পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : কথায় আছে ‘চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী’। সন্ত্রাসী কর্মকা-ে জড়িত থেকে প্রতিপক্ষের আঘাতে দুই হাত হারিয়েছেন বিটেন ও খোকন। চিরতরে হয়েছেন পঙ্গু। কিন্তু তাতে কী! এখন তারা পুরোদমে মাদক ব্যবসায়ী। সেই সুবাদে সন্ত্রাসীদের সাথে যোগাযোগও আছে। সম্প্রতি কদমতলী থানা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে এই দু’জন। পঙ্গু দু’জনকে থানায় দেখে অনেকেই বিরূপ মন্তব্য করেছে। কিন্তু ভুক্তভোগী এবং দুর্ধর্ষ এই দুই সন্ত্রাসী সম্পর্কে যারা জানে তারা পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বিটেন জানিয়েছে তার দুই হাত হারানোর কাহিনী। এক সময় শ্যামপুর এলাকায় প্রাইভেট কার চালাতো বিটেন। পুরান ঢাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী হযরতের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তার। হযরতের সাথে বহু সন্ত্রাসী কর্মকা-ের রেকর্ড আছে তার। শ্যামপুর এলাকায় তখন হযরতের প্রতিপক্ষ গ্রুপও ছিল শক্তিশালী। ১৯৯৮ সালে হযরতকে ধরে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষ গ্রুপের সন্ত্রাসীরা। ওই সময় বিটেনও ছিল হযরতের সাথে। সন্ত্রাসীরা হযরতকে গুলী করে হত্যা করে। আর সহযোগী বিটেনের দুই হাত কেটে ফেলে। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়। বহু চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে পঙ্গুত্ব অবস্থায় ঘরে ফিরে আসে বিটেন। সহযোগী সন্ত্রাসীদের অনেকেই মারা যাওয়ায় সন্ত্রাসী কর্মকা-ে সুবিধা করতে পারে না। বেছে নেয় মাদক ব্যবসা। গত ৯ জানুয়ারি কদমতলী থানা পুলিশ মাদক ব্যবসায়ী বিটেনকে গ্রেফতার করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বিটেনের অতীতের অনেক কিছু বেরিয়ে আসে। কদমতলী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী জানান, পঙ্গুত্বকে পুঁজি করে মাদক ব্যবসা করে আসছিল বিটেন। তার অত্যাচারে অনেকেই অতিষ্ঠ।
আরেকজনের নাম খোকন। এক সময়ের সিরিয়াল কিলার খোকনের ভয়ে কাঁপতো পুরো শ্যামপুর-জুরাইন এলাকা। ২০ বছর আগে শ্যামপুরে খোকন গ্রুপের প্রতিপক্ষ ছিল নবী গ্রুপ। কথায় কথায় এই দুই পক্ষ বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হতো। এদের ক্রসফায়ারে পড়ে দাদী-নাতী নিহত হয়। স্থানীয় ভুক্তভোগিরা জানান, সে সময় নবী বা খোকনের নাম শুনলেই মানুষ অজানা আতঙ্কে ভুগতো। শ্যামপুর এলাকায় দখলদারিত্ব ও চাঁদাবাজি ছিল নবী ও খোকন গ্রুপের প্রধান কাজ। নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে একবার নবী গ্রুপ খোকন ও তার ছোট ভাই ওয়াসিমকে ধরে নিয়ে গিয়ে দু’জনেরই চার হাত কেটে ফেলে। প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে খোকন গ্রুপ। তিন মাসের মাথায় খোকনের জালে ধরা পড়ে নবী। খোকন নবীর এক হাত কেটে ফেলে। হাত কাটাকাটির ঘটনায় মামলা হয়। উভয়পক্ষ জেল খাটে। কিন্তু তারপরেও থেমে থাকেনি কোনো পক্ষ। এক সময়ের ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী খোকনও এখন মাদক ব্যবসায়ী। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে অতীতের সব কাহিনী জানায়। কদমতলী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী জানান, হাত হারানোসহ মামলা মোকদ্দমা করতে করতে সবকিছু হারালেও খোকনের অপরাধপ্রবণতা মোটেও কমেনি। বরং হাতের কারণে অন্যান্য কার্যক্রম করতে না পারায় সে হম্বিতম্বি দেখাতে থাকে। কিন্তু সেই দাপট আর আগের মতো কাজে আসেনি। মাদক ব্যবসায় নেমে পড়ে সে। মাদক ব্যবসা করতে গিয়েও খোকন বহুবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। যতো বার সে ধরা পড়েছে ততোবারই নিজের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে ক্ষমা চেয়েছে, অঙ্গীকার করেছে। বলেছে, স্যার এই বারই শেষ, আর ভুল করবো না। কিন্তু ছাড়া পেয়ে পুলিশকে দেয়া সে প্রতিশ্রুতির কথা আর মনে রাখেনি। এই দুই মাদক ব্যবসায়ী সম্পর্কে ওসি বলেন, এদের সম্পর্কে মানুষকে বোঝানো কতো যে মুশকিল। পঙ্গু বলে মানুষ এদেরকে সহজেই ভালো মানুষ বলে বিশ্বাস করে ফেলে। অথচ এদের অতীত কতো ভয়ঙ্কর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।