Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এসআইবিএলের চেয়ারম্যান ও এএমডির পদত্যাগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩, ৮:২৯ এএম

বেসরকারি খাতের ব্যাংক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) চেয়ারম্যান মাহবুব-উল-আলম পদত্যাগ করেছেন। একই সঙ্গে পদত্যাগ করেছেন ব্যাংকটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) আবু রেজা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া।

চেয়ারম্যান মাহবুব–উল–আলম ছিলেন ব্যাংকটির মালিকানায় থাকা চট্রগ্রামের হাসান আবাসন লিমিটেডের পক্ষের মনোনীত পরিচালক। তিনি এর আগে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের এমডি ছিলেন। ওই ব্যাংকে তাঁর মেয়াদ পার হওয়ার পর তিনি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের উপদেষ্টা হন। আর এসআইবিএলে যোগ দেওয়া আগে আবু রেজা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া ছিলেন ইসলামী ব্যাংকেরই উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি)।


পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর গত রোববার থেকে অফিসে যাচ্ছেন না আবু রেজা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া। আর চেয়ারম্যান মাহবুব-উল-আলম পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে দেশের বাইরে চলে গেছেন বলে জানা গেছে।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের একাধিক সূত্র ওই দুজনের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। পদত্যাগ করা দুজনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আর ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাফর আলমকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

২০১৭ সালে এসআইবিএলের মালিকানা পরিবর্তনের পর আগের সব পরিচালককে বাদ দেওয়া হয়। যে ব্যবসায়ী গ্রুপটি এই ব্যাংকের মালিকানা নিয়েছে, তারাই ব্যাংকটিতে সব পরিচালক নিয়োগ দেয়। এই প্রক্রিয়ায় প্রথমে এসআইবিএলের চেয়ারম্যান করা হয় চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আনোয়ারুল আজিমকে। পরে মাহবুব-উল-আলম চেয়ারম্যান হন।

এএমডি আবু রেজা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া
ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান মালিকানা নেওয়া গ্রুপটির মালিকের জামাতা বেলাল আহমেদ। তিনি নির্বাহী কমিটিরও চেয়ারম্যান। আর অবসরে যাওয়া এক সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীও গ্রুপটির একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষের মনোনীত পরিচালক। এ ছাড়া আরও দুজন পরিচালক হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া ও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তনের পাঁচ বছরের মাথায় এসে এসআইবিএলের ঋণে বড় অনিয়ম খুঁজে পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, এসআইবিএল নতুন যেসব ঋণ দিয়েছে, তার বেশ কটির ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম মানা হয়নি। প্রকল্প ছাড়াই শুধু নথিপত্রের বিপরীতে অনেক গ্রাহককে টাকা দেওয়া হয়েছে। এসব টাকা এখন ফেরত আসছে না। এ জন্য ব্যাংকটির সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ঋণ নতুন করে খেলাপি হওয়ার যোগ্য। এসআইবিএলের হিসাবে, ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের হার ৫ শতাংশ। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে হিসাব করা হলে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের হার দাঁড়াবে ২৩ শতাংশের বেশি।

এরপর আরও নানা অনিয়ম ধরা পড়ে ব্যাংকটিতে। এ জন্য গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে এসআইবিএলসহ ৫ ব্যাংকের ১০ কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ ও আদায়ের তথ্য প্রতিদিন জমা দিতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্য ব্যাংক চারটি হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলো চট্টগ্রামের একটি গ্রুপের মালিকানাধীন।

ব্যাংকটির একটি সূত্র জানিয়েছে, পদত্যাগ করা দুজন আর অনিয়মের দায় নিতে চাইছেন না। এ জন্য মালিকানা নেওয়া গ্রুপটি তাদের পছন্দের তালিকা থেকে তাঁদের বাদ দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা পদত্যাগ পত্র জমা দেন। ব্যাংকটির পরবর্তী সভায় এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পদত্যাগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ