পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘র’ নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য তাদের পাতানো খেলা
স্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন ভারত সফর প্রাক্কালে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য সরকারের পাতানো খেলার অংশ বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
গতকাল বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হঠাৎ করে ভারতবিরোধী বক্তব্য দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করতে চেয়েছেন, করছেন। তিনি (শেখ হাসিনা) বলেছেন, ২০০১ সালে ভারতের ‘র’ এবং যুক্তরাষ্ট্র মিলে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল। হঠাৎ করে শেখ হাসিনার ‘র’ এর বিরুদ্ধে বক্তব্য প্রদান রহস্যজনক। হঠাৎ করে তার (প্রধানমন্ত্রী) ‘র’ এর বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়া একটি ‘পাতানো খেলা ও তামাশারই অংশ বলে আমরা মনে করি।’
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
ভারতের সাথে সম্ভাব্য প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা নানা খবরের পরিপ্রেক্ষিতে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, দক্ষিণ এশিয়াভিত্তিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমসহ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বলছে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাক্ষরিত কয়েকটি চুক্তি এবং তাদের কাছ থেকে সাবমেরিন কেনার পর ভ‚-রাজনৈতিক নিরাপত্তার প্রশ্নে উদ্বিগ্ন ভারত। সেই উদ্বেগ দূর করতেই প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের প্রতিরক্ষা চুক্তি সম্পাদনের তোড়জোড় করছে ভারত।
আমরা মনে করি, ভারতের সাথে বাংলাদেশে সামরিক চুক্তি হলে তা হবে আত্মঘাতী ও জাতীয় স্বাধীনতাবিরোধী। দেশের নিরাপত্তা যদি ভারতের ওপর নির্ভরশীল হয় এবং সে দেশের ইচ্ছা অনুযায়ী যদি প্রতিরক্ষা নীতি গ্রহণ করতে হয়, তাহলে এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৗমত্ব বলে কিছুই থাকবে না। আমরা দৃঢতার সাথে বলতে চাই, এরকম রাষ্ট্রবিরোধী গোপন চুক্তি হলে জনগণ তা কখনো মেনে নেবে না বরং তা প্রতিরোধে সর্বশক্তি দিয়ে এগিয়ে আসবে।
প্রতিরক্ষা চুক্তির বিরুদ্ধে দেশের মানুষ সোচ্চার হবে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, জনগণকে না জানিয়ে কোনো চুক্তি এদেশের জনগণ হতে দেবে না, বাস্তবায়ন হতে দেবে না। দাসত্বের শৃঙ্খলে বাঁধা যে কোনো চুক্তি এদেশের জন্য রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সংগঠন অগ্নিবর্ণ সংগ্রামে প্রতিহত করবে।
আমি কবির কণ্ঠে বলতে চাই, ‘এদেশ কাড়তে যেই আশুক, আমরা সাহসে বেঁধেছি বুক, তৈরি এখানে কড়া চাবুক চলছে কুচকাওয়াজ। আমরা নইকো ভীরুর জাত, দেবো নাকো হতে দেশ বেহাত।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ২০০১ সালে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ ও যুক্তরাষ্ট্র মিলে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসেছিলোÑ প্রধানমন্ত্রীর এই ধরনের বক্তব্য রহস্যজনক। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্যই ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা একটি ফাইল খুলে ছিলো যা ভারতের সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘সানডে’-তে ছাপা হয়েছিলো প্রায় ২৫-২৬ বছর আগে। সেই রিপোর্টে বলা হয় যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোরার্জি দেশাই আসার পর ওই ফাইলটি বন্ধ করে দেয়া হয়। তার আগে ইন্দিরা গান্ধী এই ফাইলটি চালু করেন।
পুনরায় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় আসলে ওই ফাইলটি আবার চালু করা হয়। এর কিছুদিনের মধ্যেই ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে দেশের স্বাধীনতার ঘোষক বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হন, কিছু উচ্ছৃঙ্খল সৈনিকদের হাতে। সুতরাং ‘র’ কাদের স্বার্থে কাজ করে দেশের জনগণ ভালোভাবেই জানে।
এ প্রসঙ্গে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং বাংলাদেশে একতরফা নির্বাচন করতে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, তার দেশবাসী দেখেছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণার প্রসঙ্গ রুহুল কবির রিজভী বলেন, আরপিও অনুযায়ী এটা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন। উনি প্রধানমন্ত্রী, উনি তো হচ্ছেন একটি লাভজনক পদে আছেন, উনি দেশের প্রধানমন্ত্রী। উনি নির্বাচনী জনসভা করে যদিও নৌকায় ভোট চাওয়ার কথা বলেছেন। এর এ্যাফেক্ট তো ল²ীপুরে হবে, কুমিল্লার সিটি করপোরেশনের নির্বাচনেও হবে। আমরা মনে করি, কুমিল্লায় যে নির্বাচন হচ্ছে, তার প্রাক্কালে ওই নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য এই কথাটি প্রধানমন্ত্রী বলছেন।
তিনি বলেন, সরকার সবকিছু আটকিয়ে রাখতে চায়, দখল করে রাখতে চায়। প্রধান বিচারপতিও মঙ্গলবার বলেছেন, সরকার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে রাখছে, জিম্মি করতে চাচ্ছেÑ এটি এটর্নি জেনারেলকে বলেছেন।
তাহলে এটা পরিষ্কার, এই সরকার ন্যূনতম গণতন্ত্রের পথে হাঁটছে না, যেনতেন প্রকারে সে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। এটার জন্য জনগণ নয়, এটার পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের সেখানে তিনি ক্ষমতার উৎসকে ক্ষমতার দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছেন, সেটাই তার ক্ষমতার উৎস, সেই গোয়েন্দা সংস্থা তাকে ক্ষমতায় রাখার পক্ষে কাজ করে।
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, কেন্দ্র নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, এবিএম মোশাররফ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।