নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী, হায়দরাবাদ (ভারত থেকে)
ভারত প্রথম ইনিংস : ৬৮৭/৬ ডি. (১৬৬.০ ওভার)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৪১/১ (১৪.০ ওভার)
(দ্বিতীয় দিন শেষে )
শঙ্কাটা বাসা বেঁধেছিল প্রথম দিনেই। ফ্লাট উইকেটে প্রথম দিন শেষে ভারতের স্কোর যখন ৩৫৬/৩, তখন এই স্কোরটা না জানি কত বড় হয়ে রান পাহাড়ে দেয় চাপা, সে শঙ্কাটা হয়েছিল তীব্র। দ্বিতীয় দিনে তিন উইকেটে ৩৩১ রান যোগ করে বাংলাদেশকে রান পাহাড়েই দিয়েছে চাপা ভারত। বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০০৭ এ মিরপুর টেস্টে ৬১০/৩ ডি. ছিল ইতোপূর্বে ভারতের সর্বোচ্চ, সেই স্কোর ছাড়িয়ে ৬৮৭/৬ ডি. এ থেমেছে কোহলীর দল। রান পাহাড়ে চাপা দেয়ার দিনে রেকর্ডও হয়েছে বেশ ক’টি। উপর্যুপরি তিন ইনিংসে ৬০০ প্লাসে হয়েছে ভারতের নতুন বিশ্বরেকর্ড। ১১১ রানে ব্যাটিং করতে নেমে এদিন ডাবল উদযাপনে (২০৪) পর পর চারটি সিরিজে সিরিজ প্রতি একটি করে ডাবল সেঞ্চুরিতে নতুন বিশ্বরেকর্ড করেছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলী। এক মৌসুমে (২০০৪-৫) টেস্টে শেভাগের ১১০৫ রানের রেকর্ড ভেঙে দিয়ে চলমান মৌসুমে ১১৬৮ রানে নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন কোহলী। আজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে চতুর্থ জুটিতে ২২২ এ এই জুটির ২০০ প্লাস সংখ্যাটি তিনএ উন্নীত করে শচীন-সৌরভের রেকর্ড করেছেন স্পর্শ! বাংলাদেশের বিপক্ষে অধিনায়কদের মধ্যে এতদিন শুধু ডাবল সেঞ্চুরি ছিল দ. আফ্রিকার গ্রায়েম স্মিথ (২০০৮ সালে চট্টগ্রাম টেস্টে ২৩২) এবং নিউজিল্যান্ডের স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের (২০০৪ সালে ২০২)। তাদের পাশে নিজের নামটি যুক্ত করেছেন কোহলী। কোহলীময় টেস্টে ভারতের প্রথম ইনিংসে তিন সেঞ্চুরির পাশে তিন ফিফটিÑদারুণ দু’টি দিনই যে কাটিয়েছে ভারত হায়দারাবাদে। রান পাহাড়ে চাপা পড়া ম্যাচে দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ পিছিয়ে ৬৪৬ রানে। ফলো অন এড়ানোর জন্য চাই আরো ৪৪৭, দ্বিতীয় দিন শেষে রিভিউ আপীলে দুর্ভাগা সৌম্যর কট বিহাইন্ড (১৫) বড় শঙ্কার বার্তাই যে দিচ্ছে।
প্রথম দিনে বাংলাদেশ পুড়েছে একটি ক্যাচ এবং একটি রান আউটের সুযোগ হাতছাড়া করে। দ্বিতীয় দিনেও অভিযুক্ত বাজে ফিল্ডিং। দু’টি সহজ ক্যাচ ড্রপের পাশে একটি স্ট্যাম্পিং এবং একটি রান আউট হাতছাড়া করায় দিন শেষে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের চোখে মুখে রাজ্যির হতাশা। দ্রুত রান তোলার দর্শনে গতকাল দিনের প্রথম সেশনে ১২১, দ্বিতীয় সেশনে ১৩২ যোগ করেছে ভারত। রানের জন্য তাড়হুড়ো করতে যেয়ে ক্যাচ, স্ট্যাম্পিংয়ের সুযোগটাও দিয়েছিল ভারত ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু তাইজুল, মিরাজ, রাব্বীদের বঞ্চিত করেছেন টিমমেটরা। তাইজুলের বলে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এসে রিদ্ধিমান নিজেও অবধারিত স্ট্যাম্পিংয়ে কাঁটা পড়েছেন বলে নিয়েছিলেন ধরে। চার রানের মাথায় তাকে ফিরিয়ে দেয়ার মহাসুযোগ হাতছাড়া করেছেন উইকেট কিপার মুশফিকুর রহিম। গ্লাভসে বল নিয়েও প্রথম প্রচেস্টাটি ছিল তার ক্যাজুয়াল, দ্বিতীয় দফায় যখন করেছেন স্ট্যাম্পিংয়ের চেস্টা, তার আগে নিরাপদে পৌঁছে গেছেন রিদ্ধিমান। ভারতের এই উইকেট কিপার কাম ব্যাটসম্যানের স্কোর যখন ৪৭, তখন দিয়েছিলেন রান আউটের সুযোগ, সেটা হাতছাড়া করেছেন মুমিনুল। দুই বার বেঁচে যাওয়া সেই রিদ্ধিমান টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি উদযাপন করেই ছেড়েছেন (১০৬ নট আউট)। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে রাব্বীর বলে ৬২ রানের মাথায় রাহানে গেছেন বেঁচে, পয়েন্টের ফিল্ডার ডাইভ দিয়ে ক্যাচটি নিতে পারেননি। রবীন্দ্র জাদেজা ফিফটি উদযাপনে সেখানে অবদান তামীমের। ৪০ রানের মাথায় জাদেজার দেয়া ক্যাচটি লং অফে ড্রপ করেছেন তামীম। নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশকে আক্ষেপে পুড়িয়েছে ১৮টি ক্যাচ ড্রপ, সেই ছবিটা হায়দারাবাদেও দুঃস্বপ্ন হয়ে দিয়েছে দেখা।
এমন একটি দিনে বোলিং চেঞ্জেও মুশফিকুর প্রশ্নবিদ্ধ। অভিজ্ঞ সাকিবকে এক স্পেলে দিয়েছেন থামিয়ে। অথচ ঘুরে ফিরে বোলিং করিয়েছেন তিনি অন্য দুই স্পিনার মিরাজ এবং তাইজুলকে। প্রথম দিনে মুরালী বিজয়কে হতভম্ব করা ডেলিভারিতে বোল্ড আউট করা বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল এদিন সব ধরনের চেস্টাই করেছেন, রাহানে এবং কোহলী তার শিকার গতকাল (৩/১৫৬), প্রথম দিনে পুজারার হত্যাকারী মিরাজ এদিন শিকার করেছেন অশ্বিনকে (২/১৬৫)। ম্যাচটি এখন যে অবস্থায় দাঁড়িয়ে, তাতে দ্বিতীয়বার ব্যাট করার কথা ভাবছে না ভারত। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গত ডিসেম্বরে ৬০০ প্লাস স্কোরের সর্বশেষ দুই ম্যাচের একটিতেও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে হয়নি ভারতকেÑমুম্বাই এবং চেন্নাই টেস্টে জিতেছে তারা ইনিংস ব্যবধানে। হ্যাটট্রিক ৬০০ প্লাস ইনিংসের ম্যাচেও তেমন স্বপ্ন দেখছে তারা। তবে এই দুইদিনে উইকেট চরিত্র তেমন একটা বদলায়নি, এখনো ফ্লাট উইকেটই দেখছেন বলে অপ্রত্যাশিত কিছুর আশা ছড়ছেন না মিরাজÑ ‘নিউজিল্যান্ডে আমরা ৫৯৫ করেছি। তাই বড় স্কোর করতে পারব বলে আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে। আমাদের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা যদি ভালো ব্যাটিং করে, আমাদের বিশ্বাস আছে এখান থেকে বড় রান করতে পারি। তাহলে আমার ম্যাচে ফিরতে পারব। ’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।