Inqilab Logo

শনিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৪, ০৯ ভাদ্র ১৪৩১, ১৮ সফর ১৪৪৬ হিজরী

রাঙ্গুনিয়ায় ৩ হাজার কোটি টাকায় বিশ্বমানের হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ থমকে গেছে

| প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নুরুল আবছার চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) : রাঙ্গুনিয়া পোমরা ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক একর জায়গা নিয়ে নাহিয়ান প্রকল্পে ৩ হাজার কোটি টাকায় বিশ্বমানের হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ থমকে গেছে। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের সাথে আরব আমিরাতের নাহিয়ান ফাউন্ডেশনের হাসপাতাল নির্মাণের চুক্তি হয়। হাসপাতাল নির্মাণের প্রাথমিক ভাবে গত ২০১৬ সালে রাঙ্গুনিয়া প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে সরকারী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কিন্তু হাসপাতাল নির্মাণ দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম দেখা না যাওয়ায় এলাকাবাসী হতাশ। সূত্র জানায়, ১৯৮৫ সালে আরব আমিরাত বাদশাহর সুলতান জাহেদ বিন আল নাহিয়ান ভূ-সম্পত্তি ক্রয় করেন। প্রকল্পের কাজ থমকে যাওয়ায় ভূ-সম্পত্তি পরিত্যক্ত পড়ে রয়েছে। নিরাপত্তা পর্যাপ্ত না থাকায় সন্ত্রাসীরা প্রকল্পের পাহাড়ি জায়গায় আস্তানা গড়ে তুলেছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ভিতর খুনের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া মাদকসেবী ও দুর্ধর্ষ ডাকাত প্রায়ই সেখানে অবস্থান নিয়ে আশেপাশের বেতাগী, পোমরা ও সরফভাটা এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করছে। সরেজিমনে জানা যায়, নাহিয়ান প্রকল্পে বিভিন্ন অপরাধীদের নিরাপদ ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। প্রকল্পের সীমানা বাউন্ডারী দেয়া একাধিক লোহার গ্রীল চোরেরা কেটে নিয়ে গেছে। পুরো প্রকল্পটি অরক্ষিত হয়ে পড়ায় অপরাধীরা নিরাপদ আস্তানা গেড়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। নাহিয়ান প্রকল্পটি শত একরের মূল্যবান ভূমি নিরাপত্তায় শুধুমাত্র একজন নিরাপত্তা প্রহরী আছেন। পোমরা গ্রামের লোকজন জানান, সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকারের শাসনামলে আরব আমিরাতের বাদশাহ সুলতান জাহেদ বাংলাদেশে ভিজিট করতে এসে বেতাগী-পোমরা ইউনিয়নের ১১০ একর ভূ-সম্পত্তি ক্রয় করেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নামমূল্যে উপহার হিসেবে বাদশাহকে উপহার দেন। তিনি “পারসোনাল প্রোপার্টি অব সুলতান জাহেদ বিন আল নাহিয়ান” নামে একটি প্রকল্প গড়ে তোলেন। বাদশাহর স্বপ্ন ছিল, বাংলাদেশে অবস্থানকালে নিরাপদে অবকাশ যাপন, কর্ণফুলী নদীর তীরে পার্ক নির্মাণ, কৃষিখাতে বিপ্লব ও বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কলকারখানা গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল। ২০০৫ সালে আরব আমিরাত বাদশাহ সুলতান জাহেদ বিন নাহিয়ান ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুর পর প্রকল্প কার্যক্রম থমকে যায়। ‘পারসোনাল প্রোপার্টি অব সুলতান জাহেদ বিন আল নাহিয়ান’ প্রকল্পটি তার পুত্রের পরিচালিত ‘চ্যারিটি ফাউন্ডেশন’-এর কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের অধীনে ভূ-সম্পত্তি দেখভাল করার লক্ষ্যে ‘অত্যন্ত ও নিশ্চিত সার্ভিসেস লিমিটেড’ নামের একটি বাংলাদেশী নিরাপত্তা সংস্থার কাছে দায়িত্ব দেয়া হয়। রাঙ্গুনিয়া থেকে নির্বাচিত এমপি সাবেক পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের কূটনৈতিক তৎপরতায় বাদশাহ পরিবারের পরিচালনাধীন নাহিয়ান ফাউন্ডেশনের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে ২০১৪ সালে প্রকল্প এলাকায় বিশ্বমানের আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ বাস্তবায়নের যৌথ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ সরকার ও নাহিয়ান ফাউন্ডেশনের মধ্যে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। তিন বছর অতিক্রান্ত হলেও প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখছে না। প্রকল্পটি থমকে যাওয়ায় নাহিয়ান প্রকল্প এলাকায় সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। পাহাড় বেষ্টিত প্রকল্পে সন্ত্রাসীরা আস্তানা গড়ে তুলে অপরাধ কর্মকাÐ চালাচ্ছে। নিরাপত্তা প্রহরী মো. মজু মিয়া বলেন, প্রকল্পের শুরুতে নিরাপত্তার দায়িত্বে ৬ জন আনসার নিয়োজিত ছিল। ৪/৫ বছর যাবত একজন নিরাপত্তা প্রহরী দিয়ে কোনমতে চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাসপাতাল

৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ