Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিউ মার্কেট এলাকা থমথমে

ঢাকা কলেজের সামনে মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছে : ডিএমপি ষ নিউ মার্কেটে দোকান মালিক সমিতির দাবি সংঘর্ষ ক্ষতি ২০০ কোটি টাকা ষ সমাধান না করে দোকান খোলা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০২ এএম

ঢাকা নিউ মার্কেট এলাকায় দোকানকর্মী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুই দিন থেকে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া, ঢিলবৃষ্টি আর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও গতকাল সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি। তবে নীলক্ষেত থেকে সাইন্স ল্যাবরেটরি পর্যন্ত পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। সকালে ওই এলাকায় দোকান বন্ধ থাকলেও বিকেলের দিকে কিছু দোকান খোলা শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। সংবাদ সম্মেলন করে ব্যবসায়ীরা দোকান খোলার দাবি জানালেও ছাত্ররা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে তারা আবার পথে নামবেন। বিকেলে ঢাকা কলেজের সামনে মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের পর তা আবার দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, অন্তত এক ডজন ককটেল বিস্ফোরণের পর মিরপুর সড়কেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় এখন জড়িত জানতে অন্তত ১০ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়াদের বেশিরভাগই দোকান কর্মচারী ও ফুটপাথে হকার। এছাড়া ঢাকা কলেজের বেশ কয়েকটি ছাত্র সংগঠনের নেতাদের অনানুষ্ঠানিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল ছাড়াও আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই-বাছাই চলছে। বিনা উসকানিতে কেউ সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে কি-না সে বিষয়েও তদন্ত করা হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ বেশ কয়েকজন সহিংস হকারকে চিহ্নিত করেছে। একাধিক ফুটেজে ঘুরে ফিরে তাদের চেহারা দেখা গেছে। সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষ ও পথচারীকে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন তারা। নিউ মার্কেট থানা ছাড়াও ডিএমপির নিজস্ব গোয়েন্দা ইউনিট, মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি), পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ও সাইবার টিম ঘটনা তদন্তে কাজ করছে। মিথ্যা তথ্য প্রচার করে কেউ পরিস্থিতি ঘোলাটে করেছে কি-না, তা শনাক্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো স্ক্রিনিং করা হচ্ছে।

তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনার সূত্রপাত হয় ব্যবসায়ীদের অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণেই। অনেক ব্যবসায়ী শিক্ষার্থীদের খাবারের বিল না দেয়ার বিষয়টি সামনে আনলেও ইফতারসামগ্রী বিক্রির জন্য টেবিল বসানোর জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার মনোমালিন্য সৃষ্টি হয় একই মালিকের দুই ফাস্টফুড দোকানের মধ্যে। তারাই প্রভাব খাটাতে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের বেশকিছু সদস্যকে ডেকে আনে। তারা ব্যবসায়ীদের উপর চড়াও হলেও ব্যবসায়ীরাও তাদের মারধর করে। এরপর ওই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে গিয়ে সত্য ঘটনা আড়াল করে বিষয়টি অন্যভাবে উপস্থাপন করলে দফায় দফায় সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে নিউমার্কেটের আশপাশের মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। একাধিক ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, নিউ মার্কেটের ৪ নাম্বার গেট দিয়ে প্রবেশ করলেই ডান পাশের ২য় দোকানটি ওয়েলকাম ফাস্টফুড এবং সরু গলির বিপরীত পাশেই ক্যাপিটাল ফাস্টফুড। এই দুই দোকানের মালিক অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন সরদার। তার আপন ভাই শহিদুল ক্যাপিটাল ফাস্টফুড ও চাচাতো ভাই রফিক ওয়েলকাম ফাস্টফুড পরিচালনা করেন। প্রতিদিন ইফতারের আগে প্রতিটি ফাস্টফুডের দোকানের সামনে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে ইফতার বিক্রি করা হয়। মূলত এই টেবিল বসানোর জায়গা নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। শুক্রবার থেকে চলে আসা দ্বন্দ্ব সোমবার সন্ধ্যার পরপর প্রকাশ পায়।

সোমবার সন্ধ্যায় ইফতারির টেবিল বসানো নিয়ে ক্যাপিটাল ফাস্টফুড ও ওয়েলকাম ফাস্টফুডের স্টাফদের মধ্যে তর্কাতর্কি ও হাতাহাতি হয়। পরে ইফতারির পর ওয়েলকাম ফাস্টফুডের স্টাফরা প্রভাব খাটাতে ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের কয়েকজনকে ডাকে। একজন ছাত্রলীগ নেতা ৮-১০ জনকে নিয়ে নিউ মার্কেটে প্রবেশ করেই আতর্কিতভাবে ক্যাপিটাল ফাস্টফুডের কর্মচারীদের মারধর করতে থাকেন। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা দোকানে অকারণে হামলা চালিয়েছে ভেবে আশপাশের ব্যবসায়ীরা ওই শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। ব্যবসায়ীদের কাছে মারধরের শিকার হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে বিষয়টি অন্যভাবে উপস্থাপন করে ওই শিক্ষার্থীরা। পরে ঢাকা কলেজের ১০০-১৫০ শিক্ষার্থী নিউ মার্কেটে হামলা চালায়। পাল্টা হামলা চালায় ব্যবসায়ীরাও। দু’পক্ষের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার এক পর্যায়ে আশপাশের সব মার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলতেই থাকে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, রাজধানীর নিউ মার্কেট ও আশপাশের মার্কেটের দোকানের কর্মচারীদের সঙ্গে ক্রেতাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত। এক সময় রাজধানীর গুলিস্তান এলাকার ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট তৈরি করে ক্রেতাদের সাথে দুর্ব্যবহার করত। ৫০০ টাকার কাপড় ২ হাজার টাকা দাম চাইত। এক পর্যায়ে ওই কাপড় কিনতে বাধ্য করা হতো ক্রেতাদের। তবে ক্রেতারা কাপড় না কিনলে দুর্ব্যবহার করত বিক্রেতারা। তবে এমন অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করেছেন নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী নেতারা। ঈদের পরই দোকান কর্মচারীদের কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে কথা দিয়েছেন তারা।

ঢাকা নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দীন বলেন, দোকানের কর্মচারীরা ক্রেতাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগের ব্যাপারে আমরাও একমত। আমরা কথা দিচ্ছি, ঈদের পর আমরা তাদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করব। আমাদের কর্মচারীরা খুব বেশি শিক্ষিত না। তারা কোনো বেয়াদবি করলে আমাদের সমিতির অফিসে এসে অভিযোগ জানাবেন। আমরা ব্যবস্থা নেব।

নিউ মার্কেটে সংঘর্ষ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত দোকানপাট খোলা যাবে নাÑ এমন দাবিতে ফের সড়কে নেমেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। একাধিক দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার বিকাল ৫টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমে আসেন। এতে মিরপুর রোডে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

জানা গেছে, বুধবার বিকালে নিউ মার্কেট খুলে দেওয়া হয়েছেÑ এমন খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা কলেজের ফটকের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা নিউ মার্কেট খোলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেন। একই সময়ে নিউ মার্কেটের সামনে ও এর আশপাশের এলাকায় ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীরাও অবস্থান নেন। এ সময় ঢাকা কলেজের সামনে মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কে শিক্ষার্থীরা নানা সেøাগান দিচ্ছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য ওই এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন। সড়কে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই ব্যবসায়ীরা একতরফাভাবে সংবাদ সম্মেলন করে সংঘর্ষের পেছনে তাদের (শিক্ষার্থীদের) দায়ী করেছেন। বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত নিউমার্কেটের সব দোকান বন্ধ রাখতে হবে। এদিকে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনার প্রতিবাদে সরব হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

এ ঘটনা সম্পর্কে গতকাল ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে পুলিশ প্রথমত সংঘর্ষে জড়ানো পক্ষগুলোকে নিবৃত করার চেষ্টা করে। এজন্য নেগোসিয়েশন করার চেষ্টা করা হয়। দুইপক্ষকে নিয়ে আলোচনার চেষ্টা করা হয়। একটি মানুষ নিহত তো দূরে থাক, কেউ যেন আহতও না হয় সে চেষ্টাই করে পুলিশ। কিন্তু গত মঙ্গলবার অনাকাক্সিক্ষতভাবে একজন নিহত হয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন। পুলিশ কিন্তু শুরু থেকে নিরপেক্ষ ভূমিকাই পালন করেছে। সংঘর্ষ চলাকালে রমনার এডিসির ভূমিকা, গোলা-বারুদ শেষ হওয়ায় অন্য পুলিশ সদস্যকে থাপ্পড় মারাসহ সার্বিক পরিস্থিতিতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন পরিস্থিতিতে এডিসির থাপ্পড় মারা ও গুলি শেষ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। আপাতত পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাতেই মনোযোগী।

হাফিজ আক্তার বলেন, ঢাকা কলেজ ঐতিহ্যের শিক্ষপ্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠান থেকে যারা বের হয়েছেন তাদের অনেকে ভালো অবস্থানে আছেন। করোনার কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সামনে ঈদ। ব্যবসায়ীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময় এটি। এরমধ্যে নিউ মার্কেটের শ্রমিক-ব্যবসায়ী ও ছাত্রদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জেরে সংঘাত হয়, মারামারি হয়। তিনি বলেন, উভয়পক্ষকে নিয়ে পুলিশ শুরু থেকেই সমঝোতার চেষ্টা চালিয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে পুলিশের সমঝোতা ছাড়া উপায়ও থাকে না। দ্বিতীয়ত, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উভয়পক্ষকে সরে যেতে বলেছি। তৃতীয়ত, নন লেথাল উইপন (অস্ত্র) ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে।

ডিএমপির এ অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, সামনে ঈদ, কালকের পর থেকে কলেজগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। ছাত্র-ব্যবসায়ীদের মধ্যকার তুচ্ছ ঘটনা থেকে সূত্রপাত হওয়া এ সংঘাতের সমাপ্তি জরুরি। ব্যবসায়ীদের সন্তানরাও বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবেন। ঈদকে কেন্দ্র করেই তাদের ব্যবসা, সারা বছর তারা বসে থাকেন। তাদেরও পরিবার আছে। তবে তাদেরও উচিত জনগণের সঙ্গে খারাপ আচরণ না করা। আমি ছাত্রদের আহ্বান করব, সংঘাতে না যাই, ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় কোনো বাধা সৃষ্টি যেন না হয়। সবাই সবার মতো নিজের কাজ করি। সংঘাতে না জড়াই, সংযম রক্ষা করি।

অপরদিকে সংঘর্ষে তিন দিনে নিউমার্কেট এলাকার ১০ হাজার ব্যবসায়ীর প্রায় ২০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তবে গতকাল বুধবারও যদি দোকান না খোলা হয় তাহলে ফুটপাথসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীদের এ ক্ষতি আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে দোকান মালিক সমিতি। এদিকে, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার ঘোষণা প্রত্যাহার করেছে ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা দিলেও মাঠে নামেনি। তবে গতকাল সকালে বৃষ্টির মধ্যে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা কলেজের সামনে এসে বিক্ষোভ করেছে।

ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও ব্যবসায়ীদের হামলার প্রতিবাদে নীলক্ষেত মোড়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের ডাক দেয়া হয়। তিনটি দাবি বাস্তবায়নের জন্য মানববন্ধন করার ডাক দেয় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো- হামলাকারীদের শনাক্ত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারের আওতায় আনা, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও এডিসি হারুনকে প্রত্যাহার, অ্যাম্বুলেন্স ও সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা, আহত সকল শিক্ষার্থীদের ব্যয় রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে।

এর আগে, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের এই সংঘর্ষের ঘটনায় আহত কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী নাহিদ হোসেন গত মঙ্গলবার রাতে মারা যায়। এদিকে, ঢাকা কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল মইনুল হোসেন জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হল ছাড়ার ঘোষণা থেকে সরে এসেছে প্রশাসন।

অপরদিকে ভবিষ্যতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো সংঘর্ষ না ঘটে সেজন্য ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও প্রশাসনকে নিয়ে কমিটি গঠন করতে চায় নিউমার্কেট দোকান মালিক সমিতি। গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান নিউমার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ডা দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন। এ সময় বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের চিহ্নিত করব। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। তিনি বলেন, দুই পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে শিগগিরই নিউ মার্কেটের দোকান খোলা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি মীমাংসা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় ব্যাপক সংঘর্ষের পর গতকাল নিউ মার্কেট এলাকার দোকানগুলোর ছাদে সাদা পতাকা উড়িয়েছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা। এর মাধ্যমে ‘আর সংঘর্ষ নয়, শান্তি চাই’- এই বার্তা দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও ঢাকা কলেজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী নেতারা। এ সময় গতকাল রাতে বিষয়টি সমাধানের জন্য বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত হয়। তবে রাত ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা বৈঠকে বসেননি।



 

Show all comments
  • Jashim Uddin Salim ২১ এপ্রিল, ২০২২, ৫:০৯ এএম says : 0
    ঈদের আগে রাহাজানি বন্ধ করুন সকলে আমরা আমরা আমরাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Jannatul Farduse ২১ এপ্রিল, ২০২২, ৫:১০ এএম says : 0
    শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশেপাশের এতো মার্কেট কেন? এই মার্কেটগুলি মানুষের ভোগান্তির কারন, প্রতিদিন যানজট লেগেই থাকে! বানিজ্য মেলার মত অন্য কোথাও অপ্রয়োজনীয় মার্কেট সরিয়ে যানজট মুক্ত এলাকা করা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • Mir Irfan Hossain ২১ এপ্রিল, ২০২২, ৫:১০ এএম says : 0
    নিউমার্কেটের দোকানদারেরা যে ভয়াবহ দুর্ব্যবহার করেন সর্বদাই, তাদের কথা একটু তুলে ধরুন
    Total Reply(0) Reply
  • Mujibul Hoque ২১ এপ্রিল, ২০২২, ৫:১০ এএম says : 0
    ঢাকার মানুষের প্রতি অনুরোধ, সবাই নিউমার্কেট থেকে কেনাকাটা করা থেকে বিরত থাকুন। নিউমার্কেটকে বয়কট করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • ব্লিডিং হার্ট ২১ এপ্রিল, ২০২২, ৫:১১ এএম says : 0
    নিউ মার্কেটের উপর জনগনের ক্ষোভ আছে।আজীবনের জন্য বন্ধ ঘোষনা করা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • M A Mamun ২১ এপ্রিল, ২০২২, ৫:১১ এএম says : 0
    নিউ মার্কেট থেকে কেনা কাটা বন্ধ করুন। ব্যাস,,,,,, সব সোজা হয়ে যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Alamgir Hossain Alamgir Hossain ২১ এপ্রিল, ২০২২, ৫:১২ এএম says : 0
    ব্যবসায়িদের কারনে এ ঘটনা ঘটেছে। আর সেই ব্যবসায়িরাই দোকান খুলবে আর কলেজ বন্দ কেন?
    Total Reply(0) Reply
  • Solimullah Sikder ২১ এপ্রিল, ২০২২, ৫:১২ এএম says : 0
    ফুটপাতে রাস্তার পাশে অবৈধ সমস্ত দোকান উচ্ছেদ করলে ওইখানে শান্তি আসবে তার আগে না
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ২১ এপ্রিল, ২০২২, ৬:১২ এএম says : 0
    একদিনে দুই কোটি টাকা আয় করেন বেবসায়ীরা ,উনারা মানবতার খাতিরে নিহত জাহিদকে আধা দিনের যে আয় যদি মানবিক চিন্তা করে দিয়ে দেন,এই পরিবারের প্রতি উপকার করবেন,আর সরকার যেহেতু গরিব মানুষের পাশে আছেন,গরিব মানুষ কে ঘর দরজা করে দিয়ে থাকেন মানবিক দিক থেকে সেটি করে দিলেই এই পরিবারের উপকারে আসবে,এবং নাহীদের ভাই বোনদের এতিম ছেলের লেখা পড়ালেখার দায়িততো ঢাকা কলেজ এর ম্যানেজমেনট কমিটি নিতে পারেন,দশের লাঠি একের বোঝা,হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রীদের সামান্য উচিলায় এদের পড়া লেখা করা সম্ভব,আর ছাত্র ছাত্রীদের এবং বেবসায়ীদের মাঝ খানে অযথা যদি পুলিশ ক্ষমতার অপব্যবহার করে থাকেন ছাত্র ছাত্রীদের ও বেবসায়ীদের ক্ষতি পুরন তারাই বহন করতে হবে,তবে বিষয় টি অবশ্যই যাচাই বাচাই করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিউ মার্কেট এলাকা রণক্ষেত্র
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ