বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা : চলতি ইরি-বোরো মওসুমে বোরা আবাদ শেষ পর্যায়ে হলেও নেত্রকোনায় পল্লী বিদ্যুতের ব্যাপক লোড-শেডিং-এর কারণে জমিতে সেচের পানির অভাবে সদ্য রোপনকৃত ইরি জমি বিবর্ণ হয়ে নষ্ট হওয়ার পথে। চোখের সামনে পানির অভাবে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে রোপনকৃত চারা বিনষ্ট হতে দেখে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়ছে। তারা তাদের পরিশ্রমের ফসল রক্ষার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
ধান উদ্বৃত্ত জেলা হিসেবে খ্যাত নেত্রকোনায় এ বছর ১ লাখ ৮০ হাজার ১ শত ১ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এ পর্যন্ত ১ লাখ ৭৯ হাজার ৯শত হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো আবাদ করা হয়েছে। ইরি-বোরো মওসুমে ধানের চারা রোপন শেষ হতে না হতেই দেখা দিয়েছে তীব্র সেচ সংকট। পল্লী বিদ্যুতের অব্যাহত লোড-শেডিং-এর কারণে সঠিক সময়ে কৃষকরা জমিতে প্রয়োজনীয় সেচের পানি দিতে না পারায় অনেক জায়গায় জমি শুকিয়ে ফেঁটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। পানির অভাবে সদ্য রোপনকৃত চারাগুলো বিবর্ণ হয়ে ক্রমশ বিনষ্ট হয়ে পড়ছে। জেলার আটপাড়া, কেন্দুয়া, বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ, কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও মদন উপজেলায় এই সমস্যা বেশি দেখা দিয়েছে। এতে বোরো ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়ছে।
আটপাড়া উপজেলার লুনেশ্বর ও বানিয়াজান ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে স্থানীয় কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায় বিদ্যুতের ভয়াবহ লোড-শেডিং-এর কথা। দেওগাও গ্রামের কৃষক রুহুল আমীন জানান, সেচের অভাবে আমার প্রায় ২০ কাটা জমির চারা বিবর্ণ হয়ে গেছে। একই গ্রামের কৃষক আব্দুর কাদির জানান, পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং কারণে জমিতে সেচ দিতে পারছি না। বানিয়াজান গ্রামের কৃষক মফিজুল ইসলাম জানান, বিদ্যুৎ এই আসে এই যায়, বিদ্যুতের মিসকল সিস্টেমের কারণে অনেকের মটর জ্বলে গেছে বা নষ্ট হয়ে গেছে। মোবারকপুর গ্রামের জামাল মিয়া জানান, দিনভর বিদ্যুৎ থাকে না। রাতেও ২ থেকে ৩ ঘণ্টার বেশী বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। বিষ্ণপুর গ্রামের কৃষক শহীদ মিয়া জানান, বিদ্যুতের লোড শেডিংযের কারণে এহন কুন্দা দিয়া ক্ষেত হানি দিতাছি।
নেত্রকোনা কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বিলাস চন্দ্র পাল জানান, অনেক এলাকার স্থানীয় কৃষকরা মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে প্রায়শই অভিযোগ করছেন, লোড-শেডিং-এর কারণে তারা জমিতে প্রয়োজনীয় সেচে দিতে পারছেন না। আমি সমন্বয় সভায় পল্লী বিদ্যুতের জি এমকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। যে সব জমিতে চারা বিবর্ণ হয়ে গেছে সেই সব জমিতে বেশী করে সেচের পানি দিতে পরলে চারাগুলো আবার সবুজ হয়ে উঠবে।
নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. মুজিবর রহমান জানান, নেত্রকোনার ১০টি ও সুনামগঞ্জের ধর্মপাশাসহ ১১টি উপজেলা নেত্রকোনা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন। যেখানে প্রতিদিন ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে সেখানে আমরা মাত্র ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছি। ফলে সেচ মওসুমে বিদ্যুতের লোডশেডিং-এর সমস্যা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।