গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
স্টাফ রিপোর্টার : গোশত ব্যবসায়ীদের চারদফা দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছে সরকার। একই সঙ্গে সরকার গাবতলীতে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গতকাল রোববার দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুন্সী সফিউল হকের সঙ্গে গোশত ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। সরকারের এ আশ্বাসের ভিত্তিতে গোশত ব্যবসায়ীরা গতকাল রোববার বিকেল থেকে ধর্মঘট আপাদত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এরপর তারা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সাথে পূর্বনির্ধারিত বৈঠকে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলতে গেলে মেয়র তাদেরকে সময় দেননি। যে কারণে তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার না করে আবারও স্থগিত ঘোষনা করেছেন।
গতকাল বিকেলে গোশত ব্যবসায়ীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের সাথে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও মেয়র তাদের সাথে বৈঠকে বসেননি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ গোশত ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া নিয়ে যেহেতু আমরা মেয়রের সাথে বৈঠকে বসতে পারিনি, সেহেতু আমরা চলমান ধর্মঘট পুরোপুরি প্রত্যাহার করলাম না। আপাতত স্থগিত ঘোষণা করেছি। পরবর্তীতে নগরবাসীর প্রয়োজনীয়তা মোতাবেক ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করে আমাদের করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
তিনি বলেন, নগর পিতা আমাদেরকে সময় দেননি। আমরা গোশতের দাম নির্ধারণসহ কোনো ইস্যুতেই মিমাংসায় পৌঁছতে পারিনি। তাই বর্তমানে যে যেভাবে গোশত বিক্রি করে পোষাতে পারবে সে সে দরে বিক্রি করবে। এতে আমাদের আর কিছু করার নেই।
রবিউল আলম জানান, ক্রেতাদের গলা কেটে টাকা আদায় করতে আমাদের ইচ্ছে করে না। কিন্তু হুন্ডি ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ ও ইজারাদারদের কারণে আমাদের তা করতে হচ্ছে।
তিনি জানান, ঢাকা উত্তর সিটি কপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা, গাবতলী গরুহাটের ইজারাদার ও সন্ত্রাসী কালা মইজ্জা বাহিনী ব্যবসায়ীদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। এই অবস্থা দূর করে গাবতীলতে শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে এবং সীমান্ত থেকে গাবতলী পর্যন্ত চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। তাহলে, ৩০০ টাকা কেজি দরে গরুর গোশত বিক্রি করা সম্ভব হবে।
এ সময় তিনি দাবি করেন, প্রতি বছর ভারত থেকে অবৈধভাবে গরু আনতে হাজার হাজার কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হচ্ছে। এই টাকার কমিশন দিয়ে গোশত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গরু প্রতি ছয় থেকে আট হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে।
এই অবস্থার অবসানের জন্য ভারত, নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমার থেকে বৈধপথে গরু আমদানি চালুরও উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে সাভার চামড়া পল্লীর বিষয়েও সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। রবিউল আলম জানান, কেবল চাঁদাবাজির কারণে গোশতের দাম কমানো যাচ্ছে না। ভারতে যেখানে ১৬০ টাকায় গরুর গোশত এবং ২৫০ টাকায় খাসির গোশত পাওয়া যায়, সেখানে বাংলাদেশে ৫০০ ও ৮০০ টাকায় গোশত বিক্রি করেও পুঁজি বাচানো যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীদের এসব দাবির সঙ্গে সরকার একমত বলে বৈঠকে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুন্সী সফিউল আলম।
তিনি বলেন, সরকার চায় জনগণ কম দামে তার পুষ্টি চাহিদা পূরণ করুক। এজন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতেরও উদ্যোগ নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। চার দফা দাবিতে সোমবার ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ দিনের ধর্মঘট ডাকেন বাংলাদেশ গোশত ব্যবসায়ী সমিতি।
ধর্মঘট শেষে গরুর গোশতের দাম বেড়েছে
টানা ছয় দিনের ধর্মঘট শেষে গতকাল রাজধানী ঢাকায় গরু-মহিষের গোশত বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে রাজধানীর ব্যবসায়ীরা আগের থেকে গতকাল অনেক বেশি দামে বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ ত্রেুতাদের। এছাড়া একেক বাজারে একেক দামে বিক্রি করা হয়েছে গোশত। ব্যবসায়ীরা বলছে, তাদের বেশি দামে গরু কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামেই গোশত বিত্রিæ করছে। যদি তাদের দেওয়া দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আগামী সপ্তাহ থেকে আরো দাম বাড়বে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধর্মঘটের আগে গরুর গোশত ৪৫০ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল রোববার ৫০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। কোন কোন বাজারে ৫৫০ টাকা করেও বিত্রিু হয়েছে গরুর গোশত। এদিকে ৪০০ টাকার মহিষের গোশত ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কোন কোন কাঁচাবাজারে গরুর গোশত বিক্রি হয়েছে কেজি ৪৪০ টাকা দরে। এছাড়া মহিষের গোশত প্রতি কেজি ৪০০ টাকা।
পলাশী বাজার, কাঁটাবন বাজার ছাড়াও বেশ কিছু বাজারে গোশতের দাম বেশি নেয়া হয়। অতিরিক্ত দামে গোশত বিক্রি করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। তবে ওই বাজারের গোশত ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশি দামে গরু কেনায় দাম বাড়াতে হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।