Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে আবাসন শিল্প

| প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আইয়ুব আলী : চট্টগ্রামে স্থবিরতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে আবাসন শিল্প। বিগত তিন থেকে চার বছরের স্থবিরতা কাটিয়ে উঠার পর আবাসন ব্যবসায়ীরা এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। বিশেষ করে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ব্যাংক লোন, এফডিআর-এর সুদের হার হ্রাস এবং বহু প্রতীক্ষিত প্রবাসীদের জন্য ব্যাংক লোন প্রদানের সরকারি সিদ্ধান্তের কারণে এ খাতে আশার আলোর সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ পুনরায় এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। সরকার ইতোমধ্যে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৫ শতাংশ সুদে ব্যাংক ঋণ দেয়ার ঘোষণায় খুব শীঘ্রই এ খাত আরও গতিশীল হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর ফলে আবাসন ব্যবসার পাশাপাশি আবাসন খাতের সাথে সম্পর্কিত প্রায় দুই শতাধিক লিংকেজ শিল্পের বিকাশ ঘটবে। দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।
রিহ্যাব ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল কৈয়ূম চৌধুরী বলেন, ৫ শতাংশ সুদে ব্যাংক ঋণ পাওয়ায় ব্যাংকাররা ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ব্যাংকাররা এখন ফ্ল্যাটের অন্যতম গ্রাহক উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা এখন ফ্ল্যাট কেনার জন্য ৭০ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ পাচ্ছেন। কৈয়ূম চৌধুরী বলেন, বর্তমানে এ শিল্পে বিনিয়োগে মানুষ আগ্রহী হওয়ায় জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে প্রায় ১৪ শতাংশ ভূমিকা রাখা এ খাত আবার চলমান হয়ে উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে সরকারের সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং সরাসরি সহযোগিতা পেলে এ শিল্প আরও মানুষের জন্য মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত না করে কোনো দিনই এ দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর করা সম্ভব নয়। তাই গৃহায়ন শিল্পকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া জরুরি।
রিহ্যাব ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, আগামী জুনে ঘোষিত হবে জাতীয় বাজেট। ইতোমধ্যেই রিহ্যাবের পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ৫ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ সুদে দীর্ঘমেয়াদি ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল, রেজিস্ট্রেশন ব্যয়, ট্যাক্স ও ভ্যাট হ্রাসের দাবি জানানো হয়েছে। একই সাথে ভবন নির্মাণকালীন বিদ্যুতের রেট শিল্প রেটে নির্ধারণ করা এবং এলপি গ্যাস সিলিন্ডার সহজলভ্য না হওয়া পর্যন্ত নির্মাণাধীন প্রকল্পসমূহে পাইপ লাইনের গ্যাস নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
সরকার মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা আবাসনের কথা মাথায় রেখে ব্যক্তি পর্যায়ে প্লট বরাদ্দ না দিয়ে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সংগঠন রিহ্যাব সদস্যদের মাধ্যমে ফ্ল্যাট তৈরি করলে সাশ্রয়ী মূল্যে সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করা সম্ভব। অন্যদিকে সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও ইউটিলিটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের সহযোগিতা নিশ্চিত করা গেলে আবাসন খাত আরও সমৃদ্ধ হবে। মানুষের মৌলিক চাহিদা বাসস্থান পূরণের পাশাপাশি শিল্প-কারখানা ও দেশের অর্থনীতির সমৃদ্ধি ঘটবে। দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদা বাসস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে রিহ্যাব দৃঢ় প্রত্যয়ী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আবাসন খাতে সরকারের সহযোগিতা অতীব জরুরি।
রাজধানী ঢাকার পর দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিগণিত হয়েছে এ বন্দরনগরী। শহরমুখী মানুষেরা জীবন ও জীবিকার তাগিদে ভিড় করছে বন্দরনগরীতে। রাজধানী ঢাকার পর দিনে দিনে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। শুধু বাণিজ্যিক রাজধানী নয়, প্রকৃতির অপার লীলাভূমি চট্টগ্রামে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনাও বাড়ছে দিন দিন। চট্টগ্রামবাসীর আবাসনের পাশাপাশি পর্যটকদের জন্যও নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত করা প্রয়োজন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যবেষ্টিত চট্টগ্রামে সবুজ নিরাপদ পরিকল্পিত পরিবেশ বান্ধব আবাসন গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম

৩০ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ