পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আখেরি মোনাজাতে ছারছীনার পীর ছাহেব
নেছারাবাদ উপজেলা সংবাদদাতা : আমীরে হিযবুল্লাহ, মুজাদ্দিদে জামান ছারছীনা শরীফের পীর ছাহেব আলহাজ মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ (মা.জি.আ) বলেছেন, প্রতিটি ঘরে ঘরে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার জন্য সকলকে বেশি বেশি নেক আমল করতে হবে। কারণ আমলী ব্যক্তি যখন মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত দেন, তখন সেই দাওয়াতে বেশি কাজ হয়। আর আমলহীন দাওয়াতের মধ্যে কোনো প্রাণ থাকে না। আর এ জন্য প্রয়োজন পীরের নির্দেশ মেনে এবং নিয়তকে ঠিক করে নিয়মিত আল্লাহর জিকির করা।
পীর ছাহেব কেবলা আরো বলেন, পীরের কাছে আপনারা এসেছেন আল্লাহকে পাওয়ার জন্য, পীরকে নয়। তাই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পীরের প্রতিটি নির্দেশ পালন করা মুরীদের জন্য একান্ত কর্তব্য। পাশাপাশি সুন্নাতের আমল করাও অতীব প্রয়োজন।
গতকাল ছারছীনা দরবার শরীফের ১২৭তম বার্ষিক ঈছালে ছওয়াব ওয়াজ মাহফিলের শেষদিন বাদ জোহর আখেরি মোনাজাতপূর্ব আলোচনায় হযরত পীর ছাহেব কেবলা এ কথা বলেন।
হযরত পীর ছাহেব কেবলার বড় ছাহেবজাদা আলহাজ শাহ্ আবু নছর নেছারুদ্দিন আহমদ হুসাইন বলেন, ছারছীনা দরবার দলীয় রাজনীতিমুক্ত একটি হক্কানি দরবার। এ দরবার মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দরবার। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এ দরবারেই মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মরহুম পীর ছাহেব আল্লামা শাহ্ সূফি আবু জাফর মোহাম্মদ ছালেহ (রহ:) সর্বপ্রথম নিজ থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের জন্য পাঁচ হাজার টাকা দান করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যখন মাদরাসাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশেই এ মাদরাসা খুলে দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে মরহুম পীর আল্লামা শাহ্ সূফি আবু জাফর মোহাম্মদ ছালেহ (রহ:) এর সাথে খুবই নিবিড় সম্পর্ক ছিল।
ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, আমরা ভালো মানুষ হবো। কিন্তু ভালো মানুষ হতে হলে আল্লাহওয়ালাদের ছোহবতে আসতে হবে। যারা আল্লাহওয়ালা তারা আল্লাহর রহমতে জীবন পরিচালনা করে। তাদের কেউ ক্ষতি সাধন করতে পারবে না। যে ক্ষতি করতে চাইবে সেই ধ্বংস হবে। ছারছীনা দরবার একটি আদর্শবাদী হক্ব দরবার। এখানে আসলে মানুষ আল্লাহওয়ালা হওয়ার সঠিক দীক্ষা পেয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রæপের চেয়ারম্যান আলহাজ সালমান এফ রহমান বলেন, সারাবিশ্বে এখন ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হচ্ছে। এর পেছনে নামধারী মুসলমানরাই মূখ্য ভ‚মিকা পালন করছে। ইসলামের সাইনবোর্ড লাগিয়ে ধর্মের অপব্যাখ্যা করে তারা মুসলমান হয়ে মুসলমানের বিরুব্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়ে দিচ্ছে। এসব অসৎ গুণাবলি থেকে আত্মসংশোধনের মাধ্যমে খাঁটি মুসলমান হওয়ার জন্য ছারছীনার ন্যায় হক্কানি পীর-মাশায়েখদের ছোহবতে আসতে হবে।
তিন দিনব্যাপী মাহফিলে আরো অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, ছারছীনা আলিয়া মাদরাসার গভর্নিং বডির ভাইস চেয়ারম্যান ও আমিন মোহাম্মদ গ্রæপের চেয়ারম্যান আলহাজ এম এম এনামুল হক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আফজাল হোসাইন, পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ এ কে এম আউয়াল, ঝালকাঠির সংসদ সদস্য ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আলহাজ বজলুল হক হারুন, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার আলহাজ মো. গাউস, বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আবুল কালাম আজাদ, পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম শেখ, পুলিশ সুপার মো. ওয়ালিদ, নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সায়ীদ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান লাভলু আহমেদ, স্বরূপকাঠী পৌর মেয়র গোলাম কবির প্রমুখ।
পরিশেষে হযরত পীর ছাহেব কেবলা মিলাদ-ক্বিয়াম শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সার্বিক কল্যাণ কামনা করে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লির আমীন আমীন ধ্বনীতে আকাশ-বাতাস মুখরীত হয়ে যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।