পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার পতনের যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগের ঘোষণা অনুযায়ী ঢাকায় বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর গণমিছিল আজ। রাজপথের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি ছাড়াও এই কর্মসূচি পৃথকভাবে পালন করবে ৭ দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, ১১ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, জামায়াতে ইসলামী, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য। এর মধ্যে দুপুর ২টার পর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে গণমিছিল শুরু হবে। এটি কাকরাইল মোড়, শান্তিনগর, মালিবাগ মোড় হয়ে মগবাজার চৌরাস্তা ঘুরে নয়া পল্টনে এসে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ দলগুলো আলাদাভাবে এ কর্মসূচি পালন করবে। এরমধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ শেষে গণমিছিল নিয়ে পল্টন নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে কাকলাইল রাজমনি সিনেমা হলের সামনে গিয়ে শেষ হবে।
১২ দলীয় জোট বেলা ৩টায় ফকিরেরপুল পানির ট্যাংকের সামনে থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল মোড় ঘুরবে, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট পুরানা বেলা ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু করে মতিঝিল শাপলা চত্বর মোড় ঘুরবে, এলডিপি পান্থপথ মোড় থেকে বেলা ৩টায় শুরু করে মালিবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ করবে। এছাড়া জামায়াতে ইসলামী বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেইট থেকে গণমিছিল শুরু করবে। গত ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গপীবাগে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিসহ ১০ দফা ঘোষণা করা হয়। একই সমাবেশ থেকে ২৪ ডিসেম্বর সারাদেশে যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি গণমিছিল করার কথা জানানো হয়। তবে একই দিন আওয়ামী লীগের সম্মেলন থাকায় এবং রংপুরে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন থাকায় ঢাকা ও রংপুর বাদে অন্যান্য জেলা ও মহানগরে ওই কর্মসূচি পালন করা হয়। ঢাকার গণমিছিলের কর্মসূচি ৩০ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হয়।
এই কর্মসূচিকে ঘিরে ইতোমধ্যে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গঠিত হয়েছে নতুন একাধিক রাজনৈতিক জোটও। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ এই আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আজ একই সঙ্গে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করবে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, জামায়াত, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য।
বিএনপির বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছ থেকে তারা মগবাজার পর্যন্ত গণমিছিল করার অনুমতি পেয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের গণমিছিল হবে শান্তিপূর্ণ।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না জানান, তারা সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমবেত হয়ে গণমিছিল করবেন।
১২ দলীয় জোটের নেতা জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বেলা আড়াইটায় ফকিরারপুল পানির ট্যাংকের কাছে সমবেত হবে বিজয়নগর অভিমুখে মিছিল করবেন। জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ফরিদুজ্জামান ফরহাদ জানান, দুপুর আড়াইটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে গণমিছিল শুরু করবেন। কোনো জোটে না থাকায় এলডিপি এবং জামায়াতে ইসলামী আলাদা আলাদাভাবে গণমিছিল করবে বলে দল দুটির নেতারা জানিয়েছেন। এফডিসির কাছে এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বেলা আড়াইটায় গণমিছিল শুরু করবে বলে জানিয়েছেন পার্টির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দীন রাজ্জাক। আর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটের সামনে বেলা সাড়ে ৩টায় গণমিছিল করতে ডিএমপির কাছে আবেদন করেছে জামায়াত। দলটির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দুপুরে ডিএমপি কার্যালয়ে গিয়ে আবেদন জানিয়ে এসেছে। জামায়াতের প্রতিনিধি দলে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান, অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট গোলাম রহমান।
রাষ্ট্র মেরামতের লক্ষ্যে গণমিছিল সফল করার আহŸান জানিয়ে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ এলডিপি। গতকাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানীতে গণমিছিল সফল করার আহŸান জানিয়েছেন বাংলাদেশ এলডিপি সভাপতি আবদুল করিম আব্বাসী ও মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম।
বিবৃতিতে তারা বলেন, রাষ্ট্র মেরামতের লক্ষ্যে গণমিছিল সফল করতে হবে। বাংলাদেশকে রক্ষা করতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পতনের কোনও বিকল্প নেই। বিবৃতিতে নেতারা উল্লেখ করেন, ‘অবৈধ স্বৈরাচার শাসকগোষ্ঠীর কবলে দেশ আজ ধ্বংস। রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টর আজ অনৈতিকতা ও লুন্ঠনের কারণে মৃতপ্রায়। সীমাহীন অর্থনৈতিক লুন্ঠন ও অর্থ পাচারের কারণে ব্যাংক গুলো আজ অর্থশূন্য। অভাবের হাহাকার চারিদিকে। দেশের প্রশাসন আজ এক ব্যক্তির আজ্ঞাবহ। বিচার আজ একপেশে। গত এক যুগে মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। ভোটাধিকার আজ যাদুঘরে। এ অবস্থায় সকল হিসাব নিকাশ বুঝে নেবার সময় এসেছে। সরকারের বিদায়ঘন্টা বেজে উঠেছে।
গণমিছিল সফল করার লক্ষে গতকাল ১২ দলীয় জোটের এক প্রতিনিধি সভা গুলশান অফিসে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতিক, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনডিপির চেয়ারম্যান কারী মোহাম্মদ আবু তাহের, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) মহাসচিব শেখ জুলফিকার বুলবুল, বাংলাদেশ জাতীয় দলের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির জাগপার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন প্রধান।
এদিকে সন্ধ্যায় নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের লিঁয়াজো কমিটির সদস্যরা। বৈঠকে বিএনপির পক্ষে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন প্রধান সমন্বয়কারী এ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন ও গণ অধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো. রাশেদ খান।
কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চের সাথে যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কিভাবে যুগপৎ আন্দোলন এগিয়ে নেওয়া যায় বেগবান করা যায় সে বিষয়ে কথা হয়েছে। আগামীকালকে যেহেতু ঢাকায় আমাদের যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি রয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আমরা যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি গণমিছিল সফল করার বিষয়ে আলোচনা করেছি। এছাড়া দ্রæততম সময়ের মধ্যে বিএনপির ১০ দফা, ২৭ দফা রূপরেখা, গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪ দফা এগুলো নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি এবং ঘোষণা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।