Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নেতৃত্বে নারীর প্রতিনিধিত্ব কমছে - দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নেই -ব্রি: সাখাওয়াত

প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নেই। এখানে এখন অর্থ এবং পেশী শক্তির প্রদর্শন চলছে।
চলছে নমিনেশন বাণিজ্য। ১০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে নমিনেশন। স্থানীয় সরকারে নারীদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রান্তিক পর্যায়ে নারীদের অংশগ্রহণ নেই। সেটা না থাকলে, হঠাৎ করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আসবে না। নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ না বাড়ার কারণ সম্পর্কে সমীক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তিনি।
গতকাল (রোববার) সকালে রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গর্ভন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের আয়োজনে ‘স্থানীয় সরকারে নারীর অধিকতর সম্পৃক্ততা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় স্থানীয় সরকারে নারীর প্রতিনিধিত্ব কমছে। এক্ষেত্রে তারা পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বাধার মুখোমুখি হচ্ছেন বলে উল্লেখ করা হয়।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ‘ইনস্টিটিউট অব গর্ভন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ভিসিটিং ফেলো মাহিন সুলতান জানিয়েছেন, ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সাধারণ ও সংরক্ষিত ২ ক্ষেত্রেই নারীর অংশগ্রহণ কমেছে। আবার নারীরা পুনঃনির্বাচনেও অংশ নিচ্ছেন না।
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে দেশের ৪৮০টি উপজেলায় ২ হাজার ৯০০ নারী স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেন, যা ২০১৪ সালের ৪৫৮টি উপজেলায় কমে ১ হাজার ৫০৭ জনে নেমেছে।
বর্তমানে পারিবারিক সমস্যা কম থাকলেও সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে নির্বাচনে নারীর অংশগ্রহণের বাধা হিসেবে দাঁড়াচ্ছে।
বৈঠকে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমানে স্থানীয় সরকার ‘আইসিইউ’তে (ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট) রয়েছে। দেশে গণতন্ত্র না থাকলে স্থানীয় সরকারে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কী বলবো! এখন ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিনিধিরা অনেকেই আর গ্রামের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। অনেক চেয়ারম্যান প্রতিনিধি রয়েছেন, যারা শুধু ঢাকায় নয়, বিদেশেও থাকেন।
স্থানীয় সরকারে নারীদের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে তিনি বলেন, একজন প্রতিনিধির খরচ রয়েছে। কেউ তার বাড়িতে গেলে তাকে আপ্যায়ন করতে হয়। ফোনের খরচ রয়েছে। কোথাও যাওয়ার খরচ রয়েছে। অথচ তার সম্মানী মাত্র ১৫০০ টাকা। এছাড়াও সামাজিক আচারের মধ্যে নারীর পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করাও বেশ চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিনি।
জাতীয় মহিলা পরিষদের সভানেত্রী আয়েশা খানম বলেন, বর্তমানে যে পরিবারতন্ত্র রয়েছে সেখানে নারীর ক্ষমতায়নেও পুরুষের প্রভাব থাকে। রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে যে কাঠামো সেখানে নারীদের অবস্থান নিশ্চিত হয়নি। বর্তমানে আমলা এবং সংসদ সদস্যরা ক্ষমতা কব্জায় রাখায় স্থানীয় সরকারই দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন তিনি।
প্রাক্তন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, প্রধান ২ রাজনৈতিক দলেই অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নেই। স্থানীয় সরকার ছাড়া কোনো দেশেরই উন্নয়ন হতে পারে না। ইউনিয়ন পরিষদে নারীদের নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন তিনি। ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গর্ভন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক সুলতান হাফিজ রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন রাজনীতিবিদ জোনায়েদ সাকি, কাফি কামাল, এশিয়া ফাউন্ডেশনের দেশীয় প্রতিনিধি হাসান এম মজুমদার প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নেতৃত্বে নারীর প্রতিনিধিত্ব কমছে - দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নেই -ব্রি: সাখাওয়াত
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ