বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রায় ৩০ বছর পূর্বে স্বামী মারা যাওয়ার পর সেখান থেকে বাপের বাড়িতে এসে একটি ঘর তৈরি করে দুই নাতনিকে নিয়ে বসবাস করে আসছেন মঞ্জিলা খাতুন (৬৫)। গত তিনদিন আগে তার দুই নাতনিকে নিয়ে ঢাকায় অবস্থানরত ছেলের কাছে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে একদিন কাটানোর পর বৃদ্ধা জানতে পারলেন তাঁর মাথা গোঁজার ঠাঁই বসতবাড়ি আগুনে পুড়ে পুড়ে গেছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে এমনই ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের তারাটি গ্রামে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মঞ্জিলা খাতুন তার নিজের পুড়ে যাওয়া ভিটায় বসে কাঁদছেন। এসময় সাংবাদিকরা এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁর একমাত্র পুত্র রফিক মিয়া ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। পুত্রবধূ জোসনা আক্তার পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। দুজনের আয়ের একটি অংশ খরচ করে বাবার দেওয়া জমিতে বাড়ি করেছিলেন। ওই বাড়িতে তিনি দুই নাতনিকে (রফিকের দুই সন্তান) নিয়ে বসাবস করছেন। এর মাঝে এক নাতনি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে এবার নবম শ্রেণিতে পড়ছে। গ্রামের কিছু তরুণ তাঁর নাতনিকে (১৫) উত্ত্যক্ত করতো। কিন্তু নাতনি এসবে পাত্তা দিত না। এমনকি বখাটেরা মুঠোফোন নম্বরসহ চিঠি বাড়িতে ফেলে যেত। তাঁর নাতনি এসবেও পাত্তা দেয়নি। তিনি আরো বলেন, পরিবারের মানসম্মান জড়িত থাকায় এসব ঘটনা আমরা কখনও কাউকে জানায়নি। কিন্তু বখাটেদের উৎপাত মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। তারা রাতের বেলা ঘরের চালে ঢিল ছোঁড়া শুরু করে। তাঁর বসতঘরের বারান্দার একটি কক্ষে তাঁর নাতনির পড়ার ঘর ছিলো। সেখানে সে থাকত। প্রায় তিন মাস পূর্বে প্রতিবেশিদের সাথে মুরগী নিয়ে ঝগড়াঝাটির পর সেই কক্ষে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেদিন তিনি নাতনিকে নিজের কাছে রেখেছিলেন। আগুনে বিদ্যালয়ের বইপত্র ও বিছানা পুড়ে গেলেও নাতনি প্রাণে রক্ষা পায়।
মঞ্জিলা আরো বলেন, গত সোমবার তিনি দুই নাতনিকে নিয়ে ঢাকায় ছেলের বাসায় বেড়াতে যান। মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে মুঠোফোনে জানতে পেরে নাতনিদের ঢাকায় রেখে তারাটি গ্রামে এসে দেখতে পান তাঁর বসতবাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, সোমবার থেকে আমার বাড়ি তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিলো। এ অবস্থায় একটি বাড়ি কীভাবে পুড়ে যেতে পারে। মঞ্জিলা খাতুনের অভিযোগ শত্রুতা করে কেউ তাঁর পুরো বসতবাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় তাঁর বেঁচে থাকার অবলম্বন শেষ হয়ে গেছে। সর্বস্বান্ত হয়েছে তাঁর পুত্র ও পুত্রবধূ। তাঁরা দুজন রক্তজল করে টাকা উপার্জন করে বসতবাড়িতে একটি ঘর তুলেছিল। যারা তাঁর সংসার ধ্বংস করে দিয়েছে তাঁদের কঠোর বিচার চান মঞ্জিলা খাতুন।
মঞ্জিলার ভাই বাহাউদ্দিন বলেন, বাড়িতে ঢিল ছোঁড়া বখাটেদের ধরার জন্য তিনি রাতের পর রাত গাছে উঠে নজরদারি করেছেন। কিন্তু তাঁদের ধরতে পারেননি।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ পীরজাদা পীরজাদা শেখ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, আগুনে বসতবাড়ি পুড়ে যাওয়ার ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য তিনি ওই গ্রামে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।