Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ধর্মঘটের পক্ষে সাফাই গাইলেন নৌমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দেশে চলমান পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে চালকদের পক্ষে সাফাই গাইলেন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। তিনি বলেছেন, সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করতেই পারেন। এটাকে ধর্মঘট নয় ‘স্বেচ্ছায় অবসর’ বলা যেতে পারে। সমাধান হবে, তবে সময় লাগবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাসচালক নেতারা কোনো নির্দেশনা মানতে চাইছেন না।
সারা দেশে পরিবহন শ্রমিকদের হঠাৎ করেই ডাকা ধর্মঘটের বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। একই সাথে তিনি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি।
মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ, সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেন আদালত। এর প্রতিবাদে গত রোববার থেকে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেন শ্রমিকেরা। এরপর ঢাকার সাভারে ট্রাকচাপা দিয়ে এক নারীকে হত্যার দায়ে গতকাল সোমবার এক চালকের মৃত্যুদন্ডাদেশ দেন আদালত। এরই প্রতিবাদে আজ থেকে পরিবহন শ্রমিকেরা ধর্মঘটের ডাক দেন। এতে দুর্ভোগে পড়েন পথচারীরা।
চালকদের পক্ষে সাফাই গেয়ে নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেন, চালকেরা মনে করেছেন, তারা মৃত্যুদন্ডাদেশ বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশের মতো রায় মাথায় নিয়ে গাড়ি চালাবেন না। তাই তারা স্বেচ্ছায় গাড়ি চালাচ্ছেন না। এটাকে ধর্মঘট নয় ‘স্বেচ্ছায় অবসর’ বলা যেতে পারে।
যাত্রীদের গত দুই দিনের দুর্ভোগের পর যান চলাচল যখন প্রায় স্বাভাবিক হওয়ার পথে, তখন কেন আজকের ধর্মঘট, জানতে চাইলে শাজাহান খান বলেন, কোনো ঘোষণা দিয়ে এ কর্মসূচি দেয়া হয়নি। ক্ষুব্ধ চালকেরা জেলজুলুম মাথায় নিয়ে কাজ করতে চান না। সবকিছু এবং সবাইকে আইন বা নিয়মকানুনের মধ্যে থাকা উচিত। মন্ত্রী অন্য সংগঠনের কর্মবিরতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, সাংবাদিকদের পুলিশ পেটালে কলম-খাতা রাস্তায় ফেলে বসে থাকেন, বিষয়টি এ রকমই।
পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে সম্প্রীতি রয়েছে মন্তব্য করে নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেন, আপনাকে যদি আপনার মালিক অবিচার করেন, তবে তো আপনি চাকরি ছেড়ে দিতেই পারেন। তারা একজোট হয়ে গাড়ি না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের মধ্যে সম্প্রীতি রয়েছে।
শাজাহান খান বলেন, দুনিয়ার কোথাও দুর্ঘটনার জন্য ফাঁসি বা যাবজ্জীবন দেয়ার আইন বা বিধান নেই। আমি মনে করি, চালকদের তিন বছর শাস্তি হওয়া উচিত। সারা পৃথিবীতে এসব অপরাধের জন্য বেশি হলে পাঁচ থেকে সাত বছরের শাস্তি হয়। খুন করা হলে ৩০২ ধারার মামলা করতেই পারে। কিন্তু ফাঁসি দিয়ে বা যাবজ্জীবন দিয়ে খুন বন্ধ করা যায় না। এ ধারণাটি তৈরি করছেন বুদ্ধিজীবীরা। একজন মন্ত্রীর সন্তান গাড়ি চালানোর সময় দুর্ঘটনায় পড়ে মারা গেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, একটি কুকুরকে বাঁচাতে ওই চালক (মন্ত্রীর ছেলে) মারা গিয়েছিলেন। তাহলে কি কুকুরের বিচার হতে হবে?
মন্ত্রী আবারও বলেন, আমি মনে করি, তিন বছরের বেশি শাস্তি হওয়া উচিত নয়। দুনিয়ার কোথাও মৃত্যুদন্ড নেই। বেশি হলে পাঁচ থেকে সাত বছরের শাস্তি হয়। অবশ্যই আপনি চালকদের সাবধান করতে পারেন। উত্তেজিত নয়। বিচার অবশ্যই হতে হবে। কিন্তু নিয়মকানুন মেনে হতে হবে।
সমাধান কিভাবে হবে, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সমাধান হবে, সময় লাগবে। এ পরিস্থিতিতে চালকেরা কোনো নির্দেশনা মানতে চাইছেন না। এ রায়ের ব্যাপারে আমরা অবশ্যই আপিল করব।
বাংলাদেশে বর্তমানে দুর্ঘটনা কমেছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ২০১১ সালের চেয়ে ২০১৪ দুর্ঘটনা কমেছে। ২০১৪ সালে ভারতে ২০ দশমিক ৭ শতাংশ, পাকিস্তানে ২০ শতাংশ। আর সেখানে বাংলাদেশে রেট হলো ১২ দশমিক ৮। সে ক্ষেত্রে দেখা যায় দুর্ঘটনা কমেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্মঘট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ