পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি সংস্থা অন্য সংস্থার ওপর আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। শুধু সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানগুলোই নয়, রাষ্ট্রের বিভাগগুলোও এ প্রতিযোগিতার বাইরে নেই। কেবল বিচার বিভাগই এর ব্যতিক্রম। গতকাল শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলন, ২০১৬’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা বরং সব সময় রাষ্ট্রের বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। আর এর জন্য শাসনতন্ত্র আমাদের ওপর যতটুকু দায়িত্ব ও ক্ষমতা অর্পণ করেছে, আমরা শুধু ততটুকুই করব। আমি আশা করব, রাষ্ট্রের অন্যান্য বিভাগ ও প্রতিষ্ঠান বিচার বিভাগকে সেভাবেই সহযোগিতা করবে। তিনি বলেন, যারা ক্ষমতার কাছাকাছি থাকে, তাদের মধ্যে এ আধিপত্য বিস্তারের প্রবণতা বেশি মাত্রায় প্রতীয়মান হয়। কিন্তু বিচার বিভাগ কখনো এ প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি এবং করবেও না।
প্রধান বিচারপতি বলেন, গণতন্ত্রকে বিকশিত করার জন্য গণতান্ত্রিক সরকারের প্রয়োজন। গণতান্ত্রিক সরকারের স্থলে অগণতান্ত্রিক সরকার সমাধান নয়। এটি রাজনীতিবিদদের দেউলিয়াপনা। একটা গণতান্ত্রিক সরকার দেশে ৫ বছর শাসন করতে পারলে একটা স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষভাবে কেন নির্বাচন দিতে পারবে না। এই তত্ত্বাবধায়ক আসার পর যখনি ৫ বছর অতিক্রান্ত হয়, তখন সাবেক প্রধান বিচারপতি নিয়ে আলোচনার একটি খোরাক হয়ে যায়। বিচারপতি নিয়ে রাজনীতি আরম্ভ হয়ে যায়। তাই এটা বাতিল করা হয়েছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন রাজনীতিবিদরা করতে পারবে কি না, এটা তাদের ব্যাপার। এটা বিচার বিভাগের দায়িত্ব নয়।
তিনি আরো বলেন, ত্রয়োদশ সংশোধনীর ফলে অগণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনকে একটি মহলের খেয়াল খুশি মতো পরিচালনার ব্যবস্থা হয়েছিল। ত্রয়োদশ সংশোধনী আইন রাষ্ট্রের মূলভিত্তি জনগণের সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রের প্রজাতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পরিচয় খর্ব করায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত তা অসাংবিধানিক ও অবৈধ বলে ঘোষণা করে। উক্ত সংশোধনী বাতিল করে গণতান্ত্রিক কাঠামো শক্তিশালী করতে নির্দেশ প্রদান করে বিচার বিভাগ।
তিনি বলেন, গত আগস্ট মাসে আইনমন্ত্রীর সাথে দীর্ঘ আলোচনার পর উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আমি আটজন অতিরিক্ত বিচারক নিয়োগের জন্য সরকারকে পরামর্শ দিই। দীর্ঘ আলোচনার পরে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে এ সুপারিশ প্রেরণ করা হলেও দীর্ঘ চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও এ নিয়োগ প্রক্রিয়া আলোর মুখ দেখেনি।
তিনি আরো বলেন, সাক্ষী হাজির না করার ফলে ফৌজদারি মামলা অযথা বিলম্ব হচ্ছে। আমাদের দেশে পুলিশ প্রশাসন অপরাধীদের গ্রেফতার করার ব্যাপারে যতটা পারদর্শী, কিন্তু সাক্ষী উপস্থিতির ক্ষেত্রে ততটা পারদর্শী নয়। সে কারণে মামলার ফলাফল প্রচ-ভাবে হতাশাজনক হয়
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো: আবদুল ওয়াহহাব মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম। এরপর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমীন চৌধুরী, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। দুইদিনব্যাপী জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিসহ দেশের অধস্তন আদালতগুলোর সর্বস্তরের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলন-২০১৫’ অনুষ্ঠিত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।