পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নকশা বহির্ভূত দোকান বরাদ্দের নামে ৩৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র সাঈদ খোকনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২ এর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমামের আদালত বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করেন। আজ (বুধবার) মামলার বিষয়ে আদেশে দানের তারিখ ধার্য রয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদার, সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মাজেদ, জনৈক কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান স্বপন এবং মো. ওয়ালিদ।
আর্জিতে বলা হয়, আসামি সাঈদ খোকন, ইউসুফ আলী সরদার ও মাজেদ পরস্পর যোগসাজশে ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২ এর মূলভবনের নকশাবহির্ভূত অংশে স্থাপনা নির্মাণ করে দোকান বরাদ্দের ঘোষণা দেন। এ ঘোষণায় আকৃষ্ট হয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দোকান বরাদ্দ নেয়ার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আসামি কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদের কাছে যান। তারা বলেন, ‘আপনার টাকা জমাদানের ব্যবস্থা করুন। আমরা আপনাদের দোকান বরাদ্দ দিয়ে দেবো।’ ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২ এর মূল মার্কেটে যাদের নামে দোকান বরাদ্দ রয়েছে তাদেরকে আসামি কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ভুল বুঝিয়ে এ মার্কেটে দোকান বরাদ্দ নিতে বাধ্য করেন। আসামি সাঈদ খোকন ও মাজেদসহ অন্যরা মিলে প্রতারণা করে ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন । ব্যবসায়ীদের নকশাবহির্ভূত দোকান বরাদ্দ দেন।
আর্জিতে উল্লেখ করা হয়, দোকান বরাদ্দের অনৈতিক আইনবহির্ভূত বিষয় জেনে মামলার বাদী দেলোয়ার হোসেন দেলু আসামিদের দোকান বরাদ্দের প্রক্রিয়া বন্ধ এবং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে কোটি কোটি টাকা লেনদেনে বাধা প্রদান করেন। এরপর আসামিরা দেলোয়ারকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দেন। ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট আসামি ইউসুফ আলী সরদার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ বাদী দেলোয়ারকে বনানীতে ডেকে বলেন, ‘তুই ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২-এর এক্সটেনশন বøক- এ, বি, সি’র দোকান বরাদ্দের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করার প্রক্রিয়া বন্ধ কর, নইলে খুব খারাপ হবে।’ তবে তিনি নিজের ও পরিবারের কথা চিন্তা করে তাদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে সাহস পাননি। আসামি সাঈদ খোকন, ইউসুফ আলী সরদার ও মাজেদের নির্দেশে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে আসামি কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ দোকান বরাদ্দের কথা বলে বিনা রশিদে কোটি কোটি টাকা গ্রহণ করেন।
সাধারণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিনা রশিদে বা কোনো প্রকার ডকুমেন্টস ব্যতীত আসামিদের নিকট বরাদ্দের বিষয়ে টাকা জমা দিয়ে প্রতারণার ভয়ে ভীত হয়ে মামলার বাদী দেলোয়ারের নিকট পরামর্শের জন্য আসলে তিনি তাদের বলেন, যেহেতু আপনারা অনেকগুলো টাকা ইতোমধ্যেই বিনা রশিদে নগদ প্রদান করেছেন, ভবিষ্যতেও টাকা জমা দেবেন, সেহেতু আইনগত প্রমাণ রাখার জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বৃহৎ স্বার্থের কথা চিন্তা করে ব্যবসায়ীদের অনুরোধে তার প্রতিষ্ঠানের নামে ফুলবাড়িয়া উত্তরা ব্যাংক লিমিটেডের অ্যাকাউন্টে টাকা জমার সিদ্ধান্ত নেন। পরে ভুক্তভোগীরা আসামি সাঈদ খোকনের অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন সময় ৩৪ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ টাকা জমা দেন।
বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপসের এখতিয়ারাধীন এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২-এর এক্সটেনশন ব্লক এ, বি, সি’র স্থাপনা ভেঙে উচ্ছেদ অভিযান চালান। এ উচ্ছেদের বিষয়ে বাদী দেলোয়ারসহ অপর ব্যবসায়ীরা জানতে পারেন যে, সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনসহ অন্য আসামিরা ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২-এর এক্সটেনশন ব্লক এ, বি, সি’র মূল ভবনের নকশাবহির্ভূত এবং অবৈধ উপায়ে অনৈতিকভাবে অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য প্রতারণা করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করেন।
আসামিরা অবৈধভাবে অনৈতিক উপায়ে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি করেন। অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন করায় দন্ডবিধি ১৮৬০ সালের ৩৪/১০৯/১২০(খ)/৪০৬/৪১৭/৪৬৮/৪৭৭(ক) এবং ৫০৬ বিধান লঙ্ঘন করায় বাদী আদালতে এসে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) সূত্র জানায়, সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন এই মার্কেটটিতে তিনটি ব্লকে নকশাবহিভর্‚ত অন্তত ৯১১টি দোকান ছিল। গত ৮ ডিসেম্বর এক অভিযানে এসব দোকান উচ্ছেদ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ওইদিন কয়েক দফা সংঘর্ষের পর ৩শ’ দোকানের উচ্ছেদ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ওইদিন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, নকশাবহিভূত এসব দোকান ‘বৈধ’ করতে সাঈদ খোকনকে তারা কয়েক কোটি টাকা দিয়েছেন। ডিএসসিসি এতোদিন দোকানগুলোর ভাড়াও উত্তোলন করেছে। দোকান মালিক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু অন্ততঃ ২ যুগ ধরে ফুলবাড়িয়ায় অবস্থিত দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩টি মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করছেন। তার নেতৃত্বেই এসব অবৈধ দোকান নির্মিত হয়েছিল। সেই দেলুই এবার বাদী হয়ে দোকান বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সাঈদ খোকনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এদিকে মামলার পর এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, সবাই বলছেন বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস দেলোয়ার হোসেন দেলুকে দিয়ে এসব নোংরামি করাচ্ছেন। এতে তার ও দলের ইমেজ ক্ষুন্ন হচ্ছে। সাঈদ খোকনের ব্যক্তিগত জনসংযোগ কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম সুমনের স্বাক্ষরে এ বিজ্ঞপ্তি সংবাদমাধ্যমে পাঠানো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।