বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার : আইন বাস্তবায়নের ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও ৫১ শতাংশ তামাকপণ্যেই শতভাগ আইন মেনে সচিত্র সতর্কবাণী মুদ্রণ করা হয়নি। ৯২ শতাংশ তামাকপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সচিত্র সতর্কবাণী মুদ্রণ সংক্রান্ত শতভাগ কমপ্লায়েন্স অনুসরণ না করেই তামাকপণ্য বিক্রয় করছে। ১৯ দশমিক ২ শতাংশ তামাকপণ্যের প্যাকেটে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী নেই।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের পক্ষে প্রজ্ঞা, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, এসিডি, ইপসা এবং সীমান্তিক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
তামাকপণ্যে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়ন বিষয়ক ‘কমপ্লায়েন্স সার্ভে ফলাফল প্রকাশ ২০১৬’ অনুষ্ঠানে গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন প্রজ্ঞা কো-অর্ডিনেটর হাসান শাহরিয়ার।
ফলাফলে দেখা যায়, বিড়িতে ১০০ শতাংশ, জর্দায় ৯৬ দশমিক ৪ শতাংশ গুল-এ ৭৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং সিগারেটে ২০ দশমিক ৮৮ শতাংশ ক্ষেত্রেই শতভাগ আইন মেনে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়ন করা হয়নি।
গবেষণা ফলাফলে দেখা যায়, ৪৪টি ব্রান্ডের সিগারেটের মধ্যে ৩৫টি এবং ১৭টি ব্রান্ডের বিড়ির মধ্যে ১২টি ব্রান্ডের বিড়ির প্যাকেট পূর্ববর্তী পর্বের ছবিসহ বাজারে পাওয়া গেছে। বিড়ির প্যাকেটে শুধুমাত্র বাংলাদেশে বিক্রয়ের জন্য অনুমোদিত বিবৃতি মুদ্রণ হার শূন্য শতাংশ। ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের ক্ষেত্রেও আইন প্রতিপালনের হার খুবই উদ্বেগজনক। ৪০ দশমিক ২ শতাংশ জর্দা কৌটায় এবং ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ গুল কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে প্যাকেট বা কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর অবস্থান বিষয়ক চিত্র খুবই ভয়াবহ।
১ দশমিক ৭ শতাংশ বিড়ির প্যাকেট, ৮৫ দশমিক ২ শতাংশ জর্দা এবং ৪২ শতাংশ গুল কৌটায় সতর্কবাণী সঠিক স্থানে মুদ্রণ করা হয়নি। গবেষণার ফলাফলে আরো দেখা গেছে, তামাকপণ্যে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ বাধ্যতামূলক বিষয়টি সম্পর্কে ৩১ শতাংশ বিক্রেতা অবগত নন। ৭০ দশমিক ৮ শতাংশ বিক্রেতাই জানেন না ৩ মাস অন্তর সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী পরিবর্তন বিষয়ক আইনগত বাধ্য-বাধকতা রয়েছে। গবেষণায় ৮টি বিভাগীয় শহরের মোট ১২০টি দোকানে তিন ধরনের তামাক বিক্রেতার কাছ থেকে (যথা- সিগারেট বিক্রেতা; বিড়ি এবং স্বল্পমূল্যের সিগারেট বিক্রেতা; ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য বিক্রেতা) ১ হাজার ৮২৭টি তামাকপণ্যের প্যাকেট/কৌটার উপর তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়।
সার্বিকভাবে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়নের চিত্র হতাশাজনক। শতভাগ আইন মেনে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়নের হার অর্ধেকেরও কম। স্বল্পদামি সিগারেট, বিড়ি, জর্দা ও গুল যেগুলো মূলত নিরক্ষর ও নিম্নআয়ের মানুষ বেশি ব্যবহার করে সেসব ক্ষেত্রে আইন প্রতিপালনের হার আরও বেশি হতাশাজনক।
উল্লেখ্য, ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী এই শ্রেণির মানুষের জন্য বেশি ফলপ্রসূ। তামাক কোম্পানিগুলো সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘনের প্রচেষ্টা ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে। তবে শক্তিশালী সরকারি নজরদারির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার এই কার্যকর হাতিয়ার সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে তা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি ন্যাশনাল প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) গ্রান্টস ম্যানেজার ডা. মাহফুজুল হক ভুঁঞা, দি ইউনিয়নের টেকনিক্যাল এ্যাডভাইজার অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের বাংলাদেশ কান্ট্রি এ্যাডভাইজার মো. শফিকুল ইসলাম, উবিনীগের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার এবং এন্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স-আত্মা’র কো-কনভেনর নাদিরা কিরণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।