Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নরসিংদী জেলা পরিষদের একচেটিয়া দলীয় নির্বাচনেও সহিংসতা

| প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আওয়ামী লীগের দুই জাদরেল নেতা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় অনুষ্ঠিতব্য নরসিংদী জেলা পরিষদের পরোক্ষ ভোটের এক চেটিয়া দলীয় নির্বাচন ও সন্ত্রাস নির্ভর হয়ে পড়েছে। প্রচার প্রচারণার নামে চলছে সহিংস ঘটনা। অভিযোগ উঠেছে দলীয় এমপির বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণের। পাশাপাশি ভোট প্রার্থনার পরিবর্তে চলছে ভোট কেনার প্রতিযোগিতা। সারা জেলায় চলছে কালো টাকার ছড়াছড়ি। গতকাল সোমবার সকালে নরসিংদী আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী এড. আসাদোজ্জামান তার প্রতিদ্ব›িদ্ব জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন ভূঁইয়া ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে দুই আইনজীবী সমর্থকের বাড়িতের হামলা, মারধোর, গুলিবর্ষণ ও হুমকি ধমকির অভিযোগ করেছেন। পক্ষান্তরে আব্দুল মতিন ভূঁইয়া রায়পুরার এমপি রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর বিরুদ্ধে ভোটারদেরকে হুমকি ধমকিসহ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণের অভিযোগ করেছেন। এসব ঘটনা নিয়ে জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটাররা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। ভোট কেন্দ্রে যাওয়া এবং ভোটদানে অনিহা প্রকাশ করেছে অনেক ভোটার।
জানা গেছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি চিঠির মাধ্যমে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সদ্য দায়িত্বমুক্ত জেলা পরিষদ প্রশাসক এড. আসাদোজ্জামানকে। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগের আভ্যন্তরীন কোন্দলের কারণে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নেমেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন ভূঁইয়া। এই নির্বাচনে অ্যাড. আসাদোজ্জামানের পক্ষে রয়েছেন রায়পুরার এমপি ও সাবেক মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, শিবপুরের এমপি যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা প্রমুখ। পক্ষান্তরে আব্দুল মতিন ভূঁইয়ার পক্ষে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব:) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরু, মনোহরদী-বেলাব’র এমপি অ্যাড. নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, পলাশের এমপি কামরুল আশরাফ খান পোটন, নরসিংদী পৌর মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল প্রমুখ। আভ্যন্তরীন কোন্দলের কারণে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের ভোটারদের সর্বস্তরে বিভাজন দেখা দিয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি মেম্বার, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর সকলেই বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় নির্বাচন জটিল হয়ে পড়ায় শুরু হয়েছে সন্ত্রাস, সহিংসতা ও ভোট কেনার প্রতিযোগিতা।
এছাড়াও রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা হাজী আব্দুস সাত্তার, আমিরঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খানের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়।
সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তৃতা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. খোরশেদ আলম, অ্যাড. আমজাদ হোসেন, অ্যাড. আসাদুল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রবীন নেতা অ্যাড. এসএ হাদী, আমেরিকা প্রবাসী ফ্লোরিডা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আইয়ূব খান মন্টু, হাবিবুর রহমান হাবিব, আমিরুল ইসলাম ভূইয়া, মোস্তাজ উদ্দিন ভূইয়া, মোস্তাক আহমেদ প্রমুখ।
এদিকে আওয়ামী লীগের অপর প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন ভূঁইয়া রিটার্নিং অফিসারের নিকট এক লিখিত অভিযোগে বলেছেন রায়পুরার এমপি রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু জেলা পরিষদ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণ করে গত ২৩ ডিসেম্বর বেলা ১১ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত অ্যাড. আসাদোজ্জামানের পক্ষে জনসভা করেছেন। এই সভায় আগামী ২৮ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য জেলা পরিষদ নির্বাচনে রায়পুরার ভোটারদেরকে প্রকাশ্যে অ্যাড. আসাদোজ্জামানের আনারস মার্কায় ভোট দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেছেন, যারা আনারস মার্কায় ভোট দিবে না তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নরসিংদী

১১ জানুয়ারি, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ