মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ক্যাম্পানিয়া আঞ্চলিক প্রশাসন সরকারি উদ্যোগে তৈরি করেছে আন্ডারওয়াটার পার্ক
ইনকিলাব ডেস্ক : ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় নেপলস শহরের কাছে এক চিলতে দ্বীপ। এটি ঘিরেই যুগ যুগ ধরে ঘনীভূত হয়েছে রহস্যের জাল। গাইওলার বর্তমান মালিক ক্যাম্পানিয়া আঞ্চলিক প্রশাসন। সরকারি উদ্যোগে তৈরি হয়েছে গাইওলা আন্ডারওয়াটার পার্ক। কথিত আছে, উপকূল ঘেঁষা ক্ষুদে এই দ্বীপটি কিনলে দুর্ভাগ্য নাকি পিছু ছাড়ে না। আর এই দ্বীপে গেলে নাকি মানুষ আর ফিরেও আসে না। রহস্যে ঘেরা এই দ্বীপটির নাম ইসোলা লা গাইওলা। নেপলস উপকূল থেকে সাঁতরেই পৌঁছা যায় ইসোলা লা গাইওলাতে। একরত্তি ভূখ-টির ঐতিহাসিক গুরুত্ব অবশ্য কম নয়। রোমানরা এর নাম দিয়েছিল ইউপ্লিয়া আইল্যান্ড। দ্বীপের ওপর তৈরি করেছিল দেবী ভেনাসের মন্দির। কালের আবর্তে সেটা ধ্বংস হয়ে গেছে। বিখ্যাত রোমান কবি ভার্জিলও এই দ্বীপকে ভালোবেসেছিলেন। এখানে বসেই তিনি তার অনুগামীদের প্রশিক্ষণ দিতেন বলে লোকমুখে শোনা যায়। এ ঘটনার পর ১৮ শতকে গাইওলা দ্বীপে এক সন্ন্যাসী এসে নিজের আস্তানা গড়ে তোলেন। স্থানীয়রা তাকে উইজার্ড বা জাদুকর বলে ডাকত। তাকে খাদ্য জোগাতেন এলাকার মৎস্যজীবীরা। একদিন কোনো এক অজানা কারণে দ্বীপ থেকে উধাও হয়ে যান সেই সন্ন্যাসী। তবে আস্তানা ছাড়ার আগে তিনি নাকি দ্বীপটিকে অভিশাপ দিয়ে যান। এরপর থেকেই অভিশপ্ত এই দ্বীপের মালিকানা যার হাতেই গেছে, তার জীবনেই হঠাৎই নেমে এসেছে দুর্ভাগ্যের মুষলধারা। ১৯২০-এর দশক থেকে শুরু হয়েছিল এই ধারা। সেই সময় গাইওলা দ্বীপ কিনেছিলেন হ্যান্স ব্রন নামে এক সুইস ভদ্রলোক। একদিন নিজের ভিলা থেকেই উদ্ধার করা হয় কম্বলে জড়ানো তার লাশ। অনেক চেষ্টার পরও হ্যান্সের এই আকস্মিক মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময় হ্যান্সের মৃত্যুর কয়েক দিনের মধ্যেই সমুদ্রে ডুবে মারা যান তার স্ত্রীও। ওই ঘটনাটিকে নিছক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়াই যেত। যদি না হ্যান্সের পর দ্বীপের মালিকানা নেয়া জার্মান নাগরিক অটো গ্রানব্যাকেরও অস্বাভাবিক মৃত্যু না হতো। জানা গেছে, হ্যান্সের পর দ্বীপটির মালিক হওয়া গ্রানব্যাকও এক রাতে নিজ ভিলাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এছাড়া পরবর্তী সময় দ্বীপটির আরেক মালিক মরিস-ইভেস স্যান্ডোজ সুইজারল্যান্ডের একটি মানসিক হাসপাতালে আত্মহত্যা করেন। স্যান্ডোজের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটার বেশ কয়েক বছর পর গাইওলা দ্বীপটি কেনেন ফিয়াট সংস্থার কর্ণধার জিয়ানি অ্যাগনেলি। সরাসরি তার নিজের কোনো ক্ষতি বা আগের মালিকদের মতো তার মৃত্যু না ঘটলেও শোনা যায়, মালিকানা নেয়ার কয়েক বছরের মধ্যেই তার বেশ কয়েকজন আত্মীয় মারা যায়। এরপর হাতবদল হতে হতে এক সময় দ্বীপটির মালিকানা আসে ধনকুবের পল গেটির কাছে। তার বেলায়ও একই ঘটনা ঘটে। তিনি নিজে মারা না গেলেও মালিকানা নেয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই গেটির নাতি সন্ত্রাসীদের হাতে অপহৃত হয়। আর গেটির পর শেষবারের মতো গাইওলা দ্বীপ কিনেছিলেন বীমা সংস্থার মালিক জিয়ানপাস্কুয়েল গ্রাপোন। দ্বীপটি কেনার কয়েক বছরের মধ্যে অপরিশোধিত ঋণের দায়ে তার হাজতবাস হয়। গাইওলার বর্তমান মালিক ক্যাম্পানিয়া আঞ্চলিক প্রশাসন। সরকারি উদ্যোগে তৈরি হয়েছে গাইওলা আন্ডারওয়াটার পার্ক। এলাকাটি ইতালীয় নৌসেনার অধীনস্থ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে এতকিছুর পরও নির্জন এই দ্বীপকে এড়িয়ে চলে স্থানীয়রা। আর রহস্যময় অতীত বুকে নিয়ে আজও সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে দ্বীপের পরিত্যক্ত ভিলা। ইনডিয়া টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।