Inqilab Logo

শনিবার, ০১ জুন ২০২৪, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

দেশের স্বাধীনতা দিল্লির কাছে হস্তান্তর করতে দেবো না -বিএনপি

প্রতিরক্ষা চুক্তি হলে মানুষ ‘রক্ত দিয়ে’ প্রতিহত করবে

| প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম


স্টাফ রিপোর্টার : প্রতিরক্ষা চুক্তির আওতায় ভারত নিজেদের তৈরি সমরাস্ত্র বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করে দেশটাকে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার এক্সটেনশনে পরিণত করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। প্রতিরক্ষা চুক্তি হলে মানুষ ‘রক্ত দিয়ে’ তা প্রতিহত করবে; এ দেশের স্বাধীনতা দিল্লির কাছে হস্তান্তর করতে দেয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে দলটি। শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী আহম্মেদ বলেন, ভারতের সাথে প্রতিরক্ষা চুক্তি কিংবা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করাটাও হবে বিপজ্জনক। ভারতের প্রস্তাবিত ২৫ বছর মেয়াদি প্রতিরক্ষা চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে তাদের মিলিটারি হার্ডওয়্যার অর্থাৎ সমরাস্ত্র বিক্রি করতে চায়। আমরা মনে করি, ভারতের কাছ থেকে সামরিক হার্ডওয়্যার আমদানি করলে সে ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হবে ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটা এক্সটেনশন মাত্র।
এই চুক্তির আওতায় অস্ত্র কেনার শর্তে বাংলাদেশকে ভারত ৫০ কোটি মার্কিন ডলার লাইন অফ ক্রেডিট দেবে, অর্থাৎ ওই অর্থ দিয়েই ভারত থেকে অস্ত্র কিনতে হবে। এর  অর্থ হচ্ছে, ভারতের কৈ মাছের তেল দিয়ে কৈ ভাজার চানক্যনীতি।
আগামী ৭ এপ্রিল তিন দিনের সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফর করবেন।  সেখানে অবস্থানকালে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, অতীতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর গিয়ে ৫০টি চুক্তি করে এসেছিলেন যার কোনোটিই জাতীয় সংসদে কিংবা জনসম্মুখে প্রকাশ করেননি। ওইসব গোপন চুক্তিতে কী লেখা আছে, দেশের মানুষ আজও জানে না।
বাংলাদেশের সাথে প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে ভারতের এক সাবেক সেনা প্রধান চার-পাঁচমাস আগের বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ওই সেনা প্রধান বলেছিলেন, বাংলাদেশের অস্ত্র সম্ভার সেকেলে, আধুনিক  থেকে অনেক দূরে, এগুলো মানসম্মত নয়। ভারত নিজেই হচ্ছে সামরিক সরঞ্জাম আমদানিকারক একটি দেশ।
সে ক্ষেত্রে ভারত কি ধরনের সমরাস্ত্র বাংলাদেশে রফতানি করবে, সেটি এখন বড় প্রশ্ন। আসলে এর  পেছনে যে, অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে, তা দেশের মানুষ ভালোভাবেই উপলব্ধি করে। দেশের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তাকে ভারতের জিম্মায় সঁপে দিতে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতায়-আমলকি জবরদস্তিমূলকভাব করতলগত করে রেখেছে।
বিএনপির এই নেতার অভিযোগ করেনÑ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের হস্তক্ষেপ এতই বেড়ে গেছে যে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয় নিয়ে গুরুতর শঙ্কা ও সন্দেহ দেশবাসীর মনকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। দেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হতে চলেছে কি না, তা নিয়ে মানুষের দুশ্চিন্তার শেষ নেই।
আমরা বলতে চাই, ভারত বিন্দুমাত্র নিজেদের স্বার্থ পরিত্যাগ করতে রাজী নয়। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে  দেশের আপামর জনসাধারণের শরীরে রক্ত ঢেলে দিয়ে অমিত বিক্রমে তা প্রতিহত করবে।  
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, শাহিন শওকত, মনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ