Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এক রান আউটে শেষ বাংলাদেশ!

| প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নিউজিল্যান্ড : ২৫১/১০ (৫০.০ ওভারে)
বাংলাদেশ : ১৮৪/১০ (৪২.৪ ওভারে)
ফল : বাংলাদেশ ৬৭ রানে পরাজিত
শামীম চৌধুরী
যেন ২ মাস আগে চট্টগ্রাম টেস্টের ছবিটাই দেখেছে দর্শক নেলসনে! ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই টেস্টে বাংলাদেশের তিন ক্রিকেটারের অভিষেক (মিরাজ, রুম্মান, রাববী) দেখেছে বিশ্বÑ নেলসনে অনুষ্ঠিত ওয়ানডেতেও অভিষেক হলো তিন জনের (সোহান, শুভাশিষ, তানবীর)! চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনে এক দমকা হওয়ায় ২৭ রানে উড়ে গেছে শেষ ৫ উইকেট-লিডের সম্ভাবনার অপমৃত্যুর সঙ্গে জয়ের স্বপ্ন দেখা ম্যাচে হেরেছে ওই টেস্টে ২২ রানে! নেলসনেও জয়ের স্বপ্ন দেখানো ম্যাচে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ দল। গতকাল ভূমিকম্প এনেছে আঘাত নিউজিল্যান্ডের তিনটি শহরে। তবে ক্রাইস্টচার্চ, ওয়েলিংটন ও কায়কোরা শহরের কাছে রিকটার স্কেলে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্পকে ছাড়িয়ে গেছে নেলসনের সাক্সটন ওভালের ২২ গজি পিচে ওঠা ভুমিকম্প! নিউজিল্যান্ড বোলারদের তোপ থেকে এর উৎপত্তি হয়নি, বরং বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরাই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল করেছে তৈরি! দ্বিতীয় উইকেট জুটির ৭৪ রানে জয়টা যখন হাতের নাগালে বলে মনে হচ্ছিল, ৯ উইকেট হাতে আছে বলেই ১৬২ বলে ১৪৭ রানের টার্গেটটা মামুলি বলেই ধরে নিয়েছে সবাই, তখনই এক দমকা হাওয়ায় সব লÐভÐ! সাবিবরের এক রান আউটেই সর্বনাশ! ১০৫/১ থেকে স্কোর থেমেছে ১৮৪ তে, মাত্র ৭৯ রানে পতন ঘটেছে ৯ উইকেট! ৪৪ বল হাতে থাকতে অল আউট বাংলাদেশ! প্রথম ম্যাচে ৩৪২ চেজ করতে এসে বাংলাদেশ হেরেছে ৭৭ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে ২৫২ তাড়া করতে নেমে ৬৭ রানে হেরে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজে ট্রফিটা স্বাগতিকদের হাতে দিয়ে দিল মাশরাফিরা।
ক্রাইস্টচার্চের হেগলি ওভালে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা ভুগেছে নিউজিল্যান্ড বোলারদের শর্ট বলে। নেলসনে সেখানে আত্মাহুতির মিছিল। বাংলাদেশ বোলারদের বিরুদ্ধে এদিন কেউ অনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের অপবাদ দিতে পারবে না। ক্রাইস্টচার্চের মতো রান পাহাড়ে চাপা পড়তে হয়নি বাংলাদেশকে। মাশরাফি (৩/৪৯), সাকিব (২/৪৫), তাসকিনের (২/৪৫) বোলিংয়ে এদিন ভালই ধুঁকেছে সেই নিউজিল্যান্ড।
নেলসনে ২১ মাস আগে ৩১৯ চেজ করে জেতার অতীত আছে বলেই ২৫২ তাড়া করে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে জয় অসম্ভব কিছুই নয় বলে ধরে নিয়েছিলেন সবাই। ইনিংসের ২য় ওভারে সাউদিকে পয়েন্ট, স্কোয়ার লেগ এবং ফাইন লেগ দিয়ে তিন তিনটি বাউন্ডারিতে ছন্দে ফেরার আভাস দিয়ে তামীম থেমেছেন ১৬তে, সেই সাউদিকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে শর্ট কভারে তামীম ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসার পরও দূর্ভাবনায় পড়তে দেননি ইমরুল-সাব্বির জুটি। ১১ এবং ২৫ রানের মাথায় ২ বার বেঁচে যাওয়ার পর নিজেকে সংযত করেছেন ইমরুল। এক ম্যাচ পর প্রিয় পজিশন তিন নম্বরে ফিরে ব্যাটিংয়ে সাবলীল সাব্বির। অথচ, তার কলে সিঙ্গলের দৌড় দেয়া ইমরুলকে না থামিয়ে উল্টো নিজেই পিচের মাঝপথে দিলেন উল্টো পথে দৌড়। ৩৮ রানের মাথায় রান আউটে কাটা পড়ে শুধু নিজের বড় ইনিংসের পথেই সম্ভাবনার অপমৃত্যু ডেকে আনেননি, দলের বিপর্যয়ও আনলেন ডেকে সাব্বির। ওই আউটে আতঙ্কগ্রস্থ বাংলাদেশকে চেপে ধরলো নিউজিল্যান্ড।
ফার্গুসনের ইয়র্কারে মাহামুদুল্লাহ’র বোল্ড আউটটি বাদ দিলে অন্য উইকেটগুলো নিউজিল্যান্ডকে উপহারই দিয়ে এসেছে বাংলাদেশ দল। উইকেটগুলো দেয়ার দৃশ্য নিউজিল্যান্ড বোলার ফিল্ডারদের কাছেও হাসি-ঠাট্টার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামস না চাইতে উইকেট পেয়ে হেসেছেন তিন তিনবার (৩/২২)। শর্ট এবং ওয়াইড ডেলিভারি দিয়ে তিনি নিজেও উইকেটের স্বপ্ন দেখেননি, অথচ এমন এক ডেলিভারিতে মেজাজ হারিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ প্র্যাকটিসে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন সাকিব (৭)! সাকিবের দেখা-দেখি আগের ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান মোসাদ্দেক (৩) পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে এসেছেন। অল রাউন্ডার কোটায় অভিষেক হয়ে বোলিংয়ে রাখতে পারেননি অবদান এই লেগ স্পিনার (০/৪৭)। তার ব্যাটিংজ্ঞান নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। কারন, উইলিয়ামসের ডেলিভারি না বুঝেই যে পপিন ক্রিজ ছেড়ে বাইরে এসে স্ট্যাম্পিংয়ে কাঁটা পড়ার দৃশ্য দেখতে হয়েছে তাকে (২)। কাউকে না কাউকে ইনিংস তো টেনে নিতে হবে। সে দীক্ষাটা দিয়েছেন ২ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের ২ ব্যাটসম্যান। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে ফেলেছে নিউজিল্যান্ড ওপেনার ল্যাথাম (১৩৭) এবং কলিন মুনরো (৮৭)। বৃহস্পতিবার সেখানে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৬ বছর ৯ মাস পর ওয়ানডে প্রত্যাবর্তন ম্যাচে নিল ব্রæমের অভিষেক সেঞ্চুরিটি (১০৯ নট আউট) দায়িত্ববোধের পরিচায়ক। তা দেখেও শেখেননি সাকিব, ইমরুল। প্রথম ম্যাচে ৫৯এ থেমেছেন সাকিব আত্মঘাতি শট খেলে, গতকাল সাউদির শর্ট বলে গালিতে ক্যাচ দিয়ে ইমরুলও ফিরেছেন সেই ৫৯এ! প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৩১ বল হাতে রেখে অল আউট, এই ম্যাচে সেখানে ৪৪ বল না খেলার আফসোসটা হচ্ছে সঙ্গী!



 

Show all comments
  • Ahmed Khaled ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১১:৫২ এএম says : 0
    এখন মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ দল হোয়াইট ওয়াশ (black wash) হবে। কারণ বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন চরম রাজনিতির শিকার। এদের একটা উচিত শিক্ষা হওয়ার দরকার। মেধাবী দের না নিয়ে অযোগ্য দের দলে নেওয়া হচ্ছে। ধিক্কার জানাই এদের। বর্তমান ক্রিকেট নির্বাচকরা দেশ প্রেমিক না দেশদ্রহী বোঝা যাচ্ছে না। তবে বুঝতে পারছি তারা নাসির, নাফিস ও রুবেলদের মত খেলোয়াড় দ্রহী
    Total Reply(0) Reply
  • Md Ariful Islam ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১১:৫৪ এএম says : 0
    দেখে মনে হছেচ দৌড় প্রতিযোগীতা দিছেচ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ