পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আমীরে হিযবুল্লাহ ছারছীনা শরীফের পীর ছাহেব আলহাজ¦ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ (মা.জি.আ.) বলেছেন- আপনারা সরল সঠিক পথ তথা সিরাতুল মুস্তাকীমের সন্ধানে ছারছীনা দরবার শরীফের বার্ষিক মাহফিলে ছুটে এসেছেন। আজ থেকে ১৩২ বছর পূর্বে অত্র দরবার শরীফ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কুত্বুল আলম শাহ্সূফী হযরত মাওলানা নেছার উদ্দীন আহমদ (রহ.)। ১৯৫২ খ্রি. সনে তাঁর এন্তেকালের পর এ দরবার শরীফের হাল ধরেন মরহুম ওয়ালেদ ছাহেব কেবলা- তদীয় জানেসীন মুজাদ্দেদে যামান হযরত মাওলানা শাহ্ আবু জা’ফর মোহাম্মাদ ছালেহ (রহ.)। তিনিও ১৯৯০খ্রি. সনে আমাদিগকে ইয়াতীম করে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। মরহুম পীর ছাহেব কেবলাদ্বয় যেমনি ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ ওলীয়ে কামেল তেমনি তাঁরা ছিলেন কুরআন হাদিসে পারদর্শী আলেমকুল শিরমনি। যেকারণে আল্লাহ পাকের অশেষ মেহেরবানীতে শত বছর পেরিয়ে গেলেও এ দরবারে কোন বিদআতের অনুপ্রবেশ ঘটেনি। দোয়া করুন, আল্লাহ পাক যেন অত্র দরবার শরীফকে বিশ্ব মুসলিমের সহীহ দিক-নির্দেশনার জন্য কিয়ামত পর্যন্ত বিদআত মুক্তভাবে কায়েম রাখেন। যদি কখনো অত্র দরবার শরীফ বিদআতের খপ্পড়ে পড়ে তখন এ দরবারের অস্তিত্ব না থাকাই শ্রেয় হবে। মনে রাখবেন সূচনাকাল হতেই অত্র দরবার শরীফ আহলুস্ সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের ধারক বাহক হিসেবে সর্বমহলে সমাদ্রিত হয়ে আসছে। এখনও সে ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে। অত্র দরবার শরীফ আল্লাহ্, রাসূল, ফেরেশতা, সাহাবায়ে কেরাম এবং ওলী-আউলিয়া সম্মন্ধে কুরআন ও হাদিসের নিরীখে সঠিক আকীদা পোষণ করে থাকে। ফিক্হী ক্ষেত্রে হানাফী মাযহাবের অনুসরণ করে এবং তাযকিয়া ও তাসাউফের ক্ষেত্রে প্রশিদ্ধ চার তরীকা যথা- চিশতিয়া, কাদেরিয়া, নকশেবন্দীয়া ও মুজাদ্দেদিয়া তরীকার প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। আমলের ক্ষেত্রে অত্র দরবার শরীফ সম্পূর্ণ রূপে সুন্নাতে নববী পরিপূর্ণ অনুসরণের উপর প্রতিষ্ঠিত।
এছাড়াও হযরত পীর ছাহেব কেবলা বাদ ফজর ও বাদ মাগরিব জিকির-আজকার, তওবা-ইস্তেগফার, তা’লীম- তালকীন প্রদানের পর দীর্ঘক্ষণ যাবত সহীহ আকীদা পোষণ ও সুন্নাত তরীকা মোতাবেক আমলের ওপর গুরুত্বারোপ করে নসীহত করেন। তিনি বলেন- হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জন্য অনুরকরণীয় আদর্শ। আল্লাহপাক তাঁকে ‘খুলুকে আজীম’ তথা মহান চারিত্রিক গুনাবলীতে ভ‚ষিত করে প্রেরণ করেছিলেন। কুরআন হাদিস ও ফিকাহ্ শাস্ত্র অনুসন্ধান করলে জীবনের সর্বক্ষেত্রে সুন্নাতী আমলের দিক নির্দেশনা পাওয়া যায়। এ প্রসঙ্গে তিনি ছারছীনার মরহুম পীর ছাহেব কেবলাদ্বয়ের ইত্তেবায়ে সুন্নাতের নমূনা তুলে ধরেন। তিনি আরো বলেন- ইখতেলাফী মাসায়েলে দীর্ঘ অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে যে, ছারছীনার মরহুম পীর ছাহেব কেবলাদ্বয়ের অনুসৃত মসলকই সর্বোত্তম। তাই আল্লাহর অশেষ শুকরিয়া যে, আল্লাহ পাক আমাদিগকে পাক ভারত উপমহাদেশের সর্বোত্তম ছেলছেলার অনুসারী হবার তাওফীক দিয়েছেন। তিনি সমবেত জনতাকে হাত তুলে সুন্নাত তরীকা মোতাবেক আমল করার অঙ্গীকার গ্রহণ করেন।
গতকাল রবিবার বাদ মাগরিব মাহফিলের ২য় দিন তা’লীম পরবর্তী নসীহতে হযরত পীর ছাহেব কেবলা একথা বলেন। দিন ও রাতব্যাপী এ মাহফিলে ওয়াজ-বক্তৃতায় অংশগ্রহণ করেন- হযরত পীর ছাহেব কেবলার বড় ছাহেবজাদা ছারছীনা দারুস্সুন্নাত জামেয়ায়ে নেছারিয়া দীনিয়ার রঈস ও বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর সিনিয়র নায়েবে আমীর হযরত মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছার উদ্দিন আহমদ হুসাইন, মাওলানা মো. রূহুল আমীন ছালেহী, মাওলানা মোঃ আবদুল গফফার কাসেমী, ড. মাওলানা সৈয়দ মুহাঃ শরাফত আলী, মুফতী মাওলানা মো. হায়দার হুসাইন এবং হাফেজ মাওলানা মো. বোরহান উদ্দিন ছালেহী প্রমূখ।
আজ মাহফিলের শেষ দিন। এদিন বাদ জোহর তিনদিনব্যাপী মাহফিলের আখেরী মুনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে প্রায় দুই কিলোমিটার ব্যাপী মাহফিল ময়দানে কানায় কানায় পূর্ণ। মুনাজাতে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সার্বিক কল্যাণ কামনা করে হযরত পীর ছাহেব কেবলা আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।