Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুস্থ রাজনীতির ‘আইকন’ হলেন আইভী-সাখাওয়াত!

| প্রকাশের সময় : ১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মো: হাফিজুর রহমান মিন্টু, নারায়ণগঞ্জ থেকে : বাংলাদেশে নির্বাচন মানে সংঘাতময় রাজনীতি, সহিংসতা অনিবার্য হলেও সেই ধ্যান-ধারণা পুরোই পাল্টে দিয়েছে সদস্য অনুষ্ঠিত বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। সুস্থ ধারা রাজনীতির মাধ্যমেও যে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব তা প্রমাণ করে এখন গোটা দেশের রাজনীতিবিদসহ বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দের কাছে সুস্থ রাজনীতির ‘আইকন’ বনে গেছেন নাসিক নির্বাচনে বিজয়ী মেয়র আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা: সেলিনা হায়াত আইভী এবং পরাজিত বিএনপির মেয়র প্রার্থী অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান।
নির্বাচনের শুরুতে প্রথমে বিএনপির মেয়র প্রার্থী অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা: সেলিনা হায়াত আইভীর বিরুদ্ধে মুখে নানা অভিযোগ করলেও নীরব ছিলেন আইভী। পরে বিভিন্ন টেলিভিশনে টকশোতে যোগ দিয়ে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন আইভী-সাখাওয়াত। কিন্তু সাখাওয়াত বরাবরই তাকেসহ তার দলীয় নেতাকর্মীদের হুমকি-ধামকি দেয়ার অভিযোগ উথাপন করলেও বাস্তবে তেমন কোন দৃশ্য পরিলক্ষিত হয় নাই।
উল্টো নির্বাচনের পূর্বে একটি অনুষ্ঠানে আইভী সাখাওয়াতকে আহŸান জানিয়ে বলেছিলেন, আসুন আমরা এক প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে জনগণের কাছে ভোট প্রার্থণা করি। জনগণ যাকে নির্বাচিত করবেন আমরা তাকেই মেনে নিব। এছাড়া আইভী সেদিন আরো বলেছিলেন, যদি নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হন তাহলে পরেরদিন সাখাওয়াতের বাসায় নাস্তা খেতে যাবেন। আর তিনি যদি পরাজিত হন তাহলে সাখাওয়াত তার বাসায় মিষ্টি নিয়ে যাবেন।
দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলেও অত্যন্ত সুষ্ঠু পরিবেশে নজিরবিহীন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। যা কিনা বাংলাদেশে এ যাবত কালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মধ্যে একটি অন্যতম। আর আগামী নির্বাচনের জন্য মডেল।
তারপর প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী নির্বাচনের পরদিন ২৩ ডিসেম্বর সকালে শহরের খানপুরে বিএনপির পরাজিত মেয়র অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খানের বাসায় মিষ্টি নিয়ে যান নির্বাচিত মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভী। একসাথে নাস্তা করেন। জয় পরাজয় মেনে নিয়ে নগর উন্নয়নে একে অপরকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
এরপর সুস্থধারার রাজনীতি বিকাশে আইভী-সাখাওয়াত সকলের কাছে ‘আইকন’ হয়ে যান। কেননা, বাংলাদেশের ইতিহাসে নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর এত সহজেই পরাজয় স্বীকার করে নেয়া, এমনকি পরাজিত প্রার্থীর বাসায় গিয়ে বিজয়ী প্রার্থীর নাস্তা করা এক বিরল দৃষ্টান্ত। যা কিনা এই দু’জন করে দেখিয়েছেন। আর এখন তা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের অনুকরণ করা উচিত বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ