বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার : প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনে সহায়ক বইয়ের বিরোধীতা যেসকল শিক্ষাবিদ, বৃদ্ধিজীবী ও প্রতিষ্ঠান করেছেন তাদের বই প্রকাশ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি। সহায়ক বই বা নোট বইয়ের সমালোচনা বন্ধ না করলে প্রকাশনা সমিতি তাদের লেখা বই প্রকাশ, ক্রয়-বিক্রয় ও সংরক্ষণ বন্ধ করে দেবে। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি এ হুমকি দেয়। একই সঙ্গে দাবি আদায়ে জন্য আগামী ২৬ ডিসেম্বর সকল জেলায় বইয়ের দোকান বন্ধ রেখে মানববন্ধন এবং ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর টানা দুইদিন দোকান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন ২০১৬ এর কয়েকটি উপধারা সংশোধনের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লেকচার প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সমিতির সহ-সভাপতি শরীফুল আলম।
শিক্ষাবিদ ও বৃদ্ধিজীবীরা সহায়ক বই বা নোটবই প্রকাশের প্রধান অন্তরায় মনে করেন কী সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে শরীফুল আলম বলেন, কখনো মনে করেনি। বিভিন্ন সময় আমাদের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে, তারাও সহায়ক বইকে নোট বা গাইড বই স্বীকার করেননি। বিষয়টি বুঝার পরও ইদানিং তারা এটার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের কারণে সরকার প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের কয়েকটি উপধারা পরিবর্তন করতে চায় বলে আমরা জেনেছি। এর প্রধান কারণ এসকল শিক্ষাবিদ ও বৃদ্ধিজীবী কেবল এনটিসিটির বই লেখেই সম্মানি নিতে চান এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) একমাত্র প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাখতে চায়।
তিনি বলেন, আমাদের দাবির প্রতি সংহতি রেখেই সম্প্রতি শিক্ষা আইন ২০১৬ চ‚ড়ান্ত করা হয়েছিল। কিন্তু জানতে পেয়েছি, একশেণির বৃদ্ধিজীবীর চাপের জন্য সরকার পুনরায় প্রকাশকদের সহায়ক গ্রন্থ প্রকাশের এনটিসিবি অনুমোদনের বাধ্যবাদকতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতা রেখেই শিক্ষা আইন চ‚ড়ান্ত করতে যাচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে আমরা আবার আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হচ্ছি। সহায়তা বইয়ের যৌক্তিকতা তুলে ধরে শরীফুল আলম বলেন, যেখানে ৯৭ ভাগ শিক্ষার্থী সহায়ক বইয়ের ওপর নির্ভয়শীল সেখানে এই বইয়ের ব্যতীত শিক্ষাব্যবস্থা কল্পনা করা যায় না। তিনি বলেন, শিক্ষায় সমৃদ্ধ উন্নত রাষ্ট্রগুলো এখনো প্রতিষ্ঠানে সহায়ক বই পড়ানো হয়, সেখানে আমরা কেন বাদ দিতে হবে? ইন্দোনেশিয়া, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশে সহায়ক বইয়ের নমুনা তুলে দেখান। এ সময় তিনি শিক্ষা আইনের নোট ও গাইড বইয়ের সংজ্ঞা, আমাদের পরিপস্থী উপধারাসমূহ ও তৎপরিপ্রেক্ষিতে প্রণীত বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ধারা বাতিল করার দাবি জানান।
সমিতির নেতারা বলেন, এনসিটিবির অনুমোদন নিয়ে সহায়ক বই প্রকাশ করা হলে দীর্ঘসূত্রিতায় পড়বে। এছাড়া সহায়ক বই হিসেবে এতো বই প্রকাশ হয়, যা এনসিটিবির পক্ষে দেখাও সম্ভব না। সৃজনশীল পদ্ধতিতে সহায়ক বই প্রকাশ করা বৈধ দাবি করে তারা আরো বলেন, শিক্ষাআইনে এর কোনো ব্যতয় ঘটলে পুরো শিল্প হুমকির মুখে পড়বে, লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হবে, সর্বশেষ শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের ঝড় নেমে আসবে। এই অবস্থা বিবেচনা করে সরকারকে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়ার আহŸান জানান তারা। বিষয়টিতে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালাউদ্দিন, পরিচালক এস এম লুৎফর রহমান, হুমায়ুন কবির, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশনা সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান শায়ক প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।