চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
মুফতি আবদুল হক (পীর সাহেব, মহেশখালী)
॥ শেষ কিস্তি ॥
বড়দের নজরে তাবলীগ
বিশ্ব বরেণ্য ওলামায়েক্বেরাম যথা বাংলাদেশের খতিবে আজম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ (র.), মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহ (র.), ড. শহীদুল্লাহ (র.), মাওলানা মুফতি আমিমুল এহসান (র.) মাওলানা ছৈয়দ আবদুল করিম আল মাদানী (র.), মাওলানা আবদুল জব্বার পীর সাহেব (র.), মাওলানা শাহ আবদুল মজিদ (র.) গারাঙ্গীয়া, মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদী, ভারতের আল্লামা আবুল হাসান আলী নদভী (র.), পাকিস্তানের আল্লামা শিব্বির আহমদ ওসমানী (র.) ও আল্লামা তকী ওসমানী, কাতারের আল্লামা ইউছুপ কারজাভী, মিশরের শায়খ আলী তানতাভী, সৌদি আরবের আল্লামা শায়খ বিন বায (র.) ও শায়খ সালেহ উসাইমিনসহ বিশ্বের অসংখ্য বরণীয় ও স্মরণীয় ওলামা মনিষীগণ তাবলীগ জামাত সম্পর্কে ভূয়সী প্রসংশা করেন এবং এটি একটি বিশুদ্ধ গণইসলাম প্রচার সংঘ বলে ঐকমত্য পোষণ করেন।
প্রকৃত দ্বীনি সংগঠনের প্রতি সমর্থন ঈমানদারির লক্ষণ
কোন কোন ইসলামী দল ও সংগঠন তাবলীগ জামাতকে ভালো চোখে দেখে না। অধম এ ব্যাপারে অত্যন্ত চিন্তিত-ভারাক্রান্ত ও মর্মাহত। কারণ তাদের সংগঠন যদি দ্বীনি মিশন হয়ে থাকে তাহলে প্রকৃত দাওয়ামূলক সংগঠন-সংস্থার উপর তো খুশি হওয়ার কথা। কেননা দ্বীনি তৎপরতা যতই বৃদ্ধি পাবে, ততই ইসলামের ভিটি উঁচু হবে। রাসূল (সা.) দাওয়াত-রিসালাত উত্তরোত্তর সফলতা লাভ করবে। তবে যদি দ্বীনের লেভেলে কোন সংগঠন আসলে দ্বীনি না হয়, তাহলে তারা অন্য কোন দ্বীনি সংগঠনকে আলিঙ্গন করতে পারে না। কাজেই আমি সকল দ্বীনি সংগঠনের প্রতি বিনীতভাবে অনুরোধ রাখছি; প্রকৃত দ্বীনি সংস্থার প্রতি সমর্থন ঈমানদারির লক্ষণ। কারণ যে দাওয়াত ও আহ্বান আসল শরীয়তে বিদ্যমান, পরিবর্তিত কর্মপদ্ধতির কারণে সেটি বিদয়াত ও ভ্রষ্ট হতে পারে না। তাই দ্বীনি ভাইদের সাথে মতানৈক্য, মতদ্বন্দ্ব ও ফের্কাবন্দী পরিহার করুন। একটু চিন্তা করুন আজ বিশ্বময় যে লক্ষ লক্ষ লোক ইসলাম গ্রহণ করছে, অমুসলিম দেশসমূহে নিত্য মসজিদ গড়ে উঠেছে, মুসলমানগণ হারানো ধর্ম ইসলামকে আলিঙ্গন ও চুম্বন করছে এগুলো কি তাবলীগের অবদান নয়? এতে কি খুশি হওয়ার কথা নয়? হ্যাঁ রাসুল (সা.) এর মহব্বত থাকলে অবশ্যই খুশি হতে হবে।
আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে তাবলীগের প্রভাব
পক্ষান্তরে তাবলীগ জামাত হচ্ছে প্রকৃত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতভুক্ত ঈমান আমল প্রশিক্ষণধর্মী একটি মসজিদ ভিত্তিক জামাত। যা আল্লাহ ও রাসূল (সা.)-এর নীতিমালার আলোকে আদর্শ ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ গঠন করার প্রচেষ্টায় সদা তৎপর। বলাবাহুল্য শিরক্ মুক্ত সাচ্ছা ঈমানদার বিদয়াত মুক্ত সুন্নাতে রাসূলের একনিষ্ঠ অনুসারী এবং দুর্নীতিমুক্ত ব্যক্তি ও সমাজ উপহার দানে তাবলীগ শতভাগ সফলতার স্বাক্ষর রেখেছে। তাবলীগের বদৌলতে অসংখ্য ধর্ম-কর্মে অমনোযোগী লোক ধার্মিক ও নীতিবান হয়েছে, চরিত্র শোভার অধিকারী হয়েছে। অনেক বেনামাজি, নামাজ ধরেছে। অনেকে বিজাতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে বর্জন করে ইসলামী সভ্যতার জমজমে অবগাহন করছে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ সারা দুনিয়ায় মিলয়ন মিলিয়ন লোক ইসলামী আদর্শের প্রতি অনুপ্রাণীত হচ্ছে। স্বেচ্ছায় নিজের খেয়ে, নিজের লয়ে, কোন প্রকার মাইনে-মাশোহারা ছাড়া, দ্বীন শেখা ও শেখানোর জন্য দেশ হতে দেশান্তরে ঘুরছে। সুবহানাল্লাহ।
তাবলীগ জামাত দেশ ও জাতির বিশাল আস্থা অর্জন করতে পেরেছে। লোকমুখে শোনা যায়, অমুক জজ-বিচারক, তাবলীগি লোক, ঘুষ-তুষের ধারে-কাছেও নেই। ছেলেটি শিক্ষিত ও তাবলীগি, তাই তার প্রস্তাবকে তো মেনে নিতে হয়। কারণ নামাজি ও চরিত্রবান হিসেবে কন্যার উপর অবিচার তো করবে না। অমুক প্রতিষ্ঠান প্রধান তাবলীগি ব্যক্তি, তাই তো অধিনস্থদের প্রতি ভাল ব্যবহার করেন। পত্রিকায় কোন কোন সময় ব্যতিক্রমধর্মী বিজ্ঞাপন ও দেখা যায় যে, নি¤œবর্ণিত পদসমূহের জন্য তাবলীগি মতাদর্শের প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এভাবে দেখা যায়, আলোকিত ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ বিনির্মাণে তাবলীগের ভূমিকা অপরিসীম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।