পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহ, ইউনাইটেড ঢাকার উদ্যোগে বনানীস্থ খানকায়ে নেছারিয়া ছালেহিয়ায় গতকাল আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীরে হিযবুল্লাহ্ ছারছীনা দরবারের পীর ছাহেব বলেন, রোজার মাধ্যমে বান্দার মধ্যে যে আত্মিক উৎকর্ষতা লাভ হয় এবং নৈতিক মনোবল সৃষ্টি হয়, তাকে কাজে লাগিয়ে একটি শান্তিময় ও নিরাপদ সুশীল সমাজ গঠন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, বান্দা যখন নিজ থেকেই আল্লাহকে ভয় করতে শেখে, আল্লাহকে হাজির-নাজির জ্ঞান করে, আল্লাহর নিকট জবাবদিহির প্রতি আস্থাবান হয় তখন তার দ্বারা অন্যায় অশ্লীল কাজ সংঘটিত হওয়া একেবারেই অসম্ভব বলতে হবে। কেননা হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখনকার জোর-জুলুম ও পেশী শক্তির দাপটের সেই জাহেলিয়াত যুগের অসভ্য অমানুষদের এই আত্মশুদ্ধির মন্ত্রেই উদ্বুদ্ধ করে সোনার মানুষে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
বর্তমান সমাজের নানাবিধ বিশৃঙ্খলা, বৈষম্য, নৈরাজ্য ও নৈতিক অবক্ষয়ের প্রসংগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাহে রমজানের শিক্ষা থেকে দীক্ষা নিয়ে আমরা কাঙ্খিত সাম্য, মৈত্রী ও শান্তিময় সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করতে পারি। হকদারের হক তার চাহিবার পূর্বেই পরিশোধ করতে হবে। শ্রমিকের ন্যায্য মুজুরী তার শরীরের ঘাম শুকানোর পূর্বেই প্রদান করতে হবে। কারো প্রতি কোন রূঢ় আচরণ করার পূর্বে তার স্থানে নিজেকে কল্পনা করে সে পরিস্থিতিতে নিজের মনোভাব বিশ্লেষণ করে অগ্রসর হতে হবে। নিজের প্রয়োজন সত্বেও অন্যের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেয়ার মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে। যুগ যুগ ধরে আউলিয়ায়ে কেরাম তরীক-তাছাউফ চর্চা এবং সুন্নাত তরীকা মোতাবেক বান্দার আমলী জিন্দেগী গঠনের মাধ্যমে এহেন সোনার মানুষ ও সমাজের সুনাগরিক গড়ার কাজই আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন।
হযরত পীর ছাহেব বড় সাহেবজাদা শাহ্ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমদ হুসাইন বলেন, সিয়ামের মূল উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া করা। আর তাকওয়ার ক্ষেত্রে যিনি যত উৎকর্ষতা লাভ করেন তিনি তত আল্লাহর নৈকট্যশীল বান্দা রুপে পরিগণিত হন। আল্লাহ পাক এরশাদ ফরমান ‘ইন্না আকরামাকুল ইনদাল্লাহি আতকাকুম’ তোমাদের মধ্যে অধিকতর খোদাভীরুগণই অধিক সম্মানের অধিকারী।
মুনাজাতের পূর্বে হযরত পীর ছাহেব উপস্থিত জনতাকে আমল ও আখলাকের প্রতি উৎসাহ দিয়ে বলেন, মাহে রমজানের প্রতিটি মূহূর্ত মু’মিন মুসলামানের জন্য অতি মূল্যবান। এ সময় নিজ নিজ সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, পারিবারিক ও পেশাগত দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করার পাশাপশি সিয়াম, কিয়াম, সাদাকাহ্, ইফতার, জিকির-আজকার, মুরাকাবা-মুশাহাদা ও ই’তেকাফের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি লাভের পথে অগ্রসর হতে হবে।
পীর মাশায়েখের প্রতি অনুরক্ত বিভিন্ন শ্রেণি পেশা যথা-রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সমাজ সেবক, পদস্থ আমলা, পেশাজীবী ও ঢাকাস্থ বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর নেতৃবৃন্দের সম্মানে প্রদত্ত হযরত পীর ছাহেব ইফতার মাহফিলে ইফতার পূর্ব বয়ানে সমবেত বিশিষ্ট নাগরিকদের উদ্দেশ্যে তিনি একথা বলেন।
এ সময়ে সকলের আমীন আমীন ধ্বনিতে এক অভূতপর্ব আবেগময় রহমতী পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তিনি দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা, উন্নতি-অগ্রগতি ও বিশ্ব মুসলিমের কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করেন।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ বি এইচ হারুন, সিলেট-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার, পিরোজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ডা. রুস্তুম আলী ফরাজি, এশিয়ান টিভির চেয়ারম্যান ও শিল্পপতি হারুনুর রশিদ, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আহসান উল্লাহ, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব আলহাজ প্রিন্সিপাল মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর ড. প্রিন্সিপাল মাওলানা মুফতী কাফিল উদ্দীন সরকার ছালেহী, পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপ মহাপরিচালক কাজী নূরুল ইসলাম, বনানী হোটেল রেইনট্রির পরিচালক মো. আদনান হারুন, দৈনিক ইনকিলাবের আইটি প্রধান সৈয়দ আহসানুর রহমান গালিব, ডিএনসিসির ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মফিজুল ইসলাম, পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের এআইজি মো. আমজাদ হোসাইন, শিল্পপতি আব্দুস সাত্তার ঢালী, অলংকার নিকেতন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হান্নান আজাদ, শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লায়ন মো. মুজিবুর রহমান, জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের যুগ্ম মহাসচিব ও দারুন্নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আ খ ম আবুবকর সিদ্দীক, জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, হযরত পীর ছাহেবের ছোট ছাহেবজাদা হাফেজ শাহ্ আবু বকর মোহাম্মদ ছালেহ নেছারুল্লাহ, পিএইচপি কুরআনের আলোর চেয়ারম্যান মাওলানা আবু ইউসুফ ও মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দীন, দারুন্নাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতী মাওলানা ওসমান গণী ছালেহী ও মুফতী মাওলানা বদরুজ্জামান রিয়াদ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।