গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
জীবন সম্পর্কে মানুষের মধ্যে ইতিবাচক ভাবনা সৃষ্টি করা জরুরি বলে মনে করেন জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, তামাকমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সামাজিক আন্দোলন জোরদার করতে হবে। প্রতিটি মানুষের মধ্যে জীবন সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টির পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই ধীরে ধীরে সমাজ থেকে মাদক এবং তামাকের দৌরাত্ম্য কমে যাবে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং (বিপিএফএইচডব্লিউ) আয়োজিত ‘ন্যাশনাল সেমিনার টু সাপোর্ট স্মোক ফ্্ির এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড টোবাকো কনট্রোল ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের প্রথিতযশা সমাজবিজ্ঞানী ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘বিশ^ব্যাপী যুদ্ধ, জঙ্গিবাদ, অস্ত্র, মাদক-তামাকের একটি শক্তিশালী অর্থনীতি আছে। এসব পুঁজিবাদী অর্থনীতির বিপরীতে দাঁড়িয়ে সুস্থ ধারার অর্থনীতির চর্চা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। আমরা মুখে যতোই বলি না কেন, বিশে^ পরিপূর্ণভাবে তামাকমুক্ত দেশ সৃষ্টি করা আদৌও সম্ভব হয়েছে কিনা বা হবে কিনা সেটি একটি কঠিন বিষয়। কেননা, বিশ^বাজারে পুঁজির সঞ্চালন যখন থেকে সমাদৃত হয়েছে, এইসব অশুভ দিকগুলো পুঁজি তৈরির অন্যতম হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। সুতরাং এটি ক্যাপিটাল তৈরি করে এবং আমরা এই ক্যাপিটালের কাছে নতজানু হই।’
তামাক-মাদক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন সময়ে গৃহীত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘অর্থনীতি বিষয়ক নীতিমালা যখন যেটা গৃহীত হোক না কেন, সবকিছুতেই আইনের কথা আমরা বলি। কিন্তু যথাযথ আইনের প্রয়োগ অত্যন্ত জটিল। কেননা আমরা এই রকম একটা পুঁজিবাজারের মধ্যেই বসবাস করছি, যেখানে তাদের সকল সুবিধা রয়েছে। তাহলে কি আমরা হতাশ হয়ে বিষণœ হয়ে ছেড়ে দেবো? না। সমাজে আসলে সব সময়ই এরকম একটি অবস্থার মধ্য দিয়ে কনসেনশাস তৈরি হয়। রাষ্ট্র এক সময় নিবর্তনমূলক ছিল, সেটি এখন কল্যাণকর হয়েছে। ঠিক তেমনি এই সব ইতিবাচক উপকরণগুলো আমাদের মধ্যে ধীরে ধীরে শুভ ও সুন্দরের প্রচেষ্টাগুলো অব্যাহত রাখবে। তখনই মূলত মন্দ জিনিসগুলো অবদমিত হতে থাকবে।’
জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় ভিসি বলেন, ‘ইতিবাচক উদ্যোগগুলো যতো সুন্দর করে গ্রহণ করা যাবে, ততোই খারাপ বিষয়গুলো দূর হবে। তা একদিনেই সম্ভব হবে তা নয়। বিশ^ ইতিহাস বলে বহু খারাপ কিছুকে আমরা নির্মূল করেছি শুভ উদ্যোগগুলোর মধ্য দিয়ে। আসলে পণ্য বাজারে আমরা বিজ্ঞাপনের যে চিত্র দেখি, আমরা যতোই সভা সেমিনার করি না কেন; যারা মাদক-তামাকের প্রচারক, তাদের প্রচার আরও অনেক বেশি শক্তিশালী। নানা উপায়ে তারা প্রচার করে। আমাদেরকেই তারা মডেল হিসেবে ব্যবহার করে। আমরা ব্যবহৃত হই। আসলে পুরোটাই একটা পুঁজিবাজারের ব্যবস্থাপনা। এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হলে শক্তই হতে হয়। ইতিহাস বলে সমাজে বেশির ভাগ মানুষ যা চায় তাই হয়। আমরা ইতিবাচকতার দিকে যাচ্ছি। এর মধ্য দিয়েই আমরা অশুভকে তাড়াতে সক্ষম হবো।’
জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং (বিপিএফএইচডব্লিউ) এর সভাপতি প্রফেসর ড. মো. হাবিবে মিল্লাতের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ূ বিষয়কমন্ত্রী মো. শাহাবুদ্দিন আহমেদ। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার, সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান ও সংসদ সদস্য রুবিনা আক্তার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ডক্টর ফারহিনা আহমেদ প্রমুখ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ। এছাড়াও সরকারি, বেসরকারি ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ তাদের বক্তব্যে মানুষের এ ক্ষতিকর অভ্যাস পরিত্যাগের আহবান জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।