মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নেদারল্যান্ডসে নির্বাচনে পপুলিজমের উত্থানের পদধ্বনি
ইনকিলাব ডেস্ক : নির্বাচনের আগে ইসলাম-বিদ্বেষী ও অভিবাসন-বিরোধীদের উগ্র জাতীয়তাবাদী প্রচারণায় তীব্র চাপের মুখে থাকলেও নেদারল্যান্ডসের মধ্য-ডানপন্থী প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের দল জয়ী হতে যাচ্ছে। আংশিক ভোট গণনার ভিত্তিতে এই খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বুধবার ডাচ নির্বাচনে ৮১ শতাংশ ভোটার নিজের রায় প্রদান করেছেন। যা গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট গ্রহণের ঘটনা। এবারের নির্বাচনের বিশেষ দিক ছিল বহু বছরের উদারনৈতিক রাজনৈতিক চর্চার বিপরীতে উগ্র জাতীয়তাবাদী, মুসলিম-বিদ্বেষী ও অভিবাসন-বিরোধীদের উত্থান। এর সঙ্গে ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থাকা না থাকার প্রশ্ন। উগ্র ডানপন্থী গ্রিট ওয়াইল্ডারের প্রচারণায় ব্যাপক চাপের মুখে পড়েছিলেন রুতে। তবে ৫৫ শতাংশ ভোট গণনার পর দেখা যায়, ১৫০ আসনের পার্লামেন্টে রুটের ভিভিডি পার্টি ৩২টি আসনে জয়ের পথে রয়েছে। তবে ২০১২ সালে এই পার্টি জয়ী হয়েছিল ৪১টি আসনে। ওয়াইল্ডারের প্রচারণায় যতটা ধারণা করা হয়েছিল জনগণ সেভাবে সাড়া দেননি। তার নেতৃত্বাধীন ফ্রিডম পার্টি, মধ্যপন্থী ডেমোক্র্যাটস ৬৬ এবং ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাট পার্টি ১৯টি করে আসনে জয়ের পথে রয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এএনপি জানিয়েছে। খবরে বলা হয়, গত বুধবারের এ নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের মধ্য-ডান ফ্রিডম অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি পার্টি’র (ভিভিডি) সঙ্গে ইসলাম ও অভিবাসীবিরোধী গিয়ার্ট বিল্ডার্সের কট্টর-ডানপন্থি পার্টি ফর ফ্রিডম (পিভিভি)-এর। রুটের প্রতিপক্ষ বিল্ডার্সকে তার ইসলামবিদ্বেষ এবং অভিবাসনবিরোধিতার জন্য আদালত পর্যন্ত যেতে হলেও তার এ অবস্থান দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তাও পেয়েছে। বিল্ডার্স ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে নেদারল্যান্ডসকে বিচ্ছিন্ন করার অঙ্গীকার করছেন। অঙ্গীকার করেছেন সব মসজিদ বন্ধ করার পাশাপাশি কোরআনও নিষিদ্ধ করার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে অনেক মিলের কারণে ডাচ নির্বাচনে বিল্ডার্সের উত্থানের সম্ভাবনা একটি ভিন্ন বার্তাই দিচ্ছে। নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে অনেক আগেই পপুলিজমের প্রবণতা থামাতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তা না হলে ইউরোপে ধস নামবে বলে সতর্ক করেন তিনি। ভোটারদেরকে ভুল পথে না যাওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন রুটে। কিন্তু তার এ আহ্বানেও থেমে থাকেনি ফ্রিডম পার্টির বিল্ডার্সের জনসমর্থন। জনমত জরিপগুলোতে এগিয়ে থেকেছে তার দল। যদিও সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে বিল্ডার্সের দলের জনপ্রিয়তা কিছুটা কমেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই এর কারণ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার প্রেক্ষাপট আংশিক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন। তারা বলছেন, ওয়াশিংটনে যা ঘটছে সেটি দেখে অনেক ডাচ নাগরিকই হয়ত কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়েছেন। গত বুধবার ডাচ প্রধানমন্ত্রী রুটে ভোট দেয়ার পর দেশের নাগরিকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা কল্পনা করে দেখুন ফ্রিডম পার্টি প্রথম স্থানে উঠে আসলে বিশ্বে এর কি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে নেদারল্যান্ডসের পর মে মাসে ফ্রান্সে এবং সেপ্টেম্বরে জার্মানিতে নির্বাচন হবে। এদিক থেকে রুটে নেদারল্যান্ডসের নির্বাচনকে কোয়ার্টার ফাইনাল আখ্যা দিয়ে বলেন, মে তে ফ্রান্সের সেমি ফাইনাল আর সেপ্টেম্বরে জার্মানিতে ফাইনালের আগেই পপুলিস্টদের দাপট থামাতে হবে। তা না হলে আমার মনে হয় ব্রেক্সিট এবং মার্কিন নির্বাচনের পর বিশ্ব আবার আরেকটি ভুল ধরনের পপুলিজমকে আজকের দিনে জয়ী হতে দেখবে। ওদিকে, বিল্ডার্স নিজের ভোট দেয়ার পর বলেছেন, আজকের নির্বাচনের ফল যা-ই হোক না কেন, জেনি আর বোতলে ফিরে যাবে না। আর এই দেশপ্রেমী বিপ্লব আজ কিংবা কাল যখনই হোক ঘটবেই। ডাচ রাজনীতিতে বিভক্তির কারণে দেশটিতে কোনো না কোনোভাবে একটি জোট সরকার হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। পপুলিস্ট পার্টির জনপ্রিয়তা বেশি থাকায় নির্বাচনে এ দলের জয়লাভের সম্ভাবনা এখনো আছে। রয়টার্স, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।