Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এখনো অজানাই রয়ে গেল ডিএনসিসি মার্কেটে আগুন লাগার কারণ

দেড় মাসেও জমা পড়েনি তদন্ত রিপোর্ট

| প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর গুলশানে ডিএনসিসি মার্কেট আগুনে পুড়ে ছাই হওয়ার দেড় মাস হতে চলেছে। অথচ এখনো অজানাই রয়ে গেল কিভাবে লেগেছিল সে আগুন। এটা কি নাশকতা না কি অন্যকিছু, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত একটি কমিটিও তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।
ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এবং ডিএনসিসি মার্কেট সমিতির পক্ষ থেকে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিগুলোকে প্রতিবেদন জমা দিতে এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় বেধে দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত জমা পড়েনি কোনো প্রতিবেদন।
গত ২ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ডিএনসিসি মার্কেটে আগুন লাগে। আগুন লাগার কিছুক্ষণ পরেই ধসে পড়ে মার্কেটের একাংশ। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট প্রায় ১৬ ঘণ্টা চেষ্টা করে পরদিন বিকেলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাÐের পর থেকে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বারবার নাশকতার অভিযোগ তোলা হলেও এমন অভিযোগ নাকচ দেয় সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। তবে, ঘটনা পরিকল্পিত নাকি দুর্ঘটনা তার উত্তর আটকে রয়েছে তদন্ত প্রক্রিয়াতেই।
ঘটনার কারণ খুঁজতে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্নেল মোশাররফ হোসেনকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। কিন্তু আজও তা সম্ভব হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন বিষয়ে জানতে চাইলে মোশাররফ হোসেন বলেন, আলামত সংগ্রহ ও সাক্ষ্য গ্রহণে সময় লেগেছে বলে নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন দেয়া সম্ভব হয়নি। আমরা ক্ষতির পরিমাণের তালিকাসহ সকল তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ প্রায় শেষ করেছি। সেগুলো যাচাই করা হচ্ছে। আশা করছি, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই চ‚ড়ান্ত প্রতিবেদনটি দাখিল করতে পারব।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার দিদার আহম্মদকে প্রধান করে পুলিশের পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সদস্য গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোশতাক আহমেদ খান বলেন, তদন্তের স্বার্থেই বাড়তি সময় লেগেছে। প্রতিবেদনের আগে এ বিষয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না। এদিকে সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে ডিএনসিসি মার্কেট দোকান মালিক সমিতি। কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি তালাল রেজবী বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন দিতে আরো সময় লাগবে। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের পর আমাদের কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করবে।
গতকাল ডিএনসিসি মার্কেটে সরেজমিনে দেখা যায়, অগ্নিকাÐে মার্কেটের যে অংশ ধসে পড়েছে, ধ্বংসস্ত‚প সরানোর পর সেখানে অস্থায়ী দোকান তৈরির কাজ করছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে বানানো এসব দোকানে পুনর্বাসন করা হবে ব্যবসায়ীদের। ধসে পড়া ডিএনসিসি কাঁচা মার্কেটের দোতলা ভবনে ২৯১টি স্থায়ী দোকান ছিল। দ্বিতীয় তলার ব্যবসায়ীদের জন্য মার্কেটের সামনের অংশে ও নিচতলার ব্যবসায়ীদের জন্য ধসে পড়া মার্কেটের স্থানে অস্থায়ী দোকান বানানো কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
কাঁচা মার্কেট সমিতির সভাপতি শের মোহাম্মদ বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে জানানো হয়েছে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই অস্থায়ীভাবে দোকান চালু সম্ভব হবে। নতুন ভবন সম্পর্কে সিটি করপোরেশন থেকে এখনো কিছু জানানো হয়নি। আপাতত আমরা এই অস্থায়ী দোকানেই ব্যবসা চালিয়ে যাব।
অগ্নিকাÐের পর ক্ষতির পরিমাণ জানতে দোকান প্রতি ফরম বিতরণ করে কমিটি। সে হিসাবে অগ্নিকাÐে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয় বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মার্কেট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ