Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কৌশলগত যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ

কূটনীতির সফলতার বছর ২০১৬

| প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আহমদ আতিক : বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর সাথে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করছে বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, সার্ক, ওআইসি, ইইউ, জাতিসংঘ, আসিয়ান, ওআইসিসহ বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জোটের সাথেও ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করছে বাংলাদেশ। বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দেশ চীনের সাথে রয়েছে কৌশলগত অবস্থান। ভারতের সাথে ঐতিহাসিক। রাশিয়ার সাথে নবযুগের সূচনা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো অবস্থান। মুসলিম দেশ এবং ইউরোপের সাথেও সম্পর্কের উচ্চতা বাড়ছে দিন দিন। পাকিস্তানের সাথে ঝগড়া চললেও সম্পর্ক ছিন্ন নয়। এভাবে বিশ্বের বিভিন্ন শক্তি বলয়ের সাথে ভিন্ন মাত্রার সম্পর্ক রক্ষা করতে গিয়ে নীতি-নির্ধারকরা বাংলাদেশেকে কৌশলগত কূটনীতির যুগে নিয়ে যাচ্ছেন বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। সেই সাথে ২০১৭ খ্রিস্ট্রীয় বছরে এসব সম্পর্কের আরও উন্নয়ন হবে বলে আশা প্রকাশ করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
এছাড়া ২০১৬ সালে গুলশান হামলার মতো জঙ্গি হামলা হয়। যা আন্তর্জাতিক পরিম-লে দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্নতা তৈরি করে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশও সার্ক সম্মেলন বর্জন করে। সউদি নেতৃত্বাধীন জোটে সৈন্য পাঠানোর ঘোষণাও ছিল ব্যাপক আলোচিত। রোহিঙ্গা কূটনীতিও ছিল এ বছরের উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই বছর উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, কূটনৈতিক সফলতার বছর ২০১৬।
গত বছরের অক্টোবর মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরের সময়ে দুই দেশ এ সম্পর্ককে কৌশলগত সম্পর্কের উচ্চতায় নিয়ে গেছে। নতুন বছরে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক আরো উন্নয়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভূ-রাজনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ বাণিজ্য, যোগাযোগ এবং উন্নয়ন বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়েছে। তবে শুধু যে সরকারি পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ছে তাই নয়, দুই দেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের মধ্যেও সম্পর্ক গভীর করার একটি প্রয়াস দেখা যাচ্ছে, যা সামনের দিনগুলোতে আরো বেশি দেখা যাবে। চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরের সময়ে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলারের ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করা হয়। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ছিল বাণিজ্যিক ঋণ চুক্তি এবং প্রকল্প সহায়তা। আর এসব চুক্তির অর্থের পরিমাণও বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ইতোমধ্যে চীনের কাছ থেকে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর জন্য দুটি সাবমেরিন আমদানি করা হয়েছে। যা বাংলাদেশের অহংকারের বিষয় হলেও প্রতিবেশীদের গাত্রদাহ তৈরি করেছে।
পিছিয়ে নেই ভারতও। ভারত বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। বিজিবিসহ বিভিন্ন বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। কক্ষপথে উপগ্রহ পাঠাতে সহায়তা করছে। পানি সমস্যা ও সীমান্ত সমস্যার সমাধানে সক্রিয়। দিচ্ছে আর্থিক সহায়তাও। ভারত পেয়েছে ট্রানজিট। আকাশপথেও তারা আরো সুবিধা দাবি করছে। যদিও দেশের অভ্যন্তরে এ নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।
ভারতের চাহিদার অধিকাংশই পূরণ হলেও বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক ভারত স্বাভাবিকভাবে নেয়নি। মুখে তারা যদিও বলে এ নিয়ে ভারতের মাথাব্যথা নয়, মুখে এমন কথা বললেও বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভারতের কোনো প্রতিরক্ষামন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসেন উচ্চ পর্যায়ের সামরিক প্রতিনিধিদলসহ। চীনের  প্রেসিডেন্টের এই সফর ও বাংলাদেশ-চীনের ঐতিহাসিক সম্পর্ক নিয়ে ভারতের ঈর্ষা আছে বলে তখন জানিয়েছিল চীনের গ্লোবাল টাইমস পত্রিকা। তারপর বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হয়। তবে বাংলাদেশ সফলতার সঙ্গে চীন ও ভারতকে ব্যালান্স করতে সক্ষম হয় বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
প্রথম থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতসহ বৃহৎ শক্তিগুলো চীনের প্রেসিডেন্টের এই সফরকে গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছিল। বিশেষ করে ভারত এই সফরকে কীভাবে নেবে তা নিয়ে চলে জোর আলোচনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, চীন বাংলাদেশকে অকাঠামো, প্রযুক্তি, বাণিজ্য, ঋণের ক্ষেত্রে যতটা সহায়তা করতে পারবে ততটা আর কেউ পারবে না। আর এতে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থার যদি উন্নতি হয়, তাদের ভোগ এবং ক্রয় ক্ষমতা যদি বাড়ে, তাতে ভারতেরও লাভ। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে ভারতের যে সম্পর্ক তাতে আস্থার জায়গা বেশ দৃঢ়।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের মতে, ভারতের সঙ্গে আমাদের রক্তের সম্পর্ক। আর চীনের সঙ্গে কৌশলগত সহযোগিতার সম্পর্ক। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনো কারণ নাই। এখন চীন শুধু পাকিস্তানের বন্ধু নয় বাংলাদেশ ও ভারতেরও বন্ধু। বাংলাদেশ এখন তিন পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের সঙ্গে যে ভারসাম্যমূলক সম্পর্কের দিকে যাচ্ছে, তা পররাষ্ট্রনীতির ইতিবাচক দিক। তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সালে বাংলাদেশের নির্বাচনের পক্ষে ভারত ও রাশিয়ার সঙ্গে চীনও অবস্থান নিয়েছিল।
বাংলাদেশ ও চীনের বিস্তৃত ও গভীর সামরিক সম্পর্কে ভারতের উদ্বিগ্নের কারণ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ ও চীনের বিস্তৃত গভীর সামরিক সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবেই ভারতের কিছু উদ্বেগ তৈরি করতে পারে। কিন্তু কয়েকটি কারণে দিল্লির এ উদ্বেগকে ভিত্তিহীন বলা যেতে পারে।
তিনি বলেন, প্রথমত, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী দেশের শাসন পদ্ধতির অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বাহিনীগুলোর অস্ত্র দরকার, আর সুবিধাজনক দামে অস্ত্র ক্রয়ের সুপরিচিত উৎস চীন। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশের সব সরকারেরই বাহিনীগুলোকে সরঞ্জামাদি দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের পাশে রয়েছে মিয়ানমার। এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে উত্তেজনার পেছনে রোহিঙ্গাই একমাত্র ইস্যু নয়। ২০০৮ সালে সমুদ্রসীমার বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্কে বেশ উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল, যা শান্ত করার ক্ষেত্রে চীন ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছিল। এ বিষয়গুলো সামনে রেখে বাংলাদেশের সামরিক প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে চীন সবচেয়ে ভালো সহায়তাকারী হতে পারে।
সাবেক কূটনীতিক এবং রাষ্ট্রদূত লিয়াকত আলী চৌধুরী বলেন, অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশের একটি ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব আছে। বাংলাদেশে এই অঞ্চলের যে কানেকটিভিটির কথা বলা হচ্ছে, তার ‘হাব’ হয়ে উঠবে কেন্দ্রে অবস্থানের কারণে। আর সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তবে চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কতে মার্কিনীরাও যে খুশি নয় তাও তাদের বিভিন্ন মন্তব্যে প্রকাশ পায়। সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের শহর কলিকাতা সফরকালে ভারতীয় পত্রিকা দ্য হিন্দুর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। সেখানে তিনি বলেন, বাংলাদেশে চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ভূমিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়েও যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন নয়। কারণ, আমাদের স্বার্থ সত্যিই একই সূত্রে গাঁথা। তবে চীনা বিনিয়োগ নিয়ে বার্নিকাট বলেন, আমরা বিশ্বজুড়ে প্রত্যেক প্লেয়ারের কাছ থেকে যেটি চাই সেটি হলো, আমরা এআইআইবি’র (এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক) কথা বলি বা চীনা সরকারের কথাই বলি, দয়া করে দায়িত্বশীল প্লেয়ার হোন।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের মধ্য দিয়ে ঢাকা-মস্কো সম্পর্কে নতুন গতি সঞ্চারিত হয়েছে। গত জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীর মস্কো সফরের ফলে বাংলাদেশের সম্পর্ক গভীরতর হয় রাশিয়ার। মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই রাশিয়া বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। বাংলাদেশ রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় পাবনার রূপপুরে এক হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে সমঝোতা চুক্তি করেছে। সবকিছু ঠিকভাবে এগুলে ২০১৮-এর মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ সম্পন্ন হবে। এছাড়া বিগত জাতীয় নির্বাচনের পর থেকেই বর্তমান সরকারকেও অব্যাহত সমর্থন দিচ্ছে রাশিয়া। তাছাড়া এদেশের বিভিন্ন বাহিনীর জন্য বিশেষ করে বিমানবাহিনীর মিগ জঙ্গিবিমান থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন অস্ত্রের যোগান দিচ্ছে রাশিয়া।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গুলশান হামলার ঘটনায় সরকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক সঙ্কটে পড়ে যায়। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় সার্ক সম্মেলন বর্জন করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশ ভারত দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এমন সমালোচনাও উঠেছিল। সউদী নেতৃত্বাধীন জোটে সৈন্য পাঠানো নিয়েও ছিল সমালোচনার ঝড়। বিশ্লেষকরা বলছেন, সউদি আরব বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই তার বিপক্ষে যাওয়া যাবে না আবার বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থও অক্ষুণœ থাকতে হবে। বাংলাদেশ কার্যকরভাবে এই কূটনৈতিক চাপ সামলে নিয়েছে। রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বরাবরই সোচ্চার থেকেছে। মিয়ানমার পুনরায় রোহিঙ্গাদের নির্যাতন শুরু করলে জাতিসংঘ সীমান্ত খুলে দিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানায়। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বোঝাতে সক্ষম হয় যে ইতিমধ্যে পাঁচ লাখের ওপরে রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। আর আশ্রয় দেয়ার মতো অবস্থা নেই। এ নিয়ে কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি কূটনীতিকদের আহ্বান জানান রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে। মূলত বাংলাদেশ চাপ সৃষ্টি করায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কোণঠাসা হয়ে পড়ে মিয়ানমার। ফলে আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় মিয়ানমারের রাজধানীতে। এরপর ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি বাংলাদেশে এসে সরেজমিনে রোহিঙ্গাদের দেখতে কক্সবাজার যান। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে অবশেষে ঢাকায় প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার একজন রোহিঙ্গাবিষয়ক আলোচনার জন্য ঢাকা আসবে বলে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে সরকারকে জানানো হয়েছে।  
অন্যদিকে, চীনা প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর সরকারের পরীক্ষিত বন্ধু ভারত ভালোভাবে নেয়নি বলে গণমাধ্যমে সংবাদ এসেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সফলভাবে চীন ও ভারতকে ‘ব্যালান্স’ করেছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
গুলশানে জঙ্গি হামলার পর বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক সোচ্চার হয় দাতা দেশ ও সংস্থাগুলো। নিরাপত্তা নিয়ে তারা নানা শর্ত আরোপ করে। অস্ট্রেলীয় সরকার তো তাদের স্বেচ্ছাসেবীদের ফিরিয়েও নিয়ে গিয়েছিল। বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত কর্মীদেরও চিঠি দিয়ে ফিরিয়ে নিয়েছিল স্পেন। হামলায় জাপানী নাগরিক নিহত হওয়ায় মনে করা হচ্ছিল দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকা এ দেশ ছেড়ে চলে যেতে পারে। কিন্তু অব্যাহত কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কারণে সমস্ত খারাপ আশঙ্কাই আর বাস্তবে রূপ নেয়নি। গুলশান হামলার কিছুদিনের মধ্যেই জাইকার প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করেন। বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্রিফ করে ঘটনার পূর্ণ ব্যাখ্যা দেয়। এছাড়া নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপও বিভিন্ন সময় কূটনীতিকদের জানানো হয়। সব মিলিয়ে দ্রুতই পরিস্থিতি সরকারের অনুকূলে আসে।
এছাড়া সউদী নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী জোটে যোগ দেয়া ও সৈন্য পাঠানো নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কও ভালোভাবেই সামাল দিয়েছে বাংলাদেশ। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে বারবার বিরূপ মন্তব্য করা পাকিস্তানে সার্ক সম্মেলনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্তও প্রশংসিতই হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।



 

Show all comments
  • Sujana ৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১:২৩ এএম says : 0
    We have to very careful about this.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কূটনীতি

২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ