গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, 'বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলভিত্তিকে ধ্বংস করা হয়েছে। এই চার মূলনীতির পরিবর্তে সামরিক শাসনের যাঁতাকল নেমে এসেছে। দেশকে ফেলে দেয়া হয়েছে অন্ধকারের পরাকাষ্ঠায়। দীর্ঘদিন দেশ চলেছে উল্টো পথে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম করে দেশে গণতন্ত্র ফিরে এনেছেন। দেশকে আবার গতিশীল নেতৃত্ব দিয়ে ন্যায় বিচার, সুশাসন প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করেছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন ভোট ও ভাতের অধিকার। আজ দেশ বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।'
শনিবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর পানিভবনে বঙ্গবন্ধু পরিষদ আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় সম্মানিত আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জাতির জনকের রাজনৈতিক প্রজ্ঞার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি ছিল সারা বাংলার আলোকবর্তিকা। এটি ছিল বাঙালির মুক্তির প্রিয় তীর্থ। তিনি সাড়ে সাত কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে ৩২ নম্বর বাড়িটিতে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির বীজ বুনেছিলেন। রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেও তিনি গণমানুষের সঙ্গে ৩২ এর যে নিবিড় ভালোবাসা ছিল সেটি অটুট রেখেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে ৩২ নম্বর বাড়িতে না থাকার বিষয়ে গোয়েন্দাদের সতর্কতা ছিল। এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন বাঙালিরা এমন কিছু করবে না। অন্য কোথাও গেলে মানুষের সঙ্গে আমার যোগাযোগ নষ্ট হয়ে যাবে। তিনি ৩২ নম্বরে রেয়ে গেলেন।'
ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, '৩২ নম্বরের প্রিয় তীর্থে বঙ্গবন্ধু প্রতিদিন ক্লান্ত হয়ে ফিরেছেন। তবুও মানুষের সঙ্গে রাতজুড়ে তাঁর প্রতিনিয়ত কথা হতো। পাকিস্তানি শক্তি যে বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে সেটিকে গড়ে তোলবার জন্য ৩২ নম্বরে থেকে তাঁর প্রতিটি সেকেন্ডকে ব্যবহার করে গেছেন। ১৯৭৫ এর আগস্টে তিনি সবকিছু গুছিয়ে এনে যখন বললেন প্রচলিত ব্যবস্থা আমি ভেঙে ফেলবো। তিনি প্রচলিত ব্যবস্থা ভাঙার উদ্যোগ নিলেন। দ্বিতীয় বিপ্লবের শুভ সুচনা করলেন। গড়ে তুললেন বাকশাল। দ্বিতীয় বিপ্লব আর কিছু নয়, বঙ্গবন্ধুর সারাজীবনের সাধনা সমাজ বদল। একজন মানুষ একটি ছাত্রসংগঠন-ছাত্রলীগ বানালেন, আওয়ামী লীগ বানালেন, বাংলাদেশ সৃষ্টি করলেন; এই তিন বিপ্লবের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু। তাঁর দ্বিতীয় বিপ্লবের অঙ্গীকারের সমাজতন্ত্র এবং গণতন্ত্রের সমন্বয়ে সমাজব্যবস্থা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পুঁজিবাদী সমাজ পছন্দ করলেন না। পাকিস্তানি শক্তি দেখছে বাংলাদেশ নতুন ব্যবস্থায় এগিয়ে গেলে শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় না, এটি হবে বিশ্বে রোল মডেল। সেই আগস্টের ১৫ তারিখে রক্তাক্ত করা হলো বাংলাদেশকে। পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়া হলো মহানায়ককে। কুলষিত করা হলো পবিত্র অঙ্গন ৩২ নম্বর। এই বাড়ির যে সিঁড়িটিতে বঙ্গবন্ধুর লাশ পড়ে ছিল। প্রথম ব্রাশ ফায়ার হলো গণতন্ত্রের উপর। উত্থান ঘটলো সামরিক শাসনের। দ্বিতীয় ব্রাশ ফায়ার হলো বাঙালি জাতীয়তাবাদের উপর। একের পর এক সংবিধান থেকে খসে পড়লো গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা।'
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি আরও বলেন, 'বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা আমাদের কাছে জাতির পিতার রেখে যাওয়া পবিত্র আমানত। তাদের চলার পথকে মসৃণ রাখতে হবে। আমাদেরকে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রকৃত বিচার এবং ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে তাদের নিশ্চিহ্ন করার অঙ্গীকার করতে হবে। বাংলাদেশের পতাকাকে ভালোবেসে আমাদের শপথ হওয়া উচিত মানবিকতায় এবং পবিত্রতায় পৃথিবীর বুকে এক অপূর্ব স্বদেশ হয়ে উঠুক প্রিয় মাতৃভূমি।'
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ডা. এস এ মালেকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।