Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

থানায় ১৩ ঘণ্টা দুই গৃহবধূ আটকের ঘটনা আতঙ্ক কাটেনি সেই পরিবারে

| প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা : মাদারীপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকায় এক পরিবারের দুই দুগ্ধপোষ্য নারীকে থানায় আটকে রাখা এবং বাড়িঘরে ভাঙচুরের ঘটনায় এখনও আতঙ্ক কাটেনি পরিবারে। উল্টো মামলার ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারছে না পরিবারের পুরুষ সদস্যরা। ওই গ্রামে অপরিচিত কোনো মানুষ গেলে পুলিশের ভয়ে পালাতে থাকে। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন মাদারীপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকায় গেলে এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকাল ১০টার দিকে মাদারীপুর সদর থানায় বিবদমান একটি জমির তদন্ত কাজে যান থানার এসআই মাহাতাব হোসেন। এ সময় তিনি বিবদমান জমির পাশের বাড়ির খালেক বেপারীর ছেলে পনির হোসেনের কাছে মামলাসংক্রান্ত বিষয় জানতে চান। তবে মামলা সম্পর্কে পনির কিছু জানে না বলে জানান। এতে এসআই মাহাতাব ক্ষিপ্ত হয়ে পনিরকে থাপ্পড় দেয়। একপর্যায়ে পনির পুলিশের সাথে বাগিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এতে আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মাহাতাব। পরে ফোন করে সদর থানা থেকে তিন গাড়ি পুলিশ নিয়ে পনিরের বাড়িতে ব্যাপক তান্ডব চালায়।
এ ব্যাপারে আকলিমা বেগম বলেন, ‘আমরা কোনো মামলার বাদি না, আসামিও না তবুও পুলিশ আমাদের দীর্ঘ সময় থানায় আটকে রাখে। আমার দুধের বাচ্চা কান্নাকাটি করলেও বাচ্চাকে নিতে দেয়নি। বাচ্চাকে থানায় নিয়ে গেলেও দুধ খাওয়াতে দেয়নি। এখন পরিবারের পুরুষ সদস্যরা পুলিশের ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছে না। আমরা এর বিচার চাই।’
পনিরের স্ত্রী ঝুনু বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীকে পুলিশ নির্যাতন করেছে। এখন মামলার ভয়ে সে বাড়ি ফিরতে পারছে না। তার নামে তো থানায় কোনো মামলা নেই তবুও কেন পুলিশ তাকে মারধর করল? আমার ৩ মাসের দুধের শিশু কি অপরাধ করেছে? তাকেও দুধ খেতে দেয়া হয়নি। আমি এর বিচার চাই।’ পনিরের মা আলেকজান বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, ‘কেউ অপরাধ করে থাকলে আইনের মাধ্যমে বিচার করবে। পুলিশ আমাদের রান্না করার চুলাটাও ভেঙে ফেলেছে। এটা কি ধরনের বিচার?
মাদারীপুর সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য আইনজীবী খান মো: শহীদ বলেন, ‘গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া কাউকে আটক করা আইনের পরিপন্থী। কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া দুগ্ধপোষ্য মায়েদের থানায় আটকে রাখা শুধু আইনের পরিপন্থীই নয়, অমানবিকও।’
সদর থানার ওসি জিয়াউল মোর্শেদ সোমবার রাতে বলেন, আমি ঢাকায় আছি। তবে শুনেছি এসআই মাহতাব দায়িত্ব পালন করতে গেলে তার পোশাকের ফুল ছিঁড়ে ফেলে পনির পালিয়ে যায়। এতে তার স্ত্রী ঝুনু বেগম সহযোগিতা করে। ওই ঘটনায় ঝুনু বেগমকে আটক করার পর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অনুরোধে পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন নিউজ না করার অনুরোধ করে বলেন, ক্ষতিগ্রস্তরা যদি অভিযোগ দেয়, তাহলে ওই এসআইর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: থানায়


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ