গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
স্টাফ রিপোর্টার : লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভার ও ২০ বছরের বেশি পুরনো এবং মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এসময় সাতজন চালকের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দেয়া হয়েছে। ফিটনেস না থাকায় দু’টি বাস এবং একটি লেগুনা জব্ধ করে ডাম্পিং করা হয়েছে। এ ছাড়াও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি ও ড্রাইভারদের ৮৭ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা ও তাদের বিরুদ্ধে মোট ৭৫টি মামলা করা হয়েছে।
গতকাল রোববার রাজধানীর বঙ্গন্ধু এভিনিউ, দৈনিক বাংলা মোড় ও মতিঝিল এলাকা দিয়ে অভিযান শুরু করা হয়। ডিএসসিসি সূত্র জানিয়েছে, নগরীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ২০ বছরের বেশি পুরনো গাড়ির পাশাপাশি চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতাও যাচাই করা হয়।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নেতৃত্বে বিআরটিএ, ডিএমপি জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালন করে। অভিযানে বিআরটিএর পক্ষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আব্দুস সালাম, ডিএসসিসির মোহাম্মদ মামুন সরদার ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের সামনে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত-৩ এর কার্যক্রম মনিটরিংয়ের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, বিশ বছরের পুরনো কোনো গাড়ি রাস্তায় চলাচল করতে পারবে না। একই সঙ্গে লাইসেন্সবিহীন চালকদের গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের না হওয়ার নির্দেশও দেন তিনি। এসময় সুপ্রভাত স্পেশাল সার্ভিসের দু’টি বাসের চালকের লাইসেন্স না থাকায় তাদের দু’জনকে এক মাস করে কারাদ- দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কিশোর চালকসহ কয়েকটি লেগুনা আটক করেন।
মেয়র খোকন সাংবাদিকদের জানান, এ অভিযান পূর্বঘোষিত। এক মাস আগে আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম, আগামী মার্চ মাস থেকে ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় ২০ বছরের পুরনো গাড়ি চলতে দেয়া হবে না। যদি কেউ আইনভঙ্গ করে তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যেসব চালকের লাইসেন্স থাকবে না, শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকবে না, বিআরটিএ’র আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, ২০ বছরের পুরনো বাস এবং লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আজ (গতকাল রোববার) থেকে তা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো। যতক্ষণ পর্যন্ত ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন গাড়ি ও অদক্ষ চালদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হবে, ততক্ষণ এ অভিযান চলতেই থাকবে।
মেয়র আরো বলেন, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে এ অভিযান পারিচালনা করছি। অদক্ষ চালকদের কারণে কতো তাজা প্রাণ ঝরে পড়ছে। যেখানে-সেখানে পার্কিং করার কারণে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে জনগণের নির্বিঘœ চলাচল ও জীবনমান নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেব।
অদক্ষ চালক দিয়ে পরিবহন মালিকদের গাড়ি পরিচালনা না করার পরমর্শ দিয়ে মেয়র বলেন, আপনারা আইনের ব্যত্যয় না ঘটিয়ে আইন অনুযায়ী দক্ষ চালক দিয়ে গাড়ি পরিচালনা করুন। অদক্ষ চালক ও লাইসেন্সবিহীন চালক দিয়ে গাড়ি পরিচালনা করবেন না। এ ব্যাপারে কেউ যদি কোনো মন্তব্য করেন, তা একান্ত তার ব্যক্তিগত বিষয়। সে ক্ষেত্রে আইনের কোনো পরিবর্তন হবে না। আমরা বিআরটিএ’র প্রচলিত আইন অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করছি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাযক্রম চলাকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাহী কমকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী, সম্পত্তি কর্মকর্তা দেবাশীষ নাগ, ডিএমপি’র এডিসি আশরাফ উদ্দিন।
জানা যায়, ঢাকার ১৯৩টি রুটে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বাস-মিনিবাস চলাচল করে। এর মধ্যে অসংখ্য বাস চলাচলের অনুপযোগী। সে বাসগুলো আর রাজধানীতে চলতে পারবে না। বিআরটিএ সূত্র জানায়, কয়েক মাস ধরে বিআরটিএ এসব পুরনো বাসের ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয়া বন্ধ রেখেছে। এখন কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে ফিটনেস টেস্ট করা হয়। সে কারণে পুরনো বাসগুলোকে আর ফিটনেস দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ডিএসসিসিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ, বিআরটিএ ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা থেকে মেয়র সাঈদ খোকন ঘোষণা দেন, ২০ বছরের অধিক সময় ধরে ব্যবহৃত বাস রাজধানীতে আর চলতে দেয়া হবে না। পরে ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশীষ নাগকে প্রধান করে এ সংক্রান্ত একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়। এর সদস্য রাখা হয় তিন সংস্থার তিন কর্মকর্তাকে। আর প্রধান সমন্বয়ক করা হয়েছে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কামরুল ইসলামকে। আর এর ধারবাহিকতায় আজকের এ অভিযান। এদিকে ১৫ ফেব্রুয়ারি মেয়রের ঘোষণার পর বিষয়টি সম্পর্কে বাসমালিক-শ্রমিকরাও জেনেছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।