বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পীরগাছা (রংপুর) সংবাদদাতা : রংপুরের পীরগাছায় ২০১৬ সনের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল জালিয়াতি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলাফল জালিয়াতির তথ্য ফাঁস হওয়া তা সংশোধনের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এক পত্র মারফৎ সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরকে অবহিত করেছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একাধিক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর ফলাফল জালিয়াতি করা হয়। ফলে প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল না করাসহ বৃত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
গত ২৯ ডিসেম্বর/২০১৬ তারিখে উশিঅ/পীর/রং/১৬/৮৪৪ নং স্মারকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষরিত এক পত্রে নি¤েœ উল্লেখ্য রোলসমূহের ফলাফল সংশোধন করে প্রকৃত ফলাফল প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। ওই পত্রের সূত্র মতে জানা যায়, প্রকাশিত ফলাফলে সবচেয়ে আলোচিত কুটিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে অংশগ্রহণকারী সানরাইজ কিন্ডার গার্টেন থেকে ৫ জন শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পান। যাহার রোল-৪০৫০ শিক্ষার্থী রইচ আলম জিপিএ ৫ পেলেও অন্য ৪ জন শিক্ষার্থীর ফলাফল জালিয়াতি করে ওয়েব সাইটে জিপিএ ৫ দেখানো হয়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে শিক্ষার্থী আলফিদা হাসান আনন্দ রোল-৪০৫১ জিপিএ ৪.৮৩, রাসেল মিয়া রোল-৪০৫২ জিপিএ ৪.৮৩, আপন মিয়া রোল-৪০৫৩ জিপিএ ৪.৬৭, জিয়াদ ইসলাম আসিফ রোল-৪০৫৪ জিপিএ ৪.৮৩ পেলেও জিপিএ-৫ দেখিয়ে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও একই কেন্দ্রে অ্যাম্বিশন কিন্ডার গার্টেন থেকে ১১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে ৪ জন শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এদের মধ্যে অন্য ৭ শিক্ষার্থী রেদওয়ান রাব্বী রোল- ৪০৫৭ জিপিএ ৪.৫০, সাজ্জাদ হোসেন প্যারিস রোল-৪০৫৮ জিপিএ ৪.৮৩, নিয়ামুল ইসলাম নাইম রোল-৪০৫৯ জিপিএ ৪.৭৫, নাফিস ইকবাল নিহি রোল-৪০৬০ জিপিএ ৪.৬৭, শরিফুল ইসলাম সাগর রোল-৪০৬১ জিপিএ ৪.৮৩, হাফিজা আক্তার বীথি রোল-৪০৬৩ জিপিএ ৪.৮৩ ও নুরুন্নাহার আক্তার নিক্তি রোল-৪০৬৫ জিপিএ ৪.০০ গ্রেড ফলাফল পীরগাছা উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে দেখানো হলেও প্রকাশিত ফলাফলে জিপিএ ৫ দেখানো হয়।
একইভাবে শত শত শিক্ষার্থীর ফলাফল মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে জালিয়াতি করে জিপিএ-৫ বানিয়ে দেয়াসহ বৃত্তি পাইয়ে দেয়ার জন্য শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের নিকট থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয়। পীরগাছা উপজেলা শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এ ফলাফল জালিয়াতির ঘটনা ঘটে বলে একাধিক অভিযোগে জানা যায়। এদিকে ফলাফল জালিয়াতির কারণে প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীরা বৃত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছে।
২০১৬ সালে স্থাপিত উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের ১টি তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ২টি ছাওলা ইউনিয়নের ৩টি কিন্ডার গার্টেনসহ সরকারি বেসরকারি মিলে প্রায় ২০টি বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রফিক-উজ-জামান জানান, ফলাফল অনিয়ম হলেও তা সংশোধন করা হয়েছে এবং ফলাফল জালিয়াতির বিষয়ে তদন্ত চলছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষ অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, আমি সদ্য যোগদান করেছি। তবে এ সংক্রান্ত বিষয়ে বিভাগীয় উপ-পরিচালক তদন্ত করবেন বলে আমি একটি পত্র পেয়েছি। এবারে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় উপজেলার ৯ কেন্দ্রে ৩শ’ ৮৭টি প্রতিষ্ঠনের ৮ হাজার ৪ শত ৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে ৫০১ জন্য শিক্ষার্থীকে জিপিএ-৫ দেখানো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।