বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিশেষ সংবাদদাতা, খুলনা : অবশেষ খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. শেখ নূরুল হকের নির্মিত দেয়াল ভেঙে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসানের নির্দেশে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফকরুল হাসানের নেতৃত্বে স্থানীয় থানা পুলিশ এ অভিযান চালায়। এতে দীর্ঘদিন যাবত গৃহবন্দি আওয়ামী লীগ কর্মী আঃ আজিজ পরিবারের যাতায়াতের পথ ফিরে পেলো। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও টেলিভিশনে সংবাদ প্রকাশ-প্রচারের জের ধরে এ পরিবারটি স্থানীয় সংসদ সদস্যের রোষানল থেকে মুক্তি পেল।
পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফকরুল হাসান জানান, মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের জেরধরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে দেয়াল ভেঙে পরিবারটির যাতায়াতের পথ করে দেয়া হয়েছে। সম্পত্তি নিয়ে কোন বিরোধ থাকলে সেটা আদালত আইনানুগভাবে ফয়সালা করবে। তবে মানবিক বিবেচনায় কারো যাতায়াতের পথ রুদ্ধ করা আইনত দন্ডনীয়। তাই প্রাচীরের কিছু অংশ ভেঙে পরিবারটিকে মানবেতর জীবনযাপন থেকে রেহাই দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন জেলা প্রশাসন।
জেলার পাইকগাছা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আজিজ গোলদারের দাবি, ‘খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. শেখ নুরুল হকের নির্দেশ এবং তার পোষ্যদের ভয়ে প্রায় এক বছর গৃহবন্দি ছিল তার পরিবার। প্রভাবশালীদের ভয়ে তার পরিবারের সদস্যরা ৩ মাস আগেও বাড়ির বাইরে বের হতো না। সম্প্রতি বাইরে বের হলেও সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকেন তারা। জেলখানার মতো উঁচু দেয়ালে মই লাগিয়ে ও পাচিলের নিচে মাটির সুড়ঙ্গ কেটে যাতায়াত করেন ছোট-বড়, নারী-পুরুষ সবাই।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ৩৩ শতক জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দেয় স্থানীয় এমপি নুরুল হক ও আজিজ গোলদারের মধ্যে। এরই জের ধরে ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি রাতারাতি আজিজের জমিসহ পার্শ্ববর্তী প্রায় দুই বিঘা জমির চারপাশে জেলখানার মতো উঁচু প্রাচীর তুলে দেয় এমপি নুরুল হকের লোকজন। ঘটনার দিন সারাক্ষণ এমপি নিজে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। রাতে খাসি জবাই করে রান্নার পর খেতে দেন তার পোষ্য লোকজন ও রাজমিস্ত্রি কাজের লোকদের। এরপর থেকে সেখানেই নীরবে নিভৃতে বন্দিদশায় বসবাস করছেন আজিজ পরিবারের সদস্যরা।
আওয়ামী লীগ নেতা আঃ আজিজ জানান, ১৯৪৬ সালে তার দাদি পাগলী বিবি স্থানীয় সতীষলাল রজত, মতিলাল রজত ও নিবারণ রজতের কাছ থেকে ৬৬ শতক জমি কেনেন। ত্রিশ বছর আজিজ গোলদার বাড়ি-ঘর তৈরি করে বসবাস করছেন। হঠাৎ ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি স্থানীয় এমপি নুরুল হক লোকজন নিয়ে সেই জমি থেকে আজিজ গোলদার ও তার পরিবারকে চলে যেতে বলেন। কারণ জানতে চাইলে এমপি নুরুল হক বলেন, ওই জমি তিনি কিনেছেন। জমিটি আবদুল আজিজের পরিবারের বলে দাবি করলেও এমপি নুরুল হকের লোকজন তার পরিবারের ওপর চড়াও হয়।
এ ব্যাপারে খুলনা-৬ আসনের (কয়রা-পাইকগাছা) সংসদ সদস্য এ্যাড. শেখ মোঃ নুরুল হক বলেন, সরল গ্রামের আজু গোলদার দীর্ঘদিন একই গ্রামের অজিৎ হালদার ও ঠাকুর দাশ হালদারের ৫০ শতাংশ জমি দখল করেছিল। হিন্দুরা জমিটি উদ্ধার করতে না পেরে আমাকে জানায়। আমি সেখানে একটি মন্দির করে দেয়ার প্রতিশ্রæতি দিই। সেই আলোকেই অবৈধ দখলদার আবদুল আজিজের জমিসহ হিন্দুদের জমিতে প্রাচীর দিয়েছি। আমরা কারও জমি দখল করিনি বরং দখলমুক্ত করার চেষ্টা করেছি।
অন্যদিকে, খুলনায় প্রতিবেশী এক পরিবারকে দেয়াল দেয়া এমপিকে ঢাকায় দলের অফিসে তলব করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ওই এমপিকে ঢাকায় পার্টি অফিসে তলব করেছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আমি ওই দেয়াল ভেঙে ফেলতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি, রাতেই বেশিরভাগ অংশ ভাঙা হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় হাইকোর্টের সামনের সড়কে কদমফোয়ারা এলাকায় বিআরটিএ’র অভিযান পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।