Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পটিয়ায় এক বছরে ৩ শতাধিক গরু চুরি হাইওয়ে পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক

চোর ছাড়িয়ে নিলেন আ’লীগ নেত্রী

| প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এসকেএম নুর হোসেন, পটিয়া থেকে : চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় ইদানিং গরু চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন কোন না কোন স্থানে গরু চুরি হচ্ছে। চোরের দল গরু চুরি করে রাতের বেলা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহা-সড়ক দিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্দেশে পাচার করে দিলেও রাত্রিকালীন ডিউটিরত হাইওয়ে পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক। পণ্যবাহী কভার্ডভ্যান, ট্রাক, মিনিট্রাক দিয়ে গরু পাচার হয় বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটে গত ১৮ জানুয়ারী।
ওই দিন দিবাগত রাত প্রায় দেড়টার সময় র‌্যাভেন এগ্রো কেমিক্যালস লি: কীটনাশক কোম্পানীর একটি কভার্ডভ্যান দিয়ে অভিনব কায়দায় মহিষ চুরি করার সময় স্থানীয় জনতা দুই চোরকে আটক করে। কিন্তু এক আ’লীগ নেত্রীর সুপারিশ ও তদবীরে দুই চোর ছাড়া পেয়ে যায়। এ ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশের্^ পটিয়া উপজেলাধীন কমল মুন্সীরহাট এলাকায় চক্রশালা কৃষি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে একটি সরকারী মৎস্য খামার রয়েছে। এ খামারের পাশে রয়েছে জাহেদ চৌধুরী নামের একব্যক্তির মহিষের খামার। জাহেদ চৌধুরী জানান, গত ১৮ জানুয়ারি দিবাগত রাত দেড়টার সময় একটি পণ্যবাহী কভার্ডভ্যান কৃষি স্কুলের মাঠ দিয়ে নেমে গাড়িতে মহিষ তোলার স্থানে গিয়ে দাঁড়ায়। খামার ঘরে অবস্থানকারী জাহেদের বাবা আবদুল লতিফ বিষয়টি লক্ষ্য করে তার ছেলে জাহেদকে মোবাইল ফোনে জানান। জাহেদ খবর পেয়ে দ্রæত মোটর সাইকেল যোগে কমল মুন্সীরহাটে আসে এবং লোকজন নিয়ে গাড়িসহ দুইজনকে আটক করে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে ফটিকছড়ি উপজেলার বিবিরহাট এলাকার শাহ আলম (৪৮), গাড়ি চালক পটিয়া উপজেলার চাটারা গ্রামের আবদুর রহিম প্রকাশ নাছির (৩৮)। তাদের স্থানীয় জনতা কচুয়াই ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে আসে। পরদিন শত শত উৎসুক জনতা তাদের দেখার জন্য ভীড় জমায়। এব্যাপারে পটিয়া থানায় খবর দিলে থানার ওসি শেখ নেয়ামত উল্লাহ একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু আ’লীগ নেত্রী মহিলা মেম্বার সাজেদা বেগম পুলিশ, ২/১ জন মিডিয়া কর্মী ও কয়েকজন ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে আটককৃতদের ইউপি কার্যালয় থেকে ছাড়িয়ে নেয়।
এব্যাপারে ওসি নেয়ামত উল্লাহ বলেন, কেউ মামলার বাদী না হলে আমার করার কিছুই নেই। স্থানীয় লোকজন জানায়, ওই দিন ১৮ জানুয়ারী উপজেলার মুজাফ্ফরাবাদ গ্রাম থেকে নুর বক্সের ৪টি গরু চুরি হয়। গত ৫ জানুয়ারী কমল মুন্সীরহাটের ব্যবসায়ী ভোলা সওদাগরের প্রায় আড়াই লাখ টাকা মূল্যের দুটি গরু চুরি হলে শোকে ৮ জানুয়ারী হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।
কচুয়াই ইউপির পারিগ্রামের কামাল হোসেন প্রকাশ বাবুল মেম্বার জানান, গত ১ বছরে পারিগ্রাম থেকে ৬০টি গরু চুরি হয়েছে। গত ৬ মাসে কচুয়াই কালা মসজিদ এলাকা থেকে ২০টি গরু চুরি হয়। খরনা ইউনিয়নের ফকিরপাড়া এলাকা থেকে প্রায় ৪০/৪৫টি গরু চুরি হয়। এভাবে উপজেলার খরনা, কচুয়াই, হাইদগাঁও, কেলিশহর, সুচক্রদন্ডী, ধলঘাট, জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন থেকে ১ বছরে প্রায় ৩ শতাধিক গরু চুরি হয়েছে। যার মূল্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা। কৃষকেরা জানায়, শীত মৌসুমে গরু চোরদের উপদ্রব বেড়ে যায়। মহাসড়ক দিয়ে এভাবে গরু বাইরে পাচার হলেও হাইওয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গরু চুরি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে এখানকার খামারীরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পটিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ