Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করে কর্পোরেটের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে তাদের জমি

| প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন (আরাকান) রাজ্যের তিনটি শহরে রোহিঙ্গাদের মালিকানাধীন দেড় হাজার ভবন ভেঙে দেয়া হয়েছে। অবৈধ উচ্ছেদের নামে এসব ভবন গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ঘরে ঘরে গিয়ে জরিপ চালিয়ে নাম নিবন্ধন করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। সহিংসতার ভয়ে পালিয়ে থাকা হাজার হাজার রোহিঙ্গা এ জরিপ থেকে বাদ পড়ছেন। এসব পদক্ষেপের ফলে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গারা নিজ বাড়িঘরে ফিরে যেতে পারবেন না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মিয়ানমারের এ সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। রাখাইন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নে পুকে দেয়া এক চিঠিতে জাতিসংঘের রাখাইন বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা চেরিস কার্টার বলেছেন, সহিংসতা বন্ধের পর পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গারা যাতে নিজ গৃহে ফিরে যেতে না পারেন সে জন্যই এমন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এদিকে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কর্মকান্ডের কারণে রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করে তাদের জমি কর্পোরেটের হাতে তুলে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ না দিয়ে বরং নির্যাতনের হুমকি দেয়া হচ্ছে। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, মিয়ানমারে এ প্রক্রিয়া নতুন নয়। বরং নব্বইয়ের দশকে শুরু হয়েছে। তবে সেনাবাহিনীর অভিযান চলাকালে রোহিঙ্গা উচ্ছেদের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাবাহিনী ইতিমধ্যে রোহিঙ্গাদের মালিকানাধীন ১২ লাখ ৬৮ হাজার ৭৭ হেক্টর (৩১ লাখ একর) জমি কর্পোরেটদের বরাদ্দ দিয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক বিষয় সমন্বয়ের দফতর ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউমেনিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ইউএনওসিএইচএ) সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছে, রোহিঙ্গাদের শতাধিক ভবন ইতিমধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের মালিকানাধীন আরও ৮১৯টি ভবন গুঁড়িয়ে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। এরমধ্যে ৬৯৬টি ভবন হল সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাসগৃহ। অন্যদিকে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের দেড় হাজার ভবন ভেঙে দিয়েছে মিয়ানমার। রাখাইন রাজ্যের তিনটি শহরে রোহিঙ্গাদের আবাস। এ তিনটি শহর হল- রেদিডং, বুথিডং ও মংডু। এই তিন শহরে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।
 গত বছরের ৯ অক্টোবর সীমান্ত চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলায় মিয়ানমারের ৯ জন বিজিপি সদস্য নিহত হওয়ার জের ধরে দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে অভিযান শুরু করে। অভিযানে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও নারীদের ...অভিযোগ পাওয়া যায়। সম্প্রতি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি’র বিশেষ দূত চাও টিন বাংলাদেশ সফর করে সম্প্রতি আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে যাচাই-বাছাই করে দেখার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় জরিপ ও উচ্ছেদ অভিযানের কারণে প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের রাখাইন বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা চেরিস কার্টার তার চিঠিতে বলেন, রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর ভেঙে ফেলা এবং এ সময়ে রোহিঙ্গাদের খানা জরিপ পরিচালনা করা উস্কানিমূলক। রোহিঙ্গাদের নজরে রাখার জন্য প্রতিবছরই খানা জরিপ পরিচালনা করা হয়। তবে সেই জরিপ শুরু হয় জানুয়ারি মাসে। কিন্তু এ বছর জরিপ শুরু করা হয়েছে নভেম্বরে। অর্থাৎ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় সেনা অভিযান শুরুর পর। অভিযান শুরুর সময়েই দমন-পীড়নের ভয়ে অন্তত ৮০ হাজার রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। তাদের একটা বড় অংশ আশ্রয় নিয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশে। তাছাড়া গোটা রাখাইন রাজ্যে এমন জরিপ হয়নি। এ জরিপ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত তিন শহরেই সীমিত। যারা পালিয়ে না এসে মিয়ানমারের কোনো স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের নামও জরিপ তালিকায় থাকবে না। এটা রোহিঙ্গা সংকটকে আরও জটিল করে তুলেছে। গার্ডিয়ান, বিবিসি, রয়টার্স। 



 

Show all comments
  • জামান চৌধুরী ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১০:৩৬ এএম says : 0
    এই সব খবর কি জাতিসংঘ দেখতে বা শুনতে পায় না ?
    Total Reply(0) Reply
  • Fakhrul Islam ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১০:৩৭ এএম says : 0
    গজব আসবেই একদিন তোদের উপর
    Total Reply(0) Reply
  • Md Mostafiz ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১০:৩৭ এএম says : 0
    Yea Allah safe rohinga Muslims
    Total Reply(0) Reply
  • Sha Alam ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:৫৮ পিএম says : 0
    রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে জাতিসংঘকে কার্যকরী ভুমিকা নিতে হবে
    Total Reply(0) Reply
  • মেহজাদ গালিব ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:৫৯ পিএম says : 1
    মুসলিম দেশগুলোকে বিশ্বসন্ত্রাসী মায়ানমারের সাথে কুটনৈতিক সর্ম্পক ছিন্ন করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • জুয়েল ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১:০১ পিএম says : 0
    এখন মানবাধিকার সংস্থাগুলো নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply
  • selina ১৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ৬:৫৪ পিএম says : 0
    take concerted strong step by UN ,OIC , EU and so on world organization without delay to save them .
    Total Reply(0) Reply
  • আঃরহমান ২০ জানুয়ারি, ২০১৭, ৯:৪৩ পিএম says : 0
    রোহিঙ্গা মুসলমানদের অধিকার ফিরিয়ে দিক মায়ানমারের সরকার।
    Total Reply(0) Reply
  • ২৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ৮:৫২ এএম says : 0
    মিয়ানমার সরকারের উচিত তাদের অধীকার ফিরিয়ে দেয়া।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ