পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
খোদাভীরু ও চরিত্রবান মানুষ তৈরি করাই তরীকা চর্চার মূল উদ্দেশ্য। ছারছীনা দরবার শরীফের ১৩২তম বার্ষিক ঈছালে ছাওয়াব মাহফিলের দ্বিতীয় দিন গত মঙ্গলবার বাদ মাগরিব জিকির ও তা’লীমের পর ভাষণে ছারছীনা শরীফের পীর ছাহেব আলহাজ হযরত মাওলানা শাহ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ (মা.জি.আ.) একথা বলেন।
তিনি বলেন - ছারছীনা দরবার শরীফ একটি আধ্যাত্মিক দরবার। এখানে এসে যারা বাইয়াত গ্রহণ করেন, তারা মূলত: আমলী ইছলাহ ও তরীকা মশকের মাধ্যমে মহান আল্লাহর পেয়ারা বান্দা হওয়ার জন্যই বাইয়াত গ্রহণ করে থাকেন। নিয়মিত তরীকা মশকের মাধ্যমে একজন বান্দা প্রকৃতপক্ষে কামিল মু’মিনে রূপান্তরিত হন। তার অন্তরাত্মার কু-রিপুগুলো দূরীভূত হয়ে তদস্থলে সে আখলাকে হাসানার গুনাবলীতে ভূষিত হয়ে থাকে। তাইতো রসূলে আকরাম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন- ‘আমি প্রেরিত হয়েছি উত্তম চরিত্রকে পূর্ণতা প্রদানের উদ্দেশে’। বলাবাহুল্য দরবারে নববীতে বসে সাহাবায়ে কেরাম একান্তভাবে এ চারিত্রিক উৎকর্ষতাই অর্জন করতেন। তাই বর্তমান সময়ে হক্কানী পীরের সোহবত এখতিয়ার করে নবীওয়ালা ও সাহাবীওয়ালা চরিত্র অর্জনের কোশেশ করা হয়ে থাকে।
হযরত পীর ছাহেব বইয়াত গ্রহণের পর মুরীদ হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদেরকে চিশতিয়া তরীকার প্রথম সবক প্রদান করেন। তিনি বলেন, যারা মুরীদ হলেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জুমার নামাজ জামায়াতের সাথে আদায় করবেন। নেসফে সাক গোল জামা পরবেন। মাথায় টুপি ও পাগড়ী পরিধান করবেন। দাড়ি ছাটবেন না, কাটবেন না। বিড়ি-সিগারেট পান করবেন না। হালাল খানা খাবেন, হারাম থেকে পরহেজ করবেন। ঘরে বাইরে পর্দা করবেন। নিয়মিত ওজীফা পালন করবেন।
গত মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিবসে মাহফিলে আগত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ছিলেন- বরিশাল বিভাগীয় ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার, পিরোজপুর জেলার পুলিশ সুপার, স্বরূপকাঠী পৌর সভার মেয়র ও বাংলাদেশ জমিয়াতুল মুদার্রেসীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী।
বাংলাদেশের মাদরাসা শিক্ষকদের একক সংগঠন জমিয়াতুল মুদার্রেছীনের মহাসচিব বলেন- ছারছীনা শরীফের পীর ছাহেব জমিয়াতুল মুদার্রেসীনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। জমিয়তের সাবেক সভাপতি সাবেক মন্ত্রী মরহুম মাওলানা এম. এ. মান্নানের সময়ে ছারছীনার মরহুম পীর ছাহেব হযরত মাওলানা শাহ্ আবু জা’ফর মোহাম্মাদ ছালেহ (রহ.) জমিয়তের ঘোর দুর্দিনে শক্ত হাতে জামিয়তুল মুদার্রেছীনকে রক্ষা করেছিলেন। বিগত জোট সরকারের সময়ে যখন জমিয়তের অস্তিত্ব সঙ্কট ঘণীভূত হয়েছিল তখন ছারছীনা শরীফের বর্তমান হযরত পীর ছাহেবের নির্দেশে আমরা ঐক্যবদ্ধ থেকেছি। এখনো আমরা হযরত পীর ছাহেবের রূহানী দোয়া নিয়ে সম্মুখ পানে এগিয়ে চলেছি। তিনি বলেন, ছারছীনা দরবার শরীফ আলেম-ওলামার দরবার, হক্কানী পীর-মাশায়েখের দরবার, সুন্নাত তরীকা আমলের দরবার, মাদরাসা শিক্ষাকে প্রসারতা দানকারী দরবার। ছারছীনা দরবার শরীফের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় প্রায় সাড়ে চার হাজার আলিয়া নেসাবের মাদরসা কায়েম হয়েছিল। তিনি দীন প্রচারের ক্ষেত্রে ছারছীনার পীর ছাহেবদের অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
মাহফিলের দ্বিতীয় দিবসে ওয়াজ ও বক্তৃতায় অংশ গ্রহণ করেন- বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর নাযেমে আ’লা অধ্যক্ষ ড. মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ শরাফত আলী, ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা মো. রূহুল আমিন ছালেহী, শাইখুল হাদিস মাওলানা মো. আব্দুল গফ্ফার কাসেমী, মুফতী মাওলানা মো. হায়দার হুসাইন, বাংলাদেশ যুব হিযবুল্লাহর কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা কাজী মোঃ মফিজ উদ্দীন।
আজ মাহফিলের শেষ দিন। বাদ জোহর দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সার্বিক কল্যাণ ও শান্তি কামনা করে হযরত পীর ছাহেব কেবলা আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।