিযোগ করিনি। ঘটনার দিন (অর্থাৎ শনিবার সন্ধ্যায়) আমি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পার্শ্ববর্তী মরিচাকান্দা গ্রামের মুরগির ফার্ম থেকে এসে রাতের খাবার খেতে বসি। এ সময় আমার স্ত্রী বাসি তরকারির ঝোল ও পচা গন্ধযুক্ত ভর্তা এনে দেয়, আমি খাবারের এ অবস্থা কেন? জানতে চাইলে সে আমাকে গোলামের পুতসহ অকথ্য ভাষায় গালমন্দই দেয়, ঝারু দিয়ে পিটিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয়। আমি রাগে-ক্ষোভে ‘মুরগির ফার্মে ঘুমাতে যাই। শুধুমাত্র একজন নারীর কারণে আমার এ পরিণতি। এক পর্যায়ে আমি তার বুকের উপরে উঠে গলা টিপে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করি। লাশটি অনেক ভারি ছিল, বাঁশ ঝারে একা নেয়া সম্ভব নয় তাই তাকে টয়লেটের সামনে ফেলে তার জুতাগুলো পাশে রেখে কিছুক্ষণ ঘরে থেকে আবার মুরগির ফার্মে চলে যাই।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনা রহস্যাবৃত ছিল, কেউ কেউ পারিবারিক বিরোধের কারণ এবং জ্বিনে মেরে ফেলার অভিযোগ তুললেও নিহতার বিছানা পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে প্রশ্রাব দেখে ধারণা করি তাকে ঘরেই হত্যা করে বাহিরে ফেলে রেখেছে এবং এ ক্ষেত্রে তার স্বামীকে সন্দেহের তালিকায় রেখে তদন্ত শুরু করি। হত্যাকান্ডের ১৬ ঘণ্টার মধ্যেই প্রকৃত খুনিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। সোমবার আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ঘাতক স্বামী শাহআলম অকপটে হত্যাকান্ডের দায় স্বীকারসহ হত্যাকান্ডের বিবরণ পেশ করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।