Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে জীবনযাত্রার পদ্ধতি পাল্টান

প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

উচ্চ রক্তচাপের মতো নীরব ঘাতক হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক পর্যন্ত ঘটাতে পারে। এর চিকিৎসার জন্য এতদিন ব্যবহৃত হয়ে আসছে নানা ধরনের ওষুধ। অথচ বিজ্ঞানীরা বলেছেন, জীবনযাত্রার পদ্ধতি পাল্টে ফেলেও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। জার্মান কার্ডিয়াক সোসাইটির হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ভি ডেলিউস বলেছেন, প্রত্যেকেরই উচিত নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা। কেননা কোনো ধরনের লক্ষণ ছাড়াই যখন তখন উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে। রক্তচাপ নিচে ৯০ এবং উপরে ১৪০-র মাত্রা পেরিয়ে গেলে তাকে হাইপারটেনশন হিসেবে অবহিত করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আর যারা ইতোমধ্যে এই শ্রেণিতে পড়েছেন তাদের উচিত যত দ্রুত সম্ভব রক্তচাপ কমানোর চেষ্টা করা। জার্মানির ডা. রামোন মারটিনেজ বলেছেন, যখন রক্তচাপ অনেক বেশি বেড়ে যায় তখন সবসময় ওষুধ খাওয়া এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়। বরং যখন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে তখন মানুষ এ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। জার্মান স্পোর্টস ইউনির্ভাসিটি ইনস্টিটিউট ফর কার্ডিওভাসকুলার রিসাচ অ্যান্ড স্পোর্টস মেডিসিনের চিকিৎসক ইউ হিলডেব্রান্ড বলেছেন, ‘অতিরিক্ত ওজন কমানোর সঙ্গে সঙ্গে রক্তচাপ উপরে ২ এবং নিচে ১ মাত্রা করে কমে আসে। এই হিসাবে দশ কিলো কমালে রক্তচাপ বিশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা। যেমনÑ প্রাণিজ চর্বি কম খাওয়া, উদ্ভিজ তেল খাওয়া এবং ময়দার পরিবর্তে আটার রুটি খাওয়া। ডাক্তার মারটিনেজ অবশ্য এর সঙ্গে প্রতিদিন বার পাঁচেক টাটকা ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এর ফলে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়ে এবং রক্তচাপ কম থাকে।’ অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অভ্যাস উচ্চ রক্তচাপের জন্য ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে। ডাক্তার ডেলিউস বলেছেন, ‘বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, আমাদের শরীরের জন্য যে পরিমাণ লবণ প্রয়োজন তার চেয়ে আমরা অনেক বেশি লবণ খাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘কেউ যদি প্রতিদিনের তালিকা থেকে চিরদিনের জন্য পাঁচ থেকে ছয় গ্রাম লবণ কমাতে পারেন তাহলে তার রক্তচাপ সাত মাত্রা পর্যন্ত কমে যেতে পারে। আর তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে এই পার্থক্যটা দেখা যায়।’ শরীর চর্চাও এক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে, বললেন ডা. হিলডেব্রান্ড। তিনি বলেছেন, আমরা ওয়ার্কিং, সাইকেল চালানো বা সাঁতারকাটার মতো পরিমিত অ্যারোবিক শরীরচর্চার পরামর্শ দিয়ে থাকি। যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি সুফল পেতে চাইলে তাদের সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন আধা ঘণ্টা ব্যায়াম করা উচিত। প্রাত্যহিক শরীরচর্চা রক্তচাপ দশ মাত্রা কমিয়ে আনতে পারে। সেই সঙ্গে বিরত থাকতে হবে ধূমপান ও মদ্যপান থেকে।’ তবে বংশগত ধারাকে উপেক্ষা করার উপায় নেই। ডেলিউস বলেছেন, ‘বাবা বা মা কারও যদি উচ্চ রক্তচাপ থাকে তাহলে সন্তানদের মধ্যে এর ঝুঁকি থেকে যায়। তাই এসব সন্তানদের অল্প বয়সে থেকেই স্বাস্থ্যকর সুষম খাবার খাওয়া এবং শরীরচর্চার অভ্যাস করা উচিত।’ অন্যদিকে আমেরিকার এক গবেষক দল জানিয়েছেন, প্রতিদিন ২.৭ গ্রাম করে রসুন খেলে রক্তচাপ কম থাকে।
ষ আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক-কলামিস্ট



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে জীবনযাত্রার পদ্ধতি পাল্টান
আরও পড়ুন