পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আগামী ১ জানুয়ারি থেকে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তকে ‘গণবিরোধী’ অভিহিত করে বিএনপি বলেছে, এই মূল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্য হচ্ছে ‘লুটপাট, সরকারি দল ও ক্ষমতাসীনদের স্বজনদের পকেট ভারি করা। এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বানও জানান রিজভী।
গতকাল সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গ্যাস বৃদ্ধি ‘অযৌক্তিক’ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান।
তিনি বলেন, গ্যাস কোম্পানিগুলোর মোটা অংকের মুনাফার পরও সরকার বছর ঘুরতে না ঘুরতেই মাত্র ৯ মাসের ব্যবধানে গ্যাসের মূল্য দ্বিগুণ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গ্যাস খাতে সরকারের কোনো লোকসান নেই বরং মোটা অংকের মুনাফা করছে। তারপরও কেন গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে প্রশ্ন রাখেন রিজভী।
তিনি বলেন, গ্যাসের এই মূল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্য হচ্ছে লুটপাট, সরকারি দল ও ক্ষমতাসীনদের স্বজনদের পকেট ভারি করা। বিএনপির পক্ষ থেকে আমি অযৌক্তিক গণবিরোধী গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
গ্যাসের মূল্য বাড়লে দল কোনো কর্মসূচি দেবে কিনা জানতে চাইলে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমরা বাস্তবায়নের পর্যায়টা দেখি এটা বাস্তবায়ন করছেন কিনা। আমরা তো এখন দাবি জানালাম, প্রতিবাদ করলাম, আহ্বান জানালাম। অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সংগঠনও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। সুতরাং সরকারের এক্ষেত্রে ভূমিকা দেখি। নিশ্চয়ই আমাদের দলের নীতিনির্ধারকরা বসে একটা সিদ্ধান্ত নেবে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) প্রস্তাব অনুযায়ী, গ্যাসের বর্ধিত দাম আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। নির্ধারিত নতুন দর অনুযায়ী, গৃহস্থালীতে ১৪০ শতাংশ, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১৩০ শতাংশ, বিদ্যুতে ৬৩ শতাংশ, সারে ৭২ শতাংশ, শিল্পে ৬২ শতাংশ, বাণিজ্যিক ৭২ শতাংশ ও সিএনজিতে ৮৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
আবাসিক এলাকায় দুই চুলা ব্যবহারকারীদের মাসিক বিল ৬৫০ টাকা থেকে বেড়ে এক হাজার টাকা গুনতে হতে পারে। আর এক চুলা ব্যবহারকারীদের মাসিক বিল হতে পারে ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা।
এর আগে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে আবাসিকসহ কয়েকটি শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়। নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পেলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে রিজভী বলেন, এমনিতে সাধারণ মানুষ নিদারুণ কষ্টে জীবন-যাপন করছে। এর মধ্যে বছরের শুরুতে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি হলে তাদের জীবনযাত্রার ব্যয়ভার আরো বেড়ে যাবে। জনগণের অতি প্রয়োজনীয় নিত্য ব্যবহার্য সবকিছুর ওপর এর প্রভাব পড়বে। বাসা ভাড়া থেকে শুরু করে পরিবহন ভাড়া বাড়বে, সেই সাথে দাম বাড়বে নিত্য প্রয়োজনীয় সব পণ্যের। ব্যবসা-বাণিজ্যের খরচ বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকা কষ্টকর হবে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতার ওপর চাপ বাড়বে, মূল্য স্ফীতি বেড়ে যাবে। চাপে পড়বে দেশের অর্থনীতি।
তিনি বলেন, এমনিতেই মানুষ নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস পাচ্ছে না। দিনের বেশিরভাগ সময় গ্যাসের পর্যাপ্ত চাপ না থাকায় কারখানা চালু রাখাই কঠিন হয়ে পড়েছে। বাসা-বাড়িতেও রান্নার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। অথচ প্রতি মাসে গ্যাসের বিল ঠিকই জনগণকে গুনতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গত বছর গ্যাসের দাম বাড়ানোর ফলে বস্ত্র খাতে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে ব্যাপকভাবে। ফলে তাদের অন্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা মুশকিল হয়ে পড়েছে। তাদের মতে গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহের এই সংকটকালে সর্বোচ্চ প্রস্তাবিত ১৪০ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি দেশের তৈরি পোশাক রফতানি, চামড়া শিল্প, জাহাজ নির্মাণ শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পসহ অন্যান্য গ্যাস নির্ভর শিল্প-কলকারখানার উৎপাদনকে ব্যাহত করবে।
রিজভী বলেন, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি হবে যার সরাসরি প্রভাব পড়বে কৃষি উৎপাদনের ওপর।
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।