Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমতলী-পুরাঘাটা খেয়ায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২, ৫:২০ পিএম | আপডেট : ৫:৫০ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২

বরগুনার আমতলী-পুরাকটা খেয়া পারাপারে রাত হলেই তিনগুন ও সকালে দ্বিগুন ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া

গেছে। ইজারাদার সংশ্লিষ্টরা প্রভাব খাটিয়ে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে
বেশী ভাড়া আদায় করছেন এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী শত শত মানুষের।
প্রতিদিন যাত্রীদের অহেতুক হয়রানী করে থাকেন বলে আরো অভিযোগ তাদের।
বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

ইজারাদার মোঃ সিদ্দিকুর রহমান গাজী বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যেহেতু আমি ঘাটে থাকি না।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলা ও বরগুনা জেলা শহরের সীমান্তবর্তী বৃহৎ পায়রা নদী। এ নদীর খেয়া পাড় হয়ে প্রতিদিন আমতলীসহ বিভিন্ন
এলাকার অন্তত ৫ হাজার মানুষ বরগুনা জেলা শহরে যাতায়াত করেন। বরগুনা জেলা পরিষদ ২০২১-২২ অর্থ বছরে পায়রা- পুরাকাটা খেয়াঘাটের দরপত্র আহবান করেনি। ফলে প্রতিমাসে জেলা পরিষদ ইজারা দিয়ে থাকেন। এ মাসে ইজারা পেয়েছেন ঠিকাদার মোঃ সিদ্দিকুর রহমান গাজী। প্রতিদিন ১০টি ট্রলারে
করে মানুষ পারাপার করেন ইজারাদারের পরিচালক আবদুল মজিন খান।
জেলা পরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত জনপ্রতি ১৫ টাকা ভাড়া হলেও নিয়মিত ২০
টাকা ভাড়া আদায় করছেন। অভিযোগ রয়েছে রাত হলেও পরিচালক মজিদ খান জনপ্রতি ৫০-৬০ এবং খুব সকালে ৩০-৪০ টাকা আদায় করেন। বেশী টাকা
আদায়ের বিষয়ে প্রতিবাদ করলেই যাত্রীদের উপর নেমে আসে মানসিক
নির্যাতন। গত এক মাসে অন্তত অর্ধশত যাত্রী খেয়াঘাট পরিচালক ও তার
লোকজনের মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন
ভুক্তভোগীরা। প্রতিদিনই এভাবে যাত্রীদের হয়রানী করে আসছেন খেয়াঘাট
সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া ধারন ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের অভিযোগ
রয়েছে পরিচালকের বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন,
প্রতিনিয়ত খেয়াঘাটে এমন ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
রাসেল নামের এক যাত্রী বলেন, গত বুধবার ভাড়া নিয়ে তার সাথে তর্ক হয়।
ক্ষিপ্ত হয়ে ট্রলার মাঝি তার দিকে তেড়ে আসেন। মান ইজ্জতের ভয়ে মাঝির
দাবীকৃত ভাড়া দিয়ে চলে এসেছি।
খেয়াঘাটের যাত্রী আব্দুল্লাহ আল মোমেন নিজাম, রুহুল আমিন, নুরুল হক,
প্রাণেশ মন্ডল ও আরিফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার খুব সকালে বরগুনা যেতে পায়রা নদীর খেয়াঘাটে আসি। টলারের মাঝি খেয়ার যাত্রী তুলেই জনপ্রতি ৪০
টাকা ভাড়া দাবী করেন। আমিসহ কয়েকজন যাত্রী এর প্রতিবাদ করলেই ট্রলার মাঝি আমাদের সাথে অহেতুক তর্কে জড়িয়ে পড়েন। মান ইজ্জতের ভয়ে বাধ্য হয়ে মাঝির দাবীকৃত টাকা দিয়ে
এসেছি।
তালতলী উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপার ভাইজার গৌতম চন্দ্র ঘোষ বলেন, পায়রা নদীর আমতলী-পুরাঘাটা খেয়াঘাটে টলার মাঝি মোটর
সাইকেলসহ আমার কাছ থেকে ৮০ টাকা ভাড়া নিয়েছেন।
পায়রা নদী খেয়াঘাটের পরিচালক আব্দুল মজিদ খান বেশী ভাড়া
আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, ঘণ কুয়াশার কারনে ট্রলার মাঝি ভাড়া বেশী
নিতে পারে।
পায়রা-পুরাকাটা খেয়াঘাট ইজারাদার সিদ্দিকুর রহমান গাজী বলেন,
আমার নামে ইজারা ঠিকই কিন্তু পরিচালনা করেন আব্দুল মজিদ
খান। আমি খেয়াঘাটে যাই না। বেশী ভাড়া আদায় করে থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, বেশী ভাড়া নেয়ার সুযোগ নেই। জেনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর কবির
বলেন, বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন,
মানুষকে হয়রানী করে কিছুই করা যাবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অভিযোগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ